ভয়াবহ তথ্য সন্ত্রাসের যুগে আমরা-১
লিখেছেন লিখেছেন সূর্যদীঘল ০১ মার্চ, ২০১৩, ০৬:৫৬:০৮ সন্ধ্যা
আমি যখন খুব ছোট ছিলাম তখন আমার খুব প্রিয় লিখক জহুরীর একটি বই পড়েছিলাম "তথ্য সন্ত্রাস"। বইটা আমার খুব ভালো লেগেছিল! এই বইটি পড়ে জানতে পেরেছিলাম কিভাবে তথ্য সন্ত্রাসের মাধ্যমে পশ্চিমা মিডিয়া গুলো তাদের জাল বিছিয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে অপ প্রচার চালাচ্ছে পুরো পৃথিবী জুড়ে ।বর্তমানে আমাদের এই প্রিয় স্বদেশ ও তথ্য সন্ত্রাসী দের দ্বারা আক্রান্ত। একটি সমাজের মিডিয়া সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করে , আর আমরা নিয়ন্ত্রিত হই তাদের দ্বারা। আর এই সন্ত্রাসের টার্গেট প্রধানত ইসলাম আর মুসলমান। তাদের কারসাজির অনেক কিছুই আমরা জানি না। তারা তথ্যকে এমনভাবে বিকৃত করে যে সত্যকে মিথ্যা ভাবতে আমাদের কিছুতেই বাধেনা।
আর কথায় আছে- একটা মিথ্যা কথা কে ৩বার বললে তা নাকি সত্য লাগে! আমাদের ব্যাপারটা ও ঠিক তাই! আমরা কোন তথ্য শুনলে বিচার বিশ্লেষণ করার আগেই তা ছড়িয়ে দেই চারপাশের মানুষের মাঝে!নতুন প্রজন্ম এতো বাছ বিচারে অহেতুক সময় নষ্ট করেনা। নিজের চোখের সামনে যা আসে তাই বিশ্বাস করে নেই ।
তথ্য সন্ত্রাস কি? এই প্রশ্নের উত্তর আছে এই ২ টি শব্দতেই । তথ্য সন্ত্রাস হল এমন একটা আবহ সৃষ্টি করা যাতে সঠিক তথ্য প্রকাশিত হতে না পারে।এবং এর মাধ্যমে টার্গেট কে খুব সহজেই কাবু করে ফেলা যায়। আরও ভালো করে বললে বলা যায়- মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে প্রবল ঝড় তুলে প্রতিপক্ষ কে কাবু করা! আমাদের দেশে এখন এই কাজ টাই বেশি হচ্ছে! আমাদের মিডিয়া গুলো বিশেষ একটি মহলের বিশেষ অনেক গুলো ইচ্ছা বাস্তবায়নের প্রধান নিয়ামকের ভূমিকা পালন করছে! হাতে গোণা গুটি কয়েক মিডিয়া সত্য প্রচার করতে চাইলেও তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে কোণঠাসা করে ফেলা হচ্ছে। অনেকেই একটি ঘটনার বহুমুখী প্রবাহ দেখে আমাকে জিজ্ঞেস করেছে কোনটা বিশ্বাস যোগ্য!
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তথ্য সন্ত্রাসের নজির তুলনাবিহিন। জহুরি বেঁচে থাকলে হয়তো এটা নিয়ে আরও অনেক ভালো লিখা লিখতেন।
যাইহোক! উধাহরন স্বরূপ বলা যায়- আজকের বাইতুল মুকাররমে পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষকে । ২/৩ টা মিডিয়া ছাড়া সব মিডিয়াই প্রচার করলো- এটা নাকি জামাত শিবিরের বিক্ষোভ! বিক্ষোভের মূল কারণ যে রাসুল কে অপমান করা তার কোন হদিশ ই নেই সেই সংবাদে! মিডিয়ার মূল লক্ষই যেন জামাত শিবিরকে টার্গেট করা! যা আমার মতো সাধারণ মুসলমানদের বিস্মিত করেছে।
এই তথ্য সন্ত্রাসের শিকার আমরা এখন প্রতিদিন ই হচ্ছি! কারণ আমাদের integrity of character বোধ টা আর নেই। দেশের ক্ষমতার গদিতে যারা বসে থাকে তারা মিডিয়ার সম্রাটদের সাথে আতাত করে বিশেষ কোন লক্ষ নিয়ে কোন না কোন ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন।এরপর নানা রকমের বিচিত্র তথ্য বের করে নানান রঙ্গে রাঙ্গিয়ে বিশ্বে হৈ চৈ ফেলে বুঝানোর চেষ্টা করেন যে তাদের প্রচারিত তথ্যই সত্য।
সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অপসংস্কৃতি যেমন একটা আগ্রাসন তথ্য জগতে তথ্য বিকৃতি করাও এক প্রকারের সন্ত্রাস। আমাদের সবার ই স্বকীয়তা আছে। চাই সেটা ভালো হোক অথবা খারাপ। স্বকীয়তার প্রতি যাদের নিষ্ঠা আছে তারাই সফলকাম ।মন্দ কাজেও যে লোক সফল হয় তার কারণ হল সে তার কাজের প্রতি ততোই নিষ্ঠাবান ,ততোই আন্তরিক।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জহুরীর একটা লাইন না বললেই নয়- "মুসলমানদের বিরুদ্ধে পশ্চিমারা তথ্য সন্ত্রাসকে যখন চরিত্র হননের মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয় তার ২ টি রুপ থাকে। একটি হচ্ছে এই যে ,ইসলামের আকিদা বিশ্বাস , ইসলামের নবী ইসলামের ইতিহাস এবং এর ঐতিহ্য ও সভ্যতার বিরুদ্ধে বানোয়াট ও মিথ্যা তথ্য দ্বারা হামলা চালানো । ইসলামের শুরু থেকে এই একবিংশ শতাব্দীতেও তারা এক ই পদ্ধতি গ্রহন করে এসেছে। কখনো বই লিখে, কখনো পত্রিকায় নিবন্ধ লিখে, কখনো স্পঞ্জের তলায় আল্লাহর নাম লিখে, কখনো রাসুল কে ব্যাঙ্গ করে তারা মুসলমানদের আহত করে। এই প্রক্রিয়ায় মুসলমানরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে তারা বাঁধা পায়। যার কারনে আরেক টি পরোক্ষ পদ্ধতি বেছে নেই। এ জন্য ইসলাম মুসলমান নামধারি এক শ্রেণীর মুসলিম মেধাকে তারা এক কালীন বা মাসহারা ভিত্তিতে কিনে নেয় যারা আল্লাহ্ ও রাসুল বিরোধী প্রচারণা চালাবে।"
সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে আমাদের এই মাতৃভূমিতে আমরা এখন অনেক বড় তথ্য সন্ত্রাসের শিকার হয়েছি।আমরা নাস্তিকদের দ্বারা বারবার আক্রান্ত হচ্ছি যাদেরকে কিনে নিয়েছে সমাজের একদল সুবিধাবাদী এবং বর্তমানে তাদের নিরাপত্তার বিধান ও তারা করছে। এই অদৃশ্য সন্ত্রাসের থেকে উত্তরণের কি পথ তা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন ভয়াবহ তথ্য সন্ত্রাস থেকে। আজ এই পর্যন্তই......
বিষয়: রাজনীতি
২২৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন