চরমপত্র পাঠকারী কে এই ব্লগার ইমরান!

লিখেছেন লিখেছেন আমার পথ চলা ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১১:৪২:০১ সকাল

শাহবাগে গতকালের মহাসমাবেশের সভাপতি ও চরমপত্র পাঠকারী ব্লগার ইমরান কট্টর আওয়ামী লীগ সমর্থক। তিনি পেশায় চিকিত্সক এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন স্বাধীনতা চিকিত্সক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতা। শুধু তাই নয়, ইমরান সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ‘রাজাকার’ অভিহিত করে সংসদ ভবন সংলগ্ন জিয়া উদ্যানে অবস্থিত শহীদ জিয়ার মাজার নিয়েও কটাক্ষপূর্ণ ও আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। ব্লগ ও ফেসবুকে ইমরানের যাবতীয় লেখা ও স্ট্যাটাসে আওয়ামী লীগের পক্ষে এবং বিএনপি-জামায়াতের বিষোদ্গারে পূর্ণ। এ নিয়ে ব্লগারদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়াও দেখা গেছে।

সামহোয়ার ইন ব্লগে আহসান নামের এক ব্লগার তার ব্লগে লিখেছেন, ‘আজ ওখান (শাহবাগ) থেকে যে ঘোষণাপত্র পাঠ করেছে তার নাম ইমরান এইচ সরকার। সে ব্লগিং করে তবে পেশায় ডাক্তার। ইমরান আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্বাধীনতা চিকিত্সক পরিষদের (স্বাচিপ) সঙ্গে জড়িত। তার বিভিন্ন ব্লগ ও ফেসবুক প্রোফাইল দেখলে আপনারা সহজেই বুঝতে পারবেন, সে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে কতটা জড়িত এবং আওয়ামী লীগের একজন গোড়া সমর্থক।’

ইমরান তার ফেসবুক https://www.facebook.com/dr.imran.bd-এ জিয়াউর রহমানকে কটাক্ষ করে স্ট্যাটাস এ লিখেছে, 'জাতীয় সংসদ প্রাঙ্গণে রাজাকারের কবর রেখে এই পূজা আর কতদিন? এ সার্কাস আর দেখতাম চায় না প্রজন্ম...এই শালাদের কোনো নিশানা রাখা যাবে না এই বাংলায়।’

আবার ইমরান শেখ মুজিবুর রহমানের প্রশংসা করে লিখেছেন, ‘যে শ্রেণীরই হোক না কেন গর্ব করার মতো বাঙালির যা কিছু বিদ্যমান তার অন্যতম বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর ক্ষয় নেই।’

ব্লগার আহসান এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন—আমার কথা হলো-উনারা সবাই জাতীয় নেতা। তাদের অবদান নিশ্চয় রয়েছে। কাউকে হেয় করে এই ধরনের মন্তব্য যে করতে পারে, সে কীভাবে দলীয় লেজুরবৃত্তির বাইরে যেতে পারে?

তাহলে ধরে নিতে পারি-পেছন থেকে আওয়ামী লীগই এই আন্দোলনে কলকাঠি নাড়াচ্ছে! এখন আমরা কি ছাত্রলীগের সোনার ছেলেদের খুন-খারাবি-টেন্ডারবাজি-দখলবাজির কথা ভুলে যাব। দুঃশাসনে সারাদেশের মানুষ চাইছে একটা পরিবর্তন, তার কী কিছুই হবে না?

এদিকে কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে আন্দোলনকারীদের মহাসমাবেশে গতকালের ঘোষণা নিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের সাইট ও ব্লগে চলছে ব্যাপক আলোচনা। অনেক ব্লগার ও প্রতিবাদী যারা ৩ দিন থেকে শাহবাগ প্রাঙ্গণে গলা ফাটিয়ে প্রতিবাদ করেছে তারা ওই ঘোষণার পর থেকেই হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তাদের ক্ষোভ এটা কেন রাজনৈতিক মঞ্চ হলো? এমন তো কথা ছিল না।

বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও পঠিত প্রথম ব্লগ সামহোয়ার ইন ব্লগে আহসান আরও মন্তব্য করেছেন, আমরা যারা রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে শাহবাগ স্কয়ারের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং যারা গত তিনদিন ধরে খেয়ে না খেয়ে এই শাহবাগে পড়ে আছে, তারা আজ সত্যিই হতাশ! আমাদের আশঙ্কা—এই আন্দোলনের ফসল আওয়ামী লীগের ঘরেই যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের তো প্রত্যাশা ছিল-শুধু রাজাকারদের ফাঁসিই নয়, বরং এই বিজয় ধরে রাখতে পারলে এ তরুণরাই একটা নতুন বাংলাদেশ উপহার দেবে। এখানে বাংলাদেশ রাজনীতিকদের হাত বদল হবে।

তিনি তার ব্লগে হতাশার সঙ্গে লিখেছেন, শাহবাগের এ তারুণ্যের স্রোত ও সমাবেশে কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্বের বক্তব্য দেয়ারই কথা ছিল না। অথচ আজ এ ব্যাপক মহাসমাবেশে বক্তব্য দেয়—ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ। সঞ্চালনায় ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের একজন কর্মীকে দেখা গেলেও তার আশপাশে মঞ্চজুড়ে ও সামনে ছিল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। দলীয় নেতাদের মধ্যে ছিলেন-ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম, মহাজোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ছাত্র সংগঠন ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি বাপ্পাদিত্য বসু, মহাজোটের শরিক জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি হোসাইন আমহদ তাফসীর, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি প্রবীর রায় প্রমুখ। আর মঞ্চের সামনে বিশাল জায়গা দখল করে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মহানগর উত্তর-দক্ষিণের শত শত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

ব্লগার নাফিস লিখেছেন, ‘আমাদের তো প্রত্যাশা ছিল-শুধু রাজাকারদের ফাঁসিই নয়, বরং এই বিজয় ধরে রাখতে পারলে এ তরুণরাই একটা নতুন বাংলাদেশ উপহার দেবে। এখানে বাংলাদেশ রাজনীতিকদের হাত বদল হবে। কিন্তু এখানেও সেই গান্ধা রাজনীতি ঢুকল কীভাবে? সময় ছিল তরুণদের সামনে, নৌকা আর ধানের শীষের বিকল্প খুঁজে নেওয়ার...এ সুযোগকে আমরা হাতছাড়া করতে দিতে পারি না।’

এর উত্তরে কায়েস চৌধুরী মন্তব্য করেছেন, আমি চাই রাজাকারদের ফাঁসি হোক। গত ৩ দিন ধরে আমার ভূমিকা শুনলে আপনি নিজেই অবাক হবেন। কিন্তু জাতীয় নেতাদের নিয়ে যে ব্যক্তি এমন মন্তব্য করতে পারে এবং যে কিনা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় আছে-তার হাতে আমরা এত বড় দায়িত্ব দিলাম কেন? এটা তো রাজনৈতিক মঞ্চ হোক আমরা কি তা চেয়েছি? বরং রাজনীতির বলয় থেকে পুরো দেশকে উদ্ধার করার এটা একটা সুযোগ ছিল না কি?

Click this link

বিষয়: বিবিধ

১৭৩৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File