মাত্র ১৭ বসরের কিশোর কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ০৯ মে, ২০১৩, ০২:৩৭:০৭ দুপুর
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগের মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুলাই জামায়াত নেতা মুহাম্মাদ কামারুজ্জামান হাইকোর্টে জামিন নিতে আসলে তার জামিন মঞ্জুর হওয়ার পর হাইকোর্ট এলাকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সরকারের নির্দেশে পুলিশ তাকে তথাকতিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার করে।
৯ মে বৃহস্পতিবার সকালে চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ কামারুজ্জামানের রায় পড়া শুরু করেন সদস্য বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম।রায় উপলক্ষে কামারুজ্জামানকে ট্রাইব্যুনালের এজলাসে আনা হয় বেলা ১১টা ১০ মিনিটে।
এ সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপুসহ অন্যান্য প্রসিকিউটররা।
অপরদিকে আসামিপক্ষের কয়েকজন জুনিয়র আইনজীবী এবং অভিযুক্ত কামারুজ্জামানের আত্মীয়-স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন ।
মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রহসনের তথাকতিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার ২১৫ পৃষ্ঠার ৬৫৮ প্যারার রায় পড়া হলো ।
কামারুজ্জামানের পক্ষে সাফাই সাক্ষী হিসেবে গত ৬ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত মোট ৫ জন সাফাই সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। কিন্তু আওয়ামী ট্রাইব্যুনালের আদালতে ২০১২ সালের ১৫ জুলাই থেকে এ বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে (রাষ্ট্রপক্ষে) তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) আব্দুর রাজ্জাক খান,শেরপুর জেলার ‘বিধবাপল্লী’ নামে খ্যাত সোহাগপুর গ্রামের তিন নারী সাক্ষী (ক্যামেরা ট্রায়াল), সহ রাষ্ট্রপক্ষের মোট ১৮ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।
জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ৭টি অভিযোগ আনা হয়। বানোয়াট অভিযোগগুলো হলো- (১) একাত্তরের ২৯ জুন সকালে কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে আল-বদররা শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানার রামনগর গ্রামের আহম্মেদ মেম্বারের বাড়ি থেকে বদিউজ্জামানকে অপহরণ করে নির্যাতন করে পরদিন হত্যা করা হয়।
(২) কামারুজ্জামান ও তার সহযোগীরা শেরপুর কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ আবদুল হান্নানকে প্রায় নগ্ন করে শহরের রাস্তায় হাঁটাতে হাঁটাতে চাবুক পেটা করা।
(৩) একাত্তরের ২৫ জুলাই আল-বদর ও রাজাকাররা পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে শেরপুরের সোহাগপুর গ্রামে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায় এবং নারীদের ধর্ষণ করে।
(৪) একাত্তরের ২৩ আগস্ট কামারুজ্জামানের নির্দেশে আল-বদর সদস্যরা গোলাম মোস্তফাকে ধরে সুরেন্দ্র মোহন সাহার বাড়িতে স্থাপিত আল-বদর ক্যাম্পে নিয়ে যান। সেখানে কামারুজামান ও আল-বদররা তাকে গুলি করে হত্যা করেন।
(৫) মুক্তিযুদ্ধকালে রমজান মাসের মাঝামাঝি কামারুজ্জামান ও তার সহযোগীরা শেরপুরের চকবাজার থেকে লিয়াকত আলী ও মুজিবুর রহমানকে অপহরণ করে বাঁথিয়া ভবনের রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যান। সেখানে তাদের নির্যাতনের পর থানায় চার দিন আটকে রাখা হয়। পরে কামারুজ্জামানের নির্দেশে ওই দুজনসহ ১৩ জনকে ঝিনাইগাতীর আহম্মেদনগর সেনা ক্যাম্পে পাঠানো হয়। পরে লিয়াকত, মুজিবুরসহ ৮ জনকে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ের কাছে সারিতে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।
(৬) একাত্তরের নভেম্বরে কামারুজ্জামানের নির্দেশে আল-বদর সদস্যরা টুনু ও জাহাঙ্গীরকে ময়মনসিংহের জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে আল-বদর ক্যাম্পে নিয়ে যান। টুনুকে সেখানে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। জাহাঙ্গীরকে পরে ছেড়ে দেয়া হয়।
(৭) মুক্তিযুদ্ধকালে ২৭ রমজান কামারুজ্জামান আল-বদর সদস্যদের নিয়ে ময়মনসিংহের গোলাপজান রোডের টেপা মিয়া ও তার বড় ছেলে জহুরুল ইসলাম দারাকে ধরে জেলা পরিষদের ডাকবাংলোয় আল-বদর ক্যাম্পে নিয়ে যান। সেখানে ৬ জনকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়।
মাত্র ১৭ বসরের কিশোর কামারুজ্জামানের নির্দেশে এতগলো অপরাধ করতে পারে ???????/????/
ট্রাইব্যুনালের বিতর্কিত ও কলংকিত আদালতে বিচারে বদিউজ্জামানকে অপহরণের পর হত্যা সংক্রান্ত ১ নম্বর অভিযোগ, আবদুল হান্নানকে প্রায় নগ্ন করে চাবুক মারা সংক্রান্ত ২ নম্বর অভিযোগ, সোহাগপুরে গণহত্যা সংক্রান্ত ৩ নম্বর অভিযোগ, গোলাম মোস্তফাকে হত্যা সংক্রান্ত ৪ নম্বর অভিযোগ এবং ময়মনসিংহের গোলাপজান রোডের টেপা মিয়া ও তার বড় ছেলে জহুরুল ইসলাম দারাকে ধরে জেলা পরিষদের ডাকবাংলোয় আল-বদর ক্যাম্পে নিয়ে সেখানে ৬ জনকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করার ৭ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
বাকী দুটি অর্থাৎ ৫ ও ৬ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি
বিষয়: বিবিধ
১৪০২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন