অবাক বাংলাদেশ !! অবাক স্বাধীনতা !!

লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ২৪ মে, ২০১৩, ০৬:১৯:১১ সন্ধ্যা



বাংলাদেশে নারায়ণগঞ্জে অভ্যন্তরীণ নৌ-কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত সরকার। বাংলাদেশের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরের কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ৪৬ একর জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে এই টার্মিনাল। এরই মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে কারিগরি ও বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য দরপত্রও আহ্বান করেছে। কাজের দর প্রস্তাব জমা দেয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৭ জুন ২০১৩ বিকাল ৫টা পর্যন্ত।

তবে এ বিষয়ে @@

( ১ ) বাংলাদেশ সরকারের নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর (ডিজি শিপিং) ও বিনিয়োগ বোর্ড কারও অনুমোদন নেই।

(২ ) নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখাসহ বন্দর শাখাও এ বিষয়ে কোনো কিছুই অবগত নয়।

(৩ ) এখন পর্যন্ত বিনিয়োগ বোর্ডেও এ বিষয়ে কোনো আবেদন জমা পড়েনি। এদিকে এধরনের ঘটনাকে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

## বিষয়টা হচ্ছে --

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আদি ভারতীয় পরামর্শক/পেশাদারদের কাছ থেকে সিলগালা দরপত্র আহ্বান করছে। সেকশন অফিসার (ডিপিএ), রুম নং ৩১৩১, বি উইং, জওয়াহর লাল নেহরু ভবন (জেএনবি), নয়া দিল্লী থেকে ২০০০ রুপির পে-অর্ডারের বিনিময়ে পাওয়া যাবে দরপত্রের ডকুমেন্ট। এ জন্য ‘পে এন্ড একাউন্টস অফিসার, মিনিস্ট্রি অব এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্স, নয়া দিল্লী’ বরাবরে এই পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফট জমা দিতে হবে। দরপত্র জমা দেয়ার সময় এর সঙ্গে এক লাখ রুপির ইএমডি ড্রাফট ‘দ্য পে এন্ড একাউন্টস অফিসার, মিনিস্ট্রি অব এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্স’ বরাবর জমা দিতে হবে। দরপত্র জমা দিতে হবে দুই-বিজ্ঞপ্তি (টু বিড) সিস্টেমে। এর একটি হবে টেকনিক্যাল। আরেকটি মূল্য বা খরচ বাবদ। সীলযুক্ত আলাদা আলাদা খামে তা জমা দিতে হবে। খামের ওপর লিখতে হবে ‘টেন্ডার ফর টেকনো-কমার্শিয়াল ফিজিবিলিটি স্টাডি ফর সেটিং আপ অন ইনল্যান্ড কন্টেইনার পোর্ট অ্যাট নারায়ণগঞ্জ, বাংলাদেশ’। জমা দিতে হবে আন্ডারসেক্রেটারি (ডিপিএ), রুম নং. ৩১০০, বি উইং, জওয়াহরলাল নেহরু ভবন (জেএনবি), নয়া দিল্লী- এই ঠিকানায়।

কোন দেশে বিনিয়োগ করতে হলে সে দেশে বিনিয়োগ বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে করতে হবে একই সাথে সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও অনুমোদন প্রয়োজন। কিন্তু ভারত একচেটিয়ে কাজটা করে আমাদের স্বাধীনতার উপর আঘাত করলো ।

***** এই বিষয়ে কিছু বক্তব্য --*******

************************************

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ একটি দৈনিক পত্রিকাকে জানান, বাংলাদেশের ভূমি ভারত ব্যবহার করতে চাচ্ছে অথচ বাংলাদেশ সরকার তা জানে না। এটা একটা অদ্ভূত পরিস্থিতি। দেশের মানুষকে অন্ধকারে রেখে এধরনের বিনিয়োগ চুক্তি দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। দেশের স্বাধীনতা রয়েছে কিনা আমাদের চিন্তা করা উচিত। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগরের তেল গ্যাস গোপনে ভাগাভাগি হচ্ছে। তা দেশের জনগণ জানে না। এসব কর্মকান্ড দেশের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। একই সাথে এধরনের বিনিয়োগ কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত।

সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি শিপিং) কমডোর জোবায়ের আহমেদ বলেন, ভারত সরকারের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগে অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল করতে হলে বাংলাদেশের সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। তাছাড়া বিদেশী বিনিয়োগের ব্যাপারে কিছু আইনগত বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। এক্ষেত্রে দেশী ( বাংলাদেশ )কোম্পানির অবশ্যই ৫১ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে। আমার জানা মতে,বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কুমুদিনী কিংবা ভারতের এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি।

নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান একটি দৈনিক পত্রিকাকে বলেন, এ বিষয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগের বিষয়টি আমি জানি না।

বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী সদস্য নাভাস চন্দ্র মন্ডল বলেন, ভারত সরকার বা কুমুদিনীর পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনো বিনিয়োগ প্রস্তাব বিনিয়োগ বোর্ডে আসেনি। আমার জানা মতে,বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কুমুদিনী কিংবা ভারতের এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি।

তাহলে আমাদের দেশে হচ্ছে কি ? রাজনীতির জন্যে কি তাহলে আমাদের এই করুন অবস্থা ?

বিষয়: বিবিধ

১৫৯০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File