পুলিশের ডিসি মোল্লা নজরুল ধরাছোঁয়ার বাইরে!
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ২০ আগস্ট, ২০১৩, ১০:৪৪:২১ রাত
৩ মাসেও তলব করতে পারেনি দুদক
পুলিশের ডিসি মোল্লা নজরুল ধরাছোঁয়ার বাইরে!
মনে আছে - উনি কোটি টাকা ছাড়া নেন না ।
পাশের টেবিলে নিয়ে পিঠানো হয়। মিডিয়ার শো এখনো মনে আছে ।
কোটি টাকা ঘুষগ্রহণের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-কমিশনার (ডিসি) মোল্লা নজরুল ইসলামকে ৩ মাসেও তলব করতে পারেনি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঘটনার মূল এ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার তথ্য-প্রমাণ রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটির কাছে থাকলেও এখনও জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়াই শুরু হয়নি। কবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হবে তাও বলতে পারছে না দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তারা।
গত এপ্রিল মাসে ডিবির এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীকে ধরে এনে ব্যাপক নির্যাতন করে এক কোটি টাকা আদায় করার অভিযোগ ওঠে। দুদকের কাছে গত মে মাসে এ অভিযোগ আসে। অভিযোগ আমলে নিয়ে জুন মাসে অনুসন্ধান টিম গঠন করে দুদক।
অনুসন্ধান টিম গঠনের পরই দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ অনুসন্ধান কাজ দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। টিম গঠনের কিছু দিনের মধ্যেই দুদকের কাছে আসে ঘুষ নেয়ার ভিডিও ফুটেজ এবং কথোপকথনের অডিও রেকর্ড। কিন্তু অনুসন্ধানে অগ্রগতিমূলক তথ্য-প্রমাণ থাকলেও এখন এ অনুসন্ধান থমকে আছে।
অভিযোগ রয়েছে, উচ্চপর্যায়ের একটি মহলের হস্তক্ষেপের কারণে কার্যত ‘নিষ্ক্রিয়’ আছে এ অনুসন্ধান। যদিও দুদক চেয়ারম্যান মোঃ বদিউজ্জামান বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য নিতে আমরা চেষ্টা করছি। অনুসন্ধান কার্যক্রম কবে সম্পন্ন হবে এ বিষয়েও তিনি কিছু জানাতে পারেননি।
ধীরগতির কারণ জানতে চাইলে দুদকের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কিছু সমস্যা আছে যা বর্ণনা করা যাচ্ছে না। এছাড়া নড়াইলের সংসদ সদস্য কবিরুল হক ডিবির মোল্লা নজরুলের বিষয়ে অভিযোগ এনেছিলেন। তার বক্তব্য নেয়ার জন্য তাকে এবং যার কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে সে ব্যবসায়ীকেও নোটিশ দিয়েছে দুদক। বক্তব্য দিতে ফোনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়েছে। কিন্তু তারা এ বিষয়ে এখনও কোনো বক্তব্য দেননি।
এ বিষয়ে নড়াইলের সংসদ সদস্য কবিরুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি দেশের বাইরে ছিলাম। সম্প্রতি দেশে এসেছি। দুদককে আমি জানিয়েছি- এলে আমার স্টেটমেন্ট দেবো।
দুদকের কাছে থাকা অভিযোগে দেখা যায়, গত ৬ এপ্রিল ঢাকা মহানগর ডিবির ডিসি মোল্লা নজরুল ইসলাম এক ব্যবসায়ীকে ধরে এনে নির্যাতন করেন। ৭ এপ্রিল সৈয়দ আবিদুল ইসলাম নামে ওই ব্যবসায়ী এক কোটি টাকা দিয়ে মুক্তি পেয়েছেন। ডিবির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল হাসনাত দু’টি বেসরকারি ব্যাংকের শান্তিনগর শাখা থেকে ঘুষের টাকা উত্তোলন করেন।
জানা গেছে, আবিদুল ইসলাম নড়াইলের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তির আত্মীয়। ঘুষ দেয়ার বিষয়টি জানার পর কবিরুল হক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দফতরে নিজের প্যাডে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর সঙ্গে প্রমাণ হিসেবে দিয়েছেন টাকা নেয়ার দৃশ্য সম্বলিত সিসিটিভির ফুটেজ। ওই ফুটেজে টাকা নেয়ার দৃশ্যটি স্পষ্ট। এ ফুটেজ দুদকের সংগ্রহে রয়েছে।
এ ঘটনায় ডিসি নজরুলকে ওই পদ থেকে সরিয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে ডিএমপি হেড কোয়ার্টারে ন্যস্ত করা হয়। পাশাপাশি ডিবির পরিদর্শক আজহার উদ্দিন ও এসআই হাসনাতকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
নাটক করে আবার কি হবে জানি না আমরা ।
এই কাজ পুলিশ না করে , জনতা করলে ১৪ পুরুষ কে রিমান্ড নেয়া হতো।
গত জুনের প্রথম সপ্তাহে দুদকের উপ-পরিচালক নাসিম আনোয়ারকে মূল অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ অনুসন্ধানের তদারকি কর্মকর্তা করা হয় দুদকের পরিচালক ও উইং কমান্ডার তাহিদুল ইসলামকে।
ঘুষ লেনদেনের ব্যাংক হিসাব, কথোপকথনের অডিও রেকর্ড ও দুদকের কাছে থাকলেও এ অনুসন্ধান কার্যক্রম কার্যত নিষ্ক্রিয় রয়েছে। কবে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, এর অনুসন্ধানই বা কবে সম্পন্ন হবে তা বলতে পারছে না দুদকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান কার্যক্রমের বর্তমানে কোনো অগ্রগতি নেই। দুদকের নির্বাহীরাও অনুসন্ধান কর্মকর্তাদের এ অনুসন্ধান কার্যক্রম সামনে এগিয়ে নিতে কোনো নির্দেশনা দিচ্ছেন না।
বিষয়: বিবিধ
১৫৯০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন