এই সর্বনাশ জাতিকে কোথায় নিয়ে ঠেকাবে, সেটা আল্লাহ জানেন। এই মহা দুর্দশার দায়-দায়িত্বের প্রধান ভাগ সরকারের উপর বর্তায়।

লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ১২ এপ্রিল, ২০১৩, ০৯:২৭:৪৭ সকাল



দৈনিক ‘আমার দেশ’ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে আবার গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে কাওরান বাজারে পত্রিকাটির কার্যালয় থেকে ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

ঢাকা মহানগর (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে ডিবির বিশেষ একটি দল মাহমুদুর রহমানের অফিসে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।

এ সময় মাহমুদুর রহমানের অফিসে চল্লাশি চালিয়ে তার ব্যবহৃত ল্যাপটপ, কয়েকটি পেনড্রাইভ, দু’টি হার্ডডিস্ক, একটি সিপিইউ জব্দ করে নিয়ে যায়।

বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের বহুল আলোচিত স্কাইপ কেলেঙ্কারি ফাঁস এবং পুলিশের কাজে বাধা ও মারধরের অভিযোগে তিনটি মামলায় মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পুলিশ তাকে ২৪ দিনের রিমান্ডে নিতে চাইলে আদালত ১৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে ২০১০ সালের ২ জুন ভোরে তাকে কাওরান বাজারে পত্রিকাটির কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে পুলিশি কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ওইদিনই একটি মামলা দায়ের করা হয়। ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আদালত আবমাননার দায়ে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের কারাদণ্ড দেন। এ মামলায় তিনি সাত মাস কারাভোগ করে ২০১১ সালের ১৭ মার্চ মুক্তি পান।

(১)-- গুঞ্জন আর শঙ্কা ছিল আগেই। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশকে অভিহিত করেছিলেন একটি বৃহৎ কারাগার হিসেবে। তিন মাস ধরে অঘোষিতভাবে বন্দি ছিলেন নিজ কার্যালয়ে। তার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছিলেন ক্ষমতাসীনরা। ক্ষমতাসীনদের ঘোষণা সত্য প্রমাণ করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে

(২)দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ছাপাখানায় তল্লাশির পর তা সিলগালা করে দিয়েছে পুলিশ। গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে পত্রিকাটির ছাপাখানায় তল্লাশি শুরু করে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে একটি কম্পিউটার একটি ল্যাপটপ জব্দ করে ছাপাখানার প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে সিলগালা করে দেয় পুলিশ। অভিযান চালানোর সময় পত্রিকার প্রেসে কর্মরতদের বের করে দেয় পুলিশ। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদেরও ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।

(৩)আদালত অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে মাহমুদুর রহমান বলেন, আমি আদালত অবমাননা করিনি। স্কাইপ সংলাপে যা বলা হয়েছিল তাই ‘আমার দেশ’-এ প্রকাশিত হয়েছে। এটা আগে প্রকাশ করেছে বিশ্বখ্যাত পত্রিকা ইকোনমিস্ট। পরে আমরা তা ছেপেছি। বিষয়টি নিয়ে মামলা চলছে। তাই বিচারাধীন বিষয়ে নতুন করে মামলা চলতে পারে না। ‘আমার দেশ’ স্কাইপ সংলাপ ছেপে অন্যায় কিছু করেনি। পুলিশকে হত্যার চেষ্টা ও গাড়ি পোড়ানোর মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ দিন ধরে ‘আমার দেশ’ কার্যালয়ে অবস্থান করছি। ওই কার্যালয়ের বাইরে কোথাও যাচ্ছি না। বলা চলে কয়েক মাস ধরে বন্দিদশায় আছি। বন্দি থেকে গাড়ি পোড়াবো কি করে? পুলিশকে হত্যা করতে যাবো কিভাবে?

(৪) হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, নাস্তিক্যবাদের মুখোশ উন্মোচনকারী বীর কলমযোদ্ধা আমার দেশ সম্পাদককে গ্রেপ্তার করে সরকার ইসলাম বিদ্বেষীদের পুরস্কৃত করছে।

(৫)আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে সরকার নাস্তিক্যবাদের পক্ষ নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনের আমীর আল্লামা আহমদ শফী গতকাল এক জরুরি বৈঠকে এ অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, মাহমুদুর রহমান সত্য প্রকাশে আপসহীন সাহসী এক বীরযোদ্ধা। তিনি দেশের স্বাাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি আগ্রাসী যে কোন হুমকির ব্যাপারে জনগণকে অবহিত করতে যেমন কখনও পিছপা হননি, অন্যদিকে ইসলাম ও মুসলমানদের দুশমন নাস্তিক্যবাদীদের ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা সম্পর্কে জাতিকে সজাগ করে প্রশংসনীয় দায়িত্ব পালন করেছেন। আল্লামা শাহ আহমদ শফী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- যারা আল্লাহ, রাসূল, কুরআন, ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে জঘন্য কুৎসা রটনা করে মুসলমানদের মনে চরম আঘাত ও ক্ষোভ তৈরি করছে সরকার তাদের গ্রেপ্তার ও সাজা না দিয়ে উল্টো ইসলাম বিদ্বেষীদের অপকর্ম উদ্ঘাটন করার অপরাধে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে নাস্তিক্যবাদের পক্ষাবলম্বন করেছে। এটা জাতির জন্য অশনি সংকেত ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি অবিলম্বে মাহমুদুর রহমানকে মুক্তিদানসহ গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধে সকল তৎপরতা বন্ধের আহ্বান জানান।

(৬) নিজেই শুনানি করলেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন, আমি কোন বোকার স্বর্গে বাস করি না যে, আইনজীবী নিয়োগ করবো। আমি জানি- আদালত এখন সরকারের কথায় চলে। সরকার যা নির্দেশ দেয় আদালত তা-ই করে। শুনানি শেষে আদালত তিন মামলায় মাহমুদুর রহমানের ১৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। শুনানিতে মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, আইনজীবী নিয়োগ দিলে তারা রিমান্ডের বিরোধিতা করবে। জামিন চাইবে। সরকার আমাকে জামিন দেবে না। রিমান্ড আবেদনও বাতিল করবে না। আপনি সরকারের নির্দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। তাই আমি কোন আইনজীবী নিয়োগ করছি না। আমার আইনজীবীর প্রয়োজন নেই। আমি কোন ওকালতনামায় সই করবো না। রিমান্ড আবেদনের শুনানির সময় নিজেই কথা বলেন মাহমুদুর রহমান। এ সময় তিনি বলেন, যেসব মামলায় আমাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে তার কোন একটিও চলতে পারে না। তিনি শুরুতেই বলেন, পিপি আবদুল্লাহ আবু আমার বিরুদ্ধে আদালতে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মিথ্যা এবং অসত্য। তিনি ভুল তথ্য উপস্থাপন করেছেন।

(৭)গণজাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক ডা. ইমরান এইচ সরকার সাংবাদিকদের কাছে -দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করায় সরকারে ধন্যবাদ জানিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ।

(৮) আইনবিশেষজ্ঞদের প্রতিক্রিয়া : মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার সংবিধান পরিপন্থী : বিশিষ্ট আইনবিশেষঞ্জ ও সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক বলেন, সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা আইনসঙ্গত হয়নি। পত্রিকার অফিসে হামলা চালিয়ে একজন সম্পাদককে গ্রেফতার করা গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার ওপর চরম আঘাত। এটা সভ্য সমাজে মেনে নেয়া যায় না। তিনি বলেন, সাংবাদিকের ওপর এ ধরনের হামলা সংবিধান ও আইনবিরোধী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল এক লিখিত বক্তব্যে বলেন, মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারের আক্রোশ দীর্ঘদিনের। তিনি সরকারের সব দুর্নীতি, অনাচার ও দেশবিরোধী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে দেশের সবচেয়ে সোচ্চার ও বলিষ্ঠ কণ্ঠ। তাকে গ্রেফতার ও নির্যাতন তাই সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক ও গণবিরোধী নীতিরই বহিঃপ্রকাশ। যে সরকার সংসদ সদস্যের নিজের পিস্তলের গুলিকে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের জন্য তাকে গ্রেফতার করে না, শর্টগান উঁচিয়ে গুলি করা বা দুর্নীতির প্রমাণ্য অভিযোগে অভিযুক্ত দলের নেতাদের আটক করে না, নির্মম খুনি ও প্রমাণিত দুর্নীতিবাজদের রাষ্ট্রপতি ক্ষমা প্রদান করেন, তার মুখে একজন সম্পাদককে এভাবে গ্রেফতার করা আইনের শাসন, এটি শুনলে হাস্যকরই শোনায়।

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে তেজগাঁও থানায় যে মামলা হয়েছে, তা যদি আমরা সত্য ধরে নিই, তাহলে তিনি কোনো অপরাধ করেননি। কারণ, এ আইনে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা যায় না। তিনি বলেন, গত ডিসেম্বরে স্কাইপ সংলাপ প্রকাশ করেছিল, সেটার দায়দায়িত্ব নিয়ে বিচারপতি নিজামুল হক পদত্যাগ করেছেন। যেসব বিষয়ে আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছিল, তাতে বিচারপতি, কোনো কোনো মন্ত্রী, দেশে- বিদেশে অবস্থানরত কোনো ব্যক্তি তা অস্বীকার করেননি। তা ছাড়া এসব তথ্য ব্রিটেনের ইকোনমিস্ট ও যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। সুতরাং এটা ধরে নেয়া যায়, মাহমুদুর রহমানকে অন্য কোনো উদ্দেশ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরোদ্দজা বাদল বলেন, মাহমুদুর রহমানের গ্রেফতারের খবরে আমি স্তব্ধ হয়ে গেছি। কোনো কিছু বলার ভাষা আমার নেই।

বিশিষ্ট আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, আমার দেশ-এর সম্পাদককে গ্রেফতার আবারও সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্র প্রমাণ করল। মাহমুদুর রহমানকে ১৩ দিনের রিমান্ড দিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা ৫৫ ডিএল আর ভঙ্গ করা হয়েছে। তিনি বলেন, একজন সম্পাদককে ১৩ দিনের রিমান্ড দেয়া নজিরবিহীন। মাহমুদুর রহমান চোর কিংবা ডাকাত নন, তিনি সমাজের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি। তাকে রিমান্ডে নেয়া সম্পূর্ণ আইনবিরোধী।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে বাকস্বাধীনতাসহ গণতান্ত্রিক সব অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। দমন নিপীড়ননীতি দ্বারা ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার অশুভ পাঁয়তারা করছে। তারই নিকৃষ্টতম প্রতিফলন মাহমুদুর রহমানের মতো একজন সাহসী বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিককে গ্রেফতার করা।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী গতকাল (১১এপ্রিল ২০১৩,) এক লিখিত বক্তব্যে বলেন, সরকার অসাংবিধানিকভাবে সংবাদমাধ্যমের মত প্রকাশের অধিকারকে নিয়ন্ত্রণের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই আমার দেশ সম্পাদককে গ্রেফতার করেছে। সংবিধানের ৩৯ নম্বর অনুচ্ছেদে চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া আছে। সংবিধান প্রত্যেক নাগরিকের বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা, অধিকার ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। সরকার তা লঙ্ঘন করে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে।

(৯) গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল দেশ : সাংবাদিকদের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম, ফ্যাসিস্ট হুমকির কাছে মাথানতকরেছে সরকার: সিএমইউজে

হেফাজতে ইসলামের আমির দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) সভাপতি হজরত আল্লামা শাহ আহমদ শফী অবিলম্বে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি দাবি করেছেন।

(১০) দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি (১১ এপ্রিল) । একই সঙ্গে অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করা হয়েছে।

(১১) দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

(১২) ঢাকা, ১১ এপ্রিল : দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে সরকারের বাকশালী চরিত্রের প্রকৃত স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে। এর আগেও সরকার মাহমুদুর রহমানকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার ও নির্যাতন চালিয়ে দীর্ঘদিন বন্দি করে রেখেছিল।

(১৩ ) বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, নানা ঘটনায় মনে হচ্ছে মহাসংকট ডেকে আনার ষড়যন্ত্র চলছে।” স্কাইপির কারণে যদি কাউকে গ্রেফতার করা না হয় তবে মাহমুদুর রহমানের অপরাধ কী? স্বয়ং জড়িত বিচারপতি যেখানে নিজ মুখে স্কাইপি ঘটনা স্বীকার করেছেন এবং সেজন্য পদত্যাগ করেছেন, তা সংজ্ঞা অনুসারে একটি সংবাদমাত্র।”

(১৪)আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতারের খবর তাত্ক্ষণিকভাবে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো।

মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতারের পরপরই ওয়াশিংটন পোস্ট, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, আল জাজিরা, বিবিসি, ভারতের দ্য স্টেটসম্যান ও হিন্দু, গালফ নিউজ, এএফপি, এপিসহ বিশ্বের প্রভাবশালী গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়।

‘বাংলাদেশ অ্যারেস্টস এডিটর অব প্রো-অপজিশন ডেইলি’ শিরোনামে এএফপির খবরে বলা হয়, পুলিশ বিরোধী দল সমর্থক একটি প্রভাবশালী দৈনিকের সম্পাদককে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও ধর্মীয় সহিংসতায় উসকানি দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশব্যাপী বিরোধী দলের দু’শতাধিক নেতাকে গ্রেফতারের পরেই মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আমার দেশ সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েক মাসে আমার দেশ-এর সার্কুলেশন বেড়ে ২ লাখে উন্নীত হয়েছে (প্রকৃতপক্ষে ২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে)। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ভিজিট করা ওয়েবসাইটের মধ্যে আমার দেশ-এর ওয়েবসাইট অন্যতম।

আল জাজিরায় প্রচারিত প্রতিবেদনে বলা হয়, আমার দেশ বাংলাদেশে সরকারবিরোধী শীর্ষস্থানীয় দৈনিক। সম্প্রতি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ ও সরকারবিরোধী অবস্থানের কারণে পত্রিকাটির প্রচারসংখ্যা এবং ওয়েবসাইট পাঠক উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়, সহিংসতায় উসকানিসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিরোধী দলের সমর্থক আমার দেশ সম্পাদককে গ্রেফতার করা হয়। বিবিসি বাংলাও তাত্ক্ষণিকভাবে গ্রেফতারের খবর অনলাইন সংস্করণে প্রকাশ করে।

‘বাংলাদেশ অ্যারেস্টস অ্যান্টি-গভর্নমেন্ট নিউজপেপার এডিটর’ শিরোনামে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামপন্থী ও সেক্যুলারদের ক্রমবর্ধমান সহিংসতার মধ্যেই মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হলো।

(১৫) গতকাল ১১ এপ্রিল ২০১৩, সারাদেশে মাহমুদুর রহমানের মুক্তি দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংবাদিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন। এ ছাড়া অনেকে বিবৃতি দিয়ে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

বিষয়: বিবিধ

১২৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File