শ্রদ্ধেয় বদরুদ্দীন উমর সাহেবকে নিয়ে আমার বন্ধুর লেখা
লিখেছেন লিখেছেন রায়হান মাসুদ ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১২:৪৪:৫৩ দুপুর
শ্রদ্ধেয় বদরুদ্দীন উমর, গত ৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৩ইং তারিখে প্রকাশিত আমার দেশ পত্রিকায় “জামায়াতে ইসলামী এবং আওয়ামী লীগ জোট সরকার এখন কোন পথে?” শিরোনামে আপনি লিখেছেন জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির যুদ্ধপরাধী বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল ভেঙ্গে দেয়ার দাবিতে রাস্তায় নেমে যে সব অপরাধ করছে, তার বিচার যে কোন সভ্য দেশে হওয়া দরকার।আমি আপনার মতের সাথে একমত ।আমি জামায়াতে ইসলামির রাজনীতির সাথে জড়িত নই।তবে আমার প্রশ্ন হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরকে দেশবিধ্বংসী কাজের জন্য মাঠে নামিয়েছে কারা? আমার মতে সরকারই তাদেরকে এই ঘৃণ্য কাজের জন্য বাধ্য করেছে।শ্রদ্ধেয় বদরুদ্দীন উমর সাহেব আপনার জানা থাকার কথা যে, জামায়াতে ইসলামী তাদের র্শীষ নেতাদের বিচারের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার দাবি করে আসছে, কিন্তু সরকার সে দিকে কর্নপাত করেনি, করবেও না ।তাছাড়া আপনি আরো জানেন যে, সাঈদী সাহেবের সাক্ষী সুখরঞ্জন বালাকে আদালত পাড়ার গেইট থেকে অপহরণ করা হয়, সাইদী সাহেবের আইনজীবীগন তা আদালতকে অবহতি করলে আদালত কতুটুকুন ভূমিকা পালন করেছে? তা সকলের কাছে স্পষ্ট । সরকার পক্ষের আইনজীবীগন বলেছেন মাননীয় আদালত এ ধরনের কোন কিছূই ঘটেনি । আমার প্রশ্ন যদি এমন কিছু নাই ঘটে থাকে তাহলে সুখরঞ্জন বালা বর্তমানে কোথায় আছে? শ্রদ্ধেয় বদরুদ্দীন উমর আমি আপনার কলামের একজন পাঠক, আপনার সকল কলাম পড়ার চেষ্টা করি । কিন্তু গত ৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৩ পযর্ন্ত কোন কলামে উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে কাঙিখত মানের আপনার কোন লেখা আমার দৃষ্টিতে পড়েনি, আশা করি ভবিষ্যতে লিখবেন ।আপনার মতো জাতীয় বুদ্ধিজীবীদের কাছ থেকে জাতি এমনটিই কামনা করে বলে আমার বিশ্বাস ।আপনার জ্ঞাতার্থে একটি উপমা দিতে চাই আর সেটি হলো “ ধরুন কোন ব্যক্তির রোগ হলো আর রোগের জন্য ডাক্তার তাকে শাসন করলেন আপনি কি উক্ত ডাক্তার কে বিজ্ঞ ডাক্তার বলবেন? নিশ্চয়ই নয় । জামায়াতে ইসলামী এবং ছাত্রশিবির আন্দোলনের জন্য মাঠে নেমেছে, দেশের পরিবেশ নষ্ট করছে কিন্তু কি কারণে মাঠে নেমেছে কেন তারা বাধ্য হয়েছে এ কাজ করতে, সে বিষয়ে দৃষ্টিপাত করা দরকার বলে মনে করি। অপরাধীদের বিচার করা হবে তাতে সমস্যা নেই কিন্ত সাক্ষীকে গুম করা হবে কেন? মিথ্যা সাক্ষ্য গ্রহন করা হবে কেন? বিচারক বিচারাধিন বিষয়ে অন্যের সাথে আলোচনা করবে কেন? মন্ত্রিদের মুখ থেকে বিচারের রায় নিয়ে মন্তব্য আসবে কেন? এ সকল ঘৃণ্য কাজ কোন সভ্য সমাজে চলতে পারে কিনা? তা গভীর ভাবে চিন্তা করা ও বিস্তারিত আলোকপাত করা দরকার বলে মনে করছি। শ্রদ্ধেয় উমর সাহেব স্কাইপি সংলাপ ফাঁস হওয়ার পরে আমাদের দেশের এক বিদেশী অথর্ব জ্ঞানপাপী বলেছেন আমাদের দেশ গরীব দেশ সুতরাং বিশাল অর্থের খরচ করে আর্ন্তজাতিক আদালত থেকে আইনজীবী নিয়োগ দেয়া সম্ভব নয়। আমার প্রশ্ন হলো এই জ্ঞানপাপীর দেশের জন্য এত করুণা হয় কিন্তু অসদুপায় অবলম্ভন করার ক্ষেত্রে তার বিবেক বিন্ধু মাত্র বাধা দেয়নি কেন? জ্ঞানপাপীর সে বক্তব্য ও আমাদের মন্ত্রীমহাদয়গনের বক্তব্যের দিকে দৃষ্টিপাত করলে ভিন্ন চিত্র ভেসে আসে। এক মন্ত্রী বলেছেন চার হাজার কোটি টাকা দূর্নীতি হওয়া এটা কিছুই না। প্রশ্ন হলো দূর্নীতি করার জন্য হাজার হাজার ডলার পাওয়া যাবে অথচ ন্যায় বিচারের সার্থে কিছু টাকা খরচ করে আইনজীবী নিয়োগ দেয়া যাবেনা এ ধরনের নজীর তো পৃথিবীর কোন সভ্য দেশ দূরের কথা আফ্রিকাতেও পাওয়া যাবে না। বলে রাখি জামায়াতে ইসলামী কে উসকে দেয়া আমার লক্ষ নয়, আমার লক্ষ হলো বাস্তবতাকে ভাষা চিত্রে ফুটিয়ে তোলা।৭১ সালে খুন ধর্ষণ লুটতরাজ হয়েছে তখন কার সময়ের তথ্য প্রযুক্তির মান কোথায় ছিলো, তার আপনার গোচরিভূত। জামায়াতের র্শীষ নেতারা এ ঘৃণ্য আচরণ করেছেন তার সত্যিকারের প্রমাণ কতুটুকুন আছে তা আপনি ভাল করেই জানেন। আজ সেই অন্যায় মূলক আচরনের বিচার হচ্ছে ।অথচ জাহান্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্ষনের সেঞুরী করা সেই নরপশুটি, ভিকারুন্নেসার পরিমল নামক মানুষ রুপী পশুটির অপরাধের অসংখ্য তথ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও ভিকটিমরা কতুটুকুন ন্যায় বিচার পেয়েছেন বা পাচ্ছেন সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করবেন বলে আমার প্রত্যাশা। সর্বশেষ একটি ঘটনার উল্লেখ করছি ৭.২.১৩ইং তারিখে বোয়ালখালিতে মহিলা পুলিশের ইজ্জত নষ্টকারী ছাত্রলীগ কর্মীকে যখন পুলিশ গ্রেফতার করেছে তখন তার অপর কর্মী ভাইয়েরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে থানা ঘেরাও করে ধর্ষণকারীতে মুক্ত করে নিয়েছে, তা কি কোন সভ্য সমাজে কল্পনা করা যায়? সুতরাং সভ্য সমাজে এসকল অপরাধেরও বিচার হওয়া উচিত। জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বিচার হচ্ছে, কিন্তু ন্যায় বিচার পাচ্ছেনা, কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেনা, তাদের গনতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে, এখন তারা কী করবে? যার ফলে জামায়াত-শিবির আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছে বলে মনে করি। অবশেষে আপনার কাছে প্রত্যাশা থাকবে এ দেশ কে উত্তরোত্তর উন্নতীর রাজপথ ধরে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জাতি, ধর্ম, বর্ন নির্বিশেষে সকলের প্রতি যুক্তিক কারণ উল্লেখ প্রর্বক গঠনমূলক সমালোচনা করা। শুধু আদর্শিক কারণে অন্য দলের কর্মীদের প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষ পোষণ করা নিঃসন্দেহে বড় মনের পরিচয় নয়।
বিষয়: বিবিধ
১২০২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন