হুজুগে মাতাল

লিখেছেন লিখেছেন অন্ধকার আকাশ ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৭:১৯:৩৩ সন্ধ্যা

লেখার ব্যাপারে আমার বরাবরই সামান্য আলসেমি, ধিরস্থিরতা আর সময় দেয়া নিয়ে যুদ্ধ।

তারপরও আজ একটু সময় নিয়ে লিখে দায় মুক্তির চেষ্টা করলাম মাত্র।

"শাহবাগ" বর্তমানে আমার দেশের অহংকার এর নাম, প্রদীপ্ত আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে তারুন্য আজ জেগেছে রাজপথে। অত্যাচারীর শেষ ঘণ্টা দেখার আশায় বসে আসে হাজার হাজার চোখ।আমিও আছি বসে তাদের সাথে শেষ দেখার আশায়!

কিন্তু!

দিন দিন আমার আশার শেষ দেখার আগে জং ধরা মরীচিকার উড়া-উরি দেখতেছি প্রবল বিক্রমে!

আসলেই কি আমরা পারব আমাদের দাবির লক্ষ্য পূরণ করতে? আমরা কি পারব আমাদের হারানো সম্মানের সামান্য শীতলতা আনতে? আমরা কি পারব রাজনীতির নোংরা খেলার মাঠ থেকে বের হয়ে আসতে? আমরা কি পারব লেজুড় বৃত্তি থেকে মুক্ত থাকতে???

আমার আরও অনেক প্রশ্ন আছে যা ব্যাক্ত করতে গেলে শেষ হবেনা।

আমার মনে হয় বাঙালি যে হুজুগের মাতাল পাখি তা আবারও প্রমান হচ্ছে এই শাহবাগে!

আমি দেখতে পাচ্ছি আমার রাজনিতিমুক্ত আন্দলন আজ রাজনীতির নোংরা হাতের মুঠোই চলে যাচ্ছে।

আমি দেখতে পাচ্ছি আমার আন্দলন নাস্তিক বাদিদের আসরে পরিণত হচ্ছে।

কেন? কেন? কেন?

আমরা তো চাইনি এমন ভাবে কেউ এসে আমাদের অভিভাবক হউক, আমার মঞ্চকে রাজনীতির হিন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হউক, আন্দলন পকেটে চলে যাক এমন তো আমারা চাইনি।

তা হলে আজ কেন আমার আন্দলন ছাত্রলীগের মহা মিলনে পরিণত হবে?

আজ কেন আমার মঞ্চে এসে ক্ষমতাসীন দলের নেতা মাইক নিয়ে চিল্লা চিল্লি করবে?

আজ কেন আমার আন্দলন নিয়ে মানুষের মনে বিভেদ তৈরি হবে?

আমরা চেয়েছি আমার মান, আমার সম্মান মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের কালো মুখশধারি শৃগাল গুলার প্রাপ্য হিসেব।

আমার মঞ্চে কেন আজ রাজনীতির দাদা- বাবুরা?

যুদ্ধের অপরাধ শুধু জামায়াত একা করেছে বলে আমি কোথাও পড়িনি বা আমি দেখিনি। তখনকার সময় আরও অনেক রুই-কাতলা এই অপরাধ করেছিল যারা আজ মহা সম্মানের সহিত বড় বড় রাজনিতিক দলে আসন পেটে আছে! যারা আজ রাজনিতিক দলের রন্দ্রে রন্দ্রে ডুকে দল পরিচালনা দিচ্ছে।

আমরা চেয়েছি সকল যুদ্ধাপরাধীর যুগান্তকারী রায় যা আমার দেশের জনগণ মনে রাখবে আমরণ।

আমাদের দাবির মধ্যে ছিলনা জামায়াত এর বিরুদ্ধে বা জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে বা আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে! আমরা রাজপথে নেমেছি সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচার এর দাবী নিয়ে, কাউকে জামায় আদর দিয়ে কোলে বসিয়ে রাখার জন্য নয়।

জামায়াত কখনো অস্বীকার করতে পারবেনা তাদের দলে যুদ্ধাপরাধী নায়, তাই বলে বিএনপি বা আওয়ামীলীগের বগল তালি দেয়ার কোন সুযোগ নাই। কারন তাদের দলে এই হিন অপরাধীর সংখ্যা উল্লেখ যোগ্য।

তাহলে তারা কারা এই তরুণের মঞ্চে?

কোন সাহসে আমার মঞ্চে আওয়ামীলীগ আসে বাঁশি বাজাতে?

কোন সাহসে ছাত্রলীগ আসে মঞ্চ দখল করতে?

কোন সাহসে তারা নিজেদের রাজনৈতিক কালো নমুনা প্রদর্শন করছে?

এই মঞ্চ ছাত্রলীগের নয়, শিবিরের নয়, ছাত্রদলের নয় বা অন্য কোন দাদা-বাবুদের নয় যে তারা দখল করবে।

এই মঞ্চ আমজনতার।

তাহলে কি?

আমার সব আশা এখানেই কবর?

আগে পড়েছি আশাই জিবন, জিবনের শ্রী।

কিন্তু আজ আমার মনে একতাই কথা বারবার নাড়াচাড়া করছে তা হল আশা সেতো মরীচিকা।

তাই আমরা বাঙালি জাতি তরুণ রক্ত হুজুগের তালে গড্ডালিকা প্রবাহের টানে ভেসে চলেছি।

বিষয়: রাজনীতি

১০৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File