১. জামাত নেতা কাদের মোল্লার রায় ২.জামাত-আওয়ামী লীগ-বিএনপির লাভ-ক্ষতি ৩. শাহবাগের মিলন মেলা
লিখেছেন লিখেছেন পুলসিরাত ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৮:০২:০১ রাত
জামাত নেতা কাদের মোল্লার রায় ঘোষনার পর জামাত-শিবিরের ব্যাপক শো-ডাউন দেখে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা কিছুটা টেনশনে আছে। জামাতের শীর্ষ স্থানীয় নেতা ও সারা দেশের প্রতিটি জেলার সভাপতি ও সেক্রেটারীসহ হাজার হাজার নেতা-কর্মী জেলে থাকা সত্বেও জামাত-শিবিরের সাহসী ভুমিকা দেখে সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে আম জনতার মনে একটা প্রশ্ন তৈরী হয়েছে যে আর যায় হোক এই দলটিকে বাংলার মাটি থেকে বিতাড়িত করা যাবে না। আগামীতে তারাই বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাড়াবে। কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করতে না পেরে ট্রাইবুন্যাল যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে। এই নিয়ে আওয়ামী লীগের কোন মাথা ব্যথা না থাকলেও বামপন্থীরা এই রায়কে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিতে অরাজকতা সৃষ্টির পায়তারা করে যাচ্ছে। আগামীতে আরো রায় আসবে। বিচারকদেরকে চাপের মধ্যে রাখার জন্য বামপনন্থীরা মাঠ দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। আর সরকারী দল ও মিডিয়ার কিছু টিভি চ্যানেলও পত্রিকা তাদের পেছনে মদদ দিচ্ছে। বিগত কয়েক দিনের ঘটনায় প্রধান রাজনৈতিক গুলোর লাভ-ক্ষতি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবেঃ
জামাত-শিবিরঃ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর থেকে জামাত-শিবিরের উপর নির্যাতন শুরু করে। সরকারী দল জামাতের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের গ্রেফতার করে দলকে পঙ্গু করতে চেয়েছিল। প্রথম দিকে কিছুটা চাপের মধ্য থাকলেও পরবর্তীতে নীচের সারীর নেতাদের যোগ্য নেত্বত্বে জামাত আস্তে আস্তে আবারও শক্ত অবস্থানে দাড়াতে সক্ষম হয়। হরতাল-মিটিং-মিছিল করে নেতাদেরকে জেল থেকে মুক্ত করতে বিভিন্ন সময় একক ভাবে আন্দোলন করে। এই আন্দোলন এখনো অব্যাহত আছে। আগামী রায় গুলো নিয়েও জামাত-শিবির আন্দোলন চালিয়ে যাবে। সরকারের বিরুদ্ধে তারা একক ভাবে লড়ে যাবে। তাদেরকে এখন কঠিন সময় পাড়ি দিতে হচ্ছে। আন্দোলন করতে গিয়ে নেতা-কর্মীরা নিহত হচ্ছে, অনেক কর্মী পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। প্রতিদিন নেতা-কর্মীদেরকে গ্রেফতার হতে হচ্ছে। যত বাধাই আসুক না কেন এখন জামাতকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
বিএনপিঃ
সরকারী দল শুধু জামাতকে কোনাঠাসা করতেই ব্যস্ত থাকেনি। সেই সাথে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকেও কিছুটা কাবু করতে সক্ষম হয়েছে। খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্ট এর বাড়ী ছাড়তে হয়েছে। খালেদা জিয়ার দুই ছেলে বিদেশে। বিমানবন্দর থেকে জিয়ার নাম তুলে ফেলা হয়েছে। চৌধুরী আলম ও ইলিয়াছকে ঘুম করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় অনেক নেতাকে জেলে আটক রাখা হয়েছে। মিটিং মিছিলে সরকার পুলিশ দিয়ে পেটাচ্ছে। এত কিছুর পরেও বিএনপি কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় অফিসে বসে মাঝে মধ্যে হুংকার দেয়। যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় নিয়ে বিএনপি নেতারা মুখে তালা লাগিয়েছে। জামাতের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার আশাংকায় তারা কিছুটা চিন্তিত।
আওয়ামী লীগঃ
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে জামাত-শিবির-বিএনপি নিধনের মিশন শুরু করে। বিরোধী শিবিরকে তারা কখনো ভাল চোখে দেখেনি। একের পর মামলা-হামলা করে বিরোধী শিবিরকে সব সময় চাপের মধ্য রাখার চেষ্টা করেছে। সেই মিশনে তারা কিছুটা সফল ও হয়েছে। অন্যদিকে দেশ চালাতে গিয়ে তারা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। শেয়ার মার্কেট কেলেংকারী, হলমার্ক, পদ্মাসেতু, ইউনিপে টু ইউ, টেন্ডারবাজী, চাদাবাজি, ধর্ষন ও হল দখল নিয়ে নিজ দলের কর্মীদের মধ্য মারামারির ঘটনা জনগন ভূলতে পারেনি। বাম নেতাদের নিয়ে জোট করার কারনে মাঝে মধ্য বামদের কাছে নতি শীকারও করে। শাহবাগে বামপন্থী ব্লগারদের উপস্থিতে শুরু হওয়া অনুষ্টানে তারা একাত্ম প্রকাশ করতে গেলে রোষানলে পড়ে। যুদ্ধাপরাধের মামলার রায়ের সাফল্য নিজেদের ঘরে রাখতে বামদের সাথে সম্পর্কের টানাপোড়ন চলছে।
আওয়ামী লীগ ভাল করেই জানে যে, জামাত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা সম্ভব নয়। কারন তারা এক সময় জামাতকে নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল। আর বিএনপিও ভাল করে জানে যে, জামাত ছাড়া আগামী নির্বাচনে জয়ী হওয়া কঠিন। আগামী ইলেকশনে জয়ী হতে না পারলে বিএনপিরও অস্থিত্ব নিয়ে টানাটানি শুরু হবে। এই অবস্থায় জামাতকে নিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপির রশি টানাটানির শেষ দৃশ্য কেমন হতে পারে দেশের জনগন দেখার অপেক্ষায় আছে--
বিষয়: বিবিধ
১১৯৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন