বিন লাদেনের হত্যাকারী আজ ভীষণ অর্থ কষ্টে
লিখেছেন লিখেছেন জাগতিক ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১০:২৭:৫০ সকাল
সিডনি : আল কায়দার শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যাকারী আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের নেভি সিল কমান্ডো সোমবার দীর্ঘ দিনের নীরবতা ভেঙ্গে মুখ খুললেন।
নিজের পরিচয় গোপন রেখে ওই কমান্ডো অস্ট্রেলিয়ান ম্যাগাজিন ‘এস্কোয়ার’কে একটি সাক্ষাতকারে ওই অভিযান নিয়ে কথা বলেছেন বলে খবর দিয়েছে ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’। সাক্ষাতকারে তিনি তার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বর্তমানে বেকার বেসামরিক নাগরিক হিসেবে ওই কর্মকর্তা এখন মারাত্মক আর্থিক সংকটে রয়েছেন।
সিল কমান্ডো বলেন, লাদেনকে বিভ্রান্ত মনে হয়েছিল। আমি যেমনটা ভেবেছিলাম বাস্তবে তিনি তার চেয়েও লম্বা।
সে রাতে তিনি লাদেনকে তিন তিনবার গুলি করেছিলেন বলে জানান।
সিল কমান্ডো বলেন, অ্যাবোটাবাদের ওই বাড়ির তিন তলায় তিনি লাদেনেকে দেখতে পান। ওই সময়ে লাদেন দাঁড়িয়েছিলেন এবং তার হাত ছিল সবচেয়ে ছোট স্ত্রীর কাঁধে।
কমান্ডো বলেন, আমি বুঝতে পারছিলাম না তার স্ত্রীর শরীরে কোন বিস্ফোরক বাঁধা রয়েছে কিনা কিংবা তারা উভয়ে আত্মঘাতী হন কিনা। এছাড়া লাদেনের আওতার মধ্যেই রয়েছে অস্ত্র। তাই তাকে আমার হুমকি মনে হয়েছিল। আমি তখনই তার মাথায় গুলি করি যেন তিনি নিজেকে উড়িয়ে দেয়ার কিংবা অস্ত্র হাতে পাওয়ার সুযোগ না পান।
তিনি বলেন, এর পরপরই আমি তার কপালে গুলি করি। তিনি তখন মেঝেতে পড়ে যান। এ সময়ে তাকে আমি আবারো গুলি করি। এরপর তিনি নিঃসার হয়ে পড়েন। এবং সঙ্গে সঙ্গেই তার মৃত্যু ঘটে।
এই সিল কমান্ডো বর্তমানে মারাত্মক আর্থিক সংকটে রয়েছেন। তিনি পেনশন পাচ্ছেন না, স্বাস্থ্য বীমার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত এবং তার পরিবারও নিরাপত্তা পাচ্ছে না।
ম্যাগাজিনে এই কমান্ডোর পরিচয় না দিয়ে ‘লাদেন হত্যাকারী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে এর আগে গত বছর ম্যাট বিসোনেট নামের অপর সিল কমান্ডো ‘নো ইজি ডে’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি লাদেন হত্যার কাহিনী তুলে ধরেন। তবে এতে ক্ষুব্ধ হন পেন্টাগণ কর্মকর্তারা। তারা বিসোনেটের বিরুদ্ধে গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগ আনেন।
উল্লেখ্য, অভিযান শেষে ওই সিল কমান্ডো লাদেন হত্যায় পরিচালিত অভিযানের সাফল্য বর্ণনা করেন এবং জানান এতে কোন সিল কমান্ডো কিংবা কর্মকর্তা হতাহত হয়নি।
কিন্তু ২০১২ সালের গ্রীস্মে এই কমান্ডো পাল্টা প্রতিশোধমূলক হামলার ভয়ে চাকরি থেকে অবসর নেন এবং সাধারণ নাগরিকের মতো জীবন যাপন শুরু করেন। তিনিও তার পরিবার নিয়ে আতংকে রয়েছেন।
এদিকে আমেরিকা যুক্তরাস্ট্রে সামরিক বাহিনীতে চাকরির বয়স অন্তত ২০ বছর না হলে কেউ পেনশনের উপযুক্ত হন না। সে হিসেবে ওই সিল কমান্ডো ১৬ বছর চাকরি করায় তিনি পেনশন পাচ্ছেন না।
তার স্ত্রী ক্ষোভ ঝরিয়ে বলেন, তিনি দেশের জন্য অনেক করেছেন। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তাকে আবর্জনায় ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
১৪৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন