যেসব কারনে শাহবাগের আন্দোলন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিলাম- ব্লগার ফারহানা শারমিন।
লিখেছেন লিখেছেন পুলসিরাত ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০১:৪৭:২৯ দুপুর
একেবারে শুরু থেকেই এই আন্দোলন কে ঘিরে ছিল নানা সন্দেহ, জল্পনা-কল্পনা। তারপর ও শুধু ৭১ এ মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারে ফাঁসীর দাবিতে প্রায় অন্ধ হয়ে গিয়ে একাত্মতা ঘোষণা করেছিলাম। পরিবার-পরিজন, বান্ধু-বান্ধবি, আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী, ফেসবুক-বন্ধু, ফেসবুক-গ্রুপ যেখানে যতটুকু একজন মেয়ে মানুষের পক্ষে সম্ভব ততটুকু করেছি। বাসা থেকে ২/১ জন গার্জিয়ানের নিষেধ উপেক্ষা করে শাহবাগে গিয়েছি। সব স্লোগানের সাথে তাল মিলিয়েছি।
মাযপথে এসে উপলদ্ধি করলাম এটি আসলে ই কি আন্দোলন হচ্ছে নাকি একটি নির্দিষ্ট দলের গোলামি করা হচ্ছে?
জানলাম আহবায়ক রংপুর মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, তার একটি স্ট্যাটাস এ নাকি জিয়াউর রাহমান কে রাজাকার বলেছেন। জিয়াউর রাহমান আদর্শিক বিচ্যুতি ছিল কোন সন্দেহ নেই। কর্নেল তাহের হত্যা, রাজাকারদের পুনর্বাসন, গোলাম আজম কে নাগরিকত্ব দেয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু তারপর ও একজন সেক্টর কমান্ডার কে এইভাবে হেয় করাটা জনমনে ইমরান সাহেবের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি তার শ্রদ্ধাবোধ কে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে? ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হওয়াটা এই আন্দোলনের প্রধান নেতা হয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে না কিন্তু জিয়াউর রাহমানের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি?
প্রথম যখন অনলাইন এক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক এই আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল আমি নিশ্চিত তারা কল্পনা করেনি এত জন-সমাগম ঘটে যাবে। কোন সন্দেহ নেই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং বিবেকের তারনায় সেখানে যারা জড়ো হয়েছিল তাদের কেউ ছিল হিন্দু, কেউ ছিল নাস্তিক, কেও ছিল সমাজকর্মী, কেউ ছিল সাংস্কৃতিক কর্মী, আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, শোলাকিয়া ঈদগাহ ইমাম সহ কিছু ধর্মপ্রান মুসলমান ইত্যাদি ইত্যাদি। এই বিশাল জনসমাগম দেখে বামপন্থিদের মাথা খারাপ হয়ে গেল। তারা ভাবতে শুরু করল এই সুযুগে বাম শক্তির একটা উত্থান ঘটিয়ে ফেলা যাবে। তাই তারা বঙ্গবন্ধু বাদ দিয়ে শুধু জয় বাংলা স্লোগানে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকল। এইবার আন্দোলন হয়ে গেল বাম জোটের দলীয় কর্মসূচী। মূল দাবির সাথে যোগ হল জামায়াত-শিবির সহ সকল ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে, ইসলামি ব্যাংক, দিগন্ত পত্রিকা ও টেলিভিশন, কোচিং, আমার দেশ এগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। দেশের উন্নয়ন, গনতন্ত্র ও দেশের আব্বন্তরিন শৃঙ্খলা বিরোধী এই কর্মসূচীকে বুদ্ধিজিবিরা বাকা চোখে দেখতে শুরু করল। টক শো তে বাম পন্থি নেতাদের কথা বার্তায় স্পষ্ট ইসলাম বিদ্দেশ এর একটা গন্ধ ছড়িয়ে দেয়া হল।
তারপর ও জনতা মূল ইস্যু ফাঁসীর দাবির কারনে গলা মিলিয়ে গেল।
পোস্ট টি কে আরও বড় করে পুনরায় পোস্ট করা হবে।
http://www.somewhereinblog.net/blog/farhanabd
বিষয়: বিবিধ
১৩৩২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন