বদরুদ্দিন উমর এর "দেশজুড়ে ফ্যাসিস্ট জামায়াতের সহিংসতা" ও সামান্য কথা।
লিখেছেন লিখেছেন অন্ধকার আকাশ ০৫ মার্চ, ২০১৩, ০৯:১৩:২৮ সকাল
জনাব বদরুদ্দীন উমর এর লেখাটা পড়ে আমার অনেক কথা জানার ইচ্ছা জন্মে।
উনার মত এমন খ্যাতিমান লেখকের লেখা আমাকে অনুপ্রাণিত করে।
যাদের লেখার ভাষাকে আমরা মানে তরুণ প্রজন্ম মন দিয়ে খেয়াল করে বলে আমি মানি।
আজ আমি একটি জাতীয় পত্রিকায় উনার লেখা পড়ে খানিকটা ধন্দে পড়ে যায়!
"দেশজুড়ে ফ্যাসিস্ট জামায়াতের সহিংসতা" এই নাম তিনি যা লিখেছেন তাতে খানিকটা খটকা আর প্রশ্ন উদগিরণ হয় আমার মনে!
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এর জন্ম লগ্ন থেকে ইসলামী মূল্যবোধ ও জাতীয় চেতনায় সচেস্ট বলে আমি জানি।
তাদের কাজ-কর্ম ইসলামিক ভাব ধারার হবে এটাই সাভাবিক। তাতে যদি বলা হয় জামায়াত ইসলামের নামে রাজনীতি করছে তাহলে এটা চরম অসস্তির কথা ছাড়া আর কিছুই নয়।তারা ধর্মের কথা বলবে এবং ধর্মের নীতিতে রাজনীতি করবে এটাই পানির মত সোজা।তাদের ধর্ম আর বিচক্ষনতা নিয়ে পশ্ন করার আগে ধর্ম সম্পর্কে সম্মুখ ধারনা থাকা অতীব জরুরী বলে আমি জানি।
আওয়ামীলীগ ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে বলে আমরা সবাই জানি এবং এটা দিনের আলোর মত পরিস্কার।
ভোটের সময় ইসলামী বেশে ধর্ম প্রাণ, সরল বিশ্বাসী মুসলমানদের ধোকা দেয়া একমাত্র মুজিব ধারার লোকদের দিয়ে সম্ভব।
সেটা আমরা অতীতে দেখেছি এবং দেখছি!
বিএনপির কথা না হয় নাই বললাম।কারন শহিদ প্রেসিডেন্ট যেখানে ইসলাম ও জাতীয়তাবাদকে সমান ভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন বলেই ইসলাম আজ বাংলার মাটিতে শক্ত অবস্থানে আছে।
জনাব,
আপনি বলেছেন, ধর্মের ধুয়া তুলে জামায়াত আজ সহিংস আর নিশংস!
জামায়াতের কি এমন নৃসংশ কাজ আপনার আঘাতে লেগেছে ?
ভারতের যে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদীদের কথা বলেছেন তা পৃথিবী জুড়ে কুখ্যাত তাদের কর্ম কান্ডে। কিন্তু অতীতের জামায়াত কি এমন করেছিল শিব সেনাদের মত?
আজ যদি চাপাতি হাতে বিশ্যজিতকে কুপিয়ে হত্যা করা হত তাহলে বলা যেত জামায়াত ধর্মীয় সন্ত্রাসী। কিন্তু লাঠি হাতে মিছিল করলে কি করে নৃসংশ হয়? বিনা উস্কানিতে পুলিশ যখন গুলি করে পাখির মত তাজা রক্ত থামিয়ে দেয় এটা কি জামায়াতের নৃশংসতা?
আপনি বলছেন '৭১ এর "স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তান সরকার ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ছত্রছায়ায় এই দলটি পাকিস্তানের সঙ্গে ইসলামকে এক করে দেখিয়ে নিজেদের দেশের জনগণের ওপরই ধর্ম নির্বিশেষে যে নৃশংস নির্যাতন, যে হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ, অগি্নকাণ্ড, লুটতরাজ তারা করেছিল, তার ভিত্তি রচিত হয়েছিল তাদের বিস্তৃত ধর্মচিন্তা দ্বারা।"- আপনি তো ধর্মের অপব্যাখা করেছে!
আপনি ইসলাম ধর্মের কোথায় পেলেন যে, ধর্ম চিন্তার মাধ্যমে নির্যাতন,হত্যা, ধর্ষন ভিত্তি রচনা হয়? আমি ত আপনার ধর্ম জ্ঞান নিয়ে সন্দেহ হয়।
বলেছেন, জামায়াত ইসলামকে ব্যবহার করে ইহজাগতিক সার্থ হাসিল করছে! তাইত! জামায়াত ইসলামের নাম ব্যবহার করে চাদাবাজি করছে!
জামায়ত ইসলামের নাম ব্যবহার করে টেন্ডারবাজি করছে! ইসলামের নাম ভাঙিয়ে যাত্রা আর অশ্লীল নাচে মত্ত রয়েছে! ইসলামের নাম ভাঙিয়ে ধর্ষনের সেন্চুরী করছে!!!
হরতালের নাম কে বিধ্বংসী? জামায়াত নাকি সরকারী পেটোয়া বাহিনী?
হরতাল দেশের গনতান্ত্রিক অধিকার। আর এই অধিকারের বলেই জামায়াত-শিবির হরতাল দিয়েছে শান্তি পূর্ণ কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে। কে এই শান্তি পূর্ণ মিছিলে হামলা করে সহিংসতা সৃষ্টি করেছে? আপনার যদি চোখ খোলা থাকে, তাহলে আপনার জানার কথা পরপর ২ দিন ঢাকাসহ সারা দেশে জামায়াত- শিবির মিছিল করেছিল বিনা উস্কানিতে, বিনা বাধায়। যার ফল সুরূপ জামায়াত ইসলামী পুলিশকে ফুল দিয়ে বরন করে নিয়েছিল। তার মানে কি দাড়াল?পুলিশ আক্রমন না করলে জামায়ত আক্রমন করেনা।
আর আমরা যদি সাম্প্রতিক সময়ের হরতালের দিয়ে তাকায়, তাতে দিনের আলোর মত পরিস্কার দেখা যায় পুলিশ আগে মিছিলে হামলা করে। তাতে সহিংসতা পুলিশই তৈরী করে, জামায়াত নয়।শতাধিক মৃতুর হিসাব তার ই প্রমান।
মিডিয়ার হলুদ ইমেজেও আমরা দেখতে পাই- হাজার হাজার জামায়াত-শিবির কর্মী মিছিল করছে লাঠি হাতে! অথচ আপনি বলছেন অস্ত্র নিয়ে মিছিল থেকে হামলা ও ভাংচুর করা হয়! কি দেখলাম আর কি পরলাম? আপনি কি দেখাতে পারবেন কোনো ফুটেজ? মরনাস্ত্র হাতে শিবির আর আক্রমন?বাংলার প্রায় সকল মিডিয়া মাইল কি পেয়েছে একটা পিস্তল? যদি তা না হয়, তাহলে আপনি লাঠিকে মরনাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।যা আপনার মত প্রবীনের কাছে কাম্য নয়। মনে রাখবেন, ২৮ই অক্টোবর কিন্তু আওয়ামী-বাকশাল রাজপথে প্রকাশ্যে দিবালোকে লগি-বৈঠা দিয়ে ঘটিয়েছিল।জামায়াত-শিবির ঘটায়নি।জামায়ত যদি সন্ত্রাসী সংঘঠন হত তাহলে ঐদিন বাকশালীরা রাজপথ থেকে ঘরে ফিরতে পারতনা।
জামায়াত উন্মত্ত হয়েছে সত্য।সরকার যদি উন্মত্ত না করত তাহলে জামায়াতের কোনো দরকার ছিলনা জীবনবাজি রেখে পুলিশের গুলিতে রাজপথ রাঙানোর। হরতালের কারনে জামায়াত রাস্তা-ঘাট,রেল লাইন,যান চলাচল এ অসুবিধা তৈরী করেছিল বলে আপনি অভিযোগ করছেন।আপনার জ্ঞাতার্থে বলছি, হরতাল শুধু মাত্র জামায়াত-শিবির একা করেনি!সাথে ছিল দেশের আপাময় জনতা।ভাংচুর আর আগুন দিয়েছে বলে আপনি দুঃখ করছেন! কিন্তু একবার ও কি বলেছেন- সাহবাগিদের আহবানে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা কেন দেশের সেরা সব প্রতিষ্ঠানে হামলা করেছে?কেন ইসলামী ব্যাংকের মত একটি বিশ্ব খ্যাত ব্যাংকে হামলা করা হল? এগুলা কি সাহবাগিদের বাপ-দাদার সম্পত্তি?এটিএম বুথে হামলা করে টাকা লুট করে নিয়ে গেল! ওই টাকা কি তাদের বাপ-দাদা রেখেছিল?
হরতাল করেছে জামায়াত! কই তারাতো কোনো ব্যাংকে হামলা করেনি।তারাতো প্রতিষ্ঠানে আগুন দেইনি।
নাস্তিকদের বিরুদ্ধ্যে জনতার জেগে উঠাকে বলছে বর্বরতা !
একটা নাস্তিক তার সৃষ্টি কর্তাকে ও তার প্রেরিত রাসুলকে গালি দিলে বর্বরতা আর নোংরামি হয়না! আর নাস্তিকের বিরুধিতা করলেই বর্বরতা!!! অতীব চমত্কার বিশ্লেষণ। আপনার নাম আমি মুসলমান হিসেবেই জানি। যদি আপনি মুসলমান হন তাহলে আপনিও আপনার ধর্মকে কুলুষিত করার জনি প্রতিবাধ করবেন আর যদি না করেন তাহলে আপনিও একজন নাস্তিক বলেই আমি মনে করি।
সংখ্যা লগুদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা আমি জানাই।
এই আন্দলনের সময়কাল থেকে জামায়াত বলে আসছে তারা কোনো সংখ্যা লগুদের উপর হামলা করবে না এবং কিছুই বলবেনা।
আপনি কি ভাবে বুঝলেন এই ক্রিমিনালি কাজটা জামায়াত করছে?
অতীতে এমন অনেক রেকর্ড আছে আওয়ামীলীগের! তারা সংখ্যা লগুদের উপর হামলা করে অন্যদের উপর দোষ চাপিয়েছে।যার প্রমান আমরা দেখেছি রামুর মন্দিরে হামলার মাধ্যমে। তা হলে আপনি কি ভাবে বলতে পারেন যে এটা জামায়াত শিবিরের কাজ? কাউকে কি গ্রেপ্তার করে দেখিয়েছেন এটা জামায়াতের কাজ?
বস্তুত সংখ্যা লগুদের উপর হামলা করা তাদেরই স্বভাব, যারা প্রকৃত পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনা। আর এটাই আওয়ামীলীগের শেষ ট্রাম্পকার্ড। আন্দলন ধমাতে না পেরে অন্য ধর্মের উপর আঘাত করা হিজলার স্বভাব ছাড়া আর কিছুই নয়।
পরিশেষে, জনাব, ধর্মের সঠিক ইতিহাস না জেনে পবিত্র ধর্মকে কুলুষিত করবেন না।আপনাকে আমি শ্রদ্ধা করি আর লেখা পড়ি বলেই হইত লিখলাম দু কলম।
বিষয়: বিবিধ
১৮৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন