উন্নত জীবনের খোঁজে!
লিখেছেন লিখেছেন অন্ধকার আকাশ ২১ মার্চ, ২০১৩, ০৫:০৩:২৭ সকাল
স্বপ্ন সত্যি হলে যে কি অনুভুতি আর ভালো লাগা তা বাস্তবে না ঘটলে বুঝা অতি কষ্টকর এবং অতি অনুতাপের বিষয়।
খুব ছোট থেকে প্রাচ্যে আসার স্বপ্ন না থাকলেও স্বপ্ন দেখা কিন্তু দেরী হয়নি।
মাত্র কয়েক বছর আগে মনে হত কত দূর¬¬¬
কখনো যদি বাস্তব হত এমন স্বপ্ন? যদি দেখতে পারতাম প্রাচ্যের জীবন?!
এমন চিন্তা আর কল্পনা ছিলনা তা অস্বীকার করব না।
ছিল বলেই হয়তো আজ আমি প্রাচ্যের মরুভূমিতে!
"মরুভূমি" দেখে চমকে উঠার মত! কিন্তু বাস্তবতা আমাকে সে রকমই বলে।
মিনিট, ঘন্টা, দিন,সপ্তাহ,মাস করেই কেটে গেল আমার প্রবাস জীবনের প্রথম বছর।
কত ঘটনা আর কত স্মৃতি আমার এই এক বছরের প্রবাসে।
অথচ- আমার এই প্রবাস আগমন নিয়ে ছিল নাটক আর ঘটনার ঘনঘটা!!!
অনেক বার আশা আর নিরাশার খেলা আমার স্বপ্নকে করেছিল ধুলায় মলিন।
যাই হোক,
আজ আমি বহির বিশ্বে এটাই বড় কথা।
পরিবার , পরিজন, বন্ধু-এর মত অতি পরিচিত মুখ ছেড়ে আজ একটা বছর হল আমি দুরে,বহু দুরে!
যাদেরকে ইচ্ছা করলে সময়-অসময় পাইতাম পাশে। আজ তারা আমার থেকে হাজার হাজার মাইল দুরত্বে।
এমনো দিন গেছে যে, কেউ নাই কিন্তু পার্কে মন খারাপ করে বসে ভাবছি কি করছি!
কেন আপন সমাজ ছেড়ে এই কঠিন রীতির দেশে আমি!
কেন আমি পরিবারকে দুরে ঠেলে দিলাম?
ইত্যাদি ভাবতে ভাবতে দিন চলে গেছে।
আজও ভাবি-
মাঝে মাঝে মনকে বুঝানো ছিল অসম্ভব।
নিরব কান্না কাকে বলে তা বাস্তবে বুঝলাম এই দূর প্রবাসে এসে।
পরিবারকে ছেড়ে থাকা যে কি কঠিন, তা দুরে না থাকলে বুঝা যায় না।
আজ যা আমি হাড়ে হাড়ে বুঝছি।
এক মহুর্ত ভালো লাগেনা যখন বাড়ির কথা মনে পড়ে।
মা-বাবা, ভাই-বোন্। বড়ই কষ্টের জীবন এই প্রবাস জীবন।
মা-বাবাকে কখনো একান্তে বলা হয়নি মাপ করে দিও।
বলা হবেও না! তাইতো বলছি- ক্ষমা করে দিও মা।অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমাকে মা।
বাবা- ক্ষমা করে দিও আমায়।অনেক ভুল করেছি হয়তো কখনো বলব না।তবুও ক্ষমা করে দিও।
বন্ধুরা যখন ছিল আড্ডার সাথী আর বরিং সময়ের সাথী, তারা আজ কোথায়?
দিনের ঘটনা প্রবাহে মনে পড়ে তোদের।
কেমন আছিস তোরা? ভালো থাকিস সব সময়।একলা এই জীবনে তোরাই বেশি মনে পড়িস।
তোদেরকে খুব খুব মিস করি রে দোস্ত।
সত্যি খুব মিস করি।
আজ এই বছরের প্রান্তে কত কিছুইনা মিস করি!
কোথাও ইচ্ছা হলে ঘুরতে যেতে পারিনা!
কাউকে পায়না ইচ্ছা মত ফোন দিয়ে বের হয়ে যেতে!
যদিও বন্ধু পেয়েছি কিন্তু সবাই যান্ত্রিক জীবনে মহা ব্যস্ত আর ব্যস্ত।
একটু সময় বের করা বড়ই কঠিন।
তাইতো মন খুলে আড্ডা আর ঘুরা ঘুরি করা যায় না।
কলেজে পেলাম কিছু নতুন বন্ধু আর সহ-পাঠি।
কলেজে গেলেই কেবল একটু সময় পাওয়া যায় আড্ডা দেয়ার মত।
কিন্তু তাও লিমিটেড।
সবাই ছুটে যে যার মত করে কাজের নেশায়। তাই, আমিও ছুটি সময়ের দাবিতে-
সামনে চলার পথে-
বাকি সময় চলে কাজ আর একাকিত্বের চরম এক ঘুয়েমি জীবন।
এই জন্য অতীত নিয়ে ভাবার সময় পাই একটু বেশিই।
বড় ভাইরা আছে বলেই হইতো একটু নির্বার।
তা না হলে- কবেই নিরাশ হয়ে পড়ে যেতাম অতলে!
বিশেষ ধ্যবাদ না দিলে চরম অন্যায় হবে "জাবেদ" ভাইয়ার প্রতি-
আমার একমাত্র বিপদ-আপদের সাথী এই দূর প্রাচ্যে।
আমার কোনো সমসসা হলেই - সমাধান আছে! তা হল - জাবেদ ভাইয়া।
সে যা করছে আমার জন্য- তা অনস্বীকার্য।
বড় ভায়ের কথা আজ না হয় নাই বললাম!
নতুন জীবনে পেলাম নতুন পরিবেশ, নতুন বন্ধু, নতুন জীবন মান।
সব চেয়ে দেখার মত যে জিনিসটা, পড়ালেখার পাশা পাশি একটা জব পেয়েছি।
ভাল-মন্দ মিলিয়ে গেল প্রথম বছর।
যদিও মন্দের চেয়ে ভালো লাগাটা ছিল বেশি! প্রথম বলেই হয়তোবা!
তবে শিখছি জীবনের বাস্তবতা।
বাকিটা মহান রবের কৃপা। সামনে আগানোর পথে এই পিছনের দিনগুলা প্রেরণা জোগাবে এই আমার আশা।
বিষয়: বিবিধ
২০১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন