ঢাবিতে ছাত্রলীগ কর্তৃক শিবির সন্দেহে ঢাকা আলিয়ার ১০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে মারধর

লিখেছেন লিখেছেন আমার পথ চলা ১০ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:৫১:৩৭ দুপুর

এবার ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসানসহ ১০ ছাত্রলীগকর্মীকে শিবির ব্লেম দিয়ে তিন দফায় বেধম মারধর করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মীরা। এসময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়া হয়।

মঙ্গলবার গভীররাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, মুহসীন হলের গেস্টরুমে, ভিসি চত্বরে এবং মল চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। পরে ছাত্রলীগের নেতাদের হস্তক্ষেপে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঘুরতে আসেন। রাত দেড়টার দিকে তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসেন এবং খোশগল্প করতে থাকেন। এ সময় মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসানের অনুসারী ১০/১২জন কর্মী উদ্যানে ঢুকেন। তারা আলিয়ার ছাত্রলীগের কর্মীদের কোনো কথা ছাড়াই মারধর করতে থাকেন। মারধরের এক পর্যায়ে তারা আলিয়ার ছেলেদের কাছ থেকে মানিব্যাগ এবং মোবাইল কেড়ে নেয়।

আলিয়া মাদ্রাসার মামুন এবং তাজুল সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসানকে ফোন দিলে তাদের ওপর মারধরের পরিমাণ বেড়ে যায়। মুহসীন হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের মারধর করতে করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে নিয়ে আসে। পরে তারা মল চত্বরে নিয়ে যায় আলিয়ার ছাত্রলীগের কর্মীদের।

রাত আড়াইটার দিকে ভিসি চত্বরে আসেন আলিয়া মাদ্রাসার সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসান। তিনি এসে মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তাকেও মারধর করা হয়। পরে তাকে মল চত্বরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দ্বিতীয় দফায় মারধরের শিকার হন রাকিব হাসান। এ সময় রাকিব নিজেকে ছাত্রলীগের আলিয়া মাদ্রাসা শাখার সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিলেও রেহাই পাননি রাকিব। এ সময় তার কাছ থেকেও মোবাইল এবং মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় তারা।

রাত ৩টার দিকে রাকিবকে মুহসীন হলে নিয়ে যাওয়া হয়। মুহসীন হলের সামনে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হলের ভিতর থেকে ৩০/৪০জন ছাত্রলীগের কর্মী রাকিবের দিকে তৃতীয় বারের মতো তেড়ে আসে। এরপর শুরু হয় মারধর। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ-সভাপতি আবু হানিফ মারধরকারীদের নিবৃত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে হল শাখার সভাপতি মিঠুর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। মিঠু রাকিবসহ তার কর্মীদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়ার পর তারা হলে ফিরে যায়।

এ বিষয়ে আলিয়া মাদ্রাসা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসান নতুন বার্তাকে বলেন, “রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা আলিয়া ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘুরতে গেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলের কিছু নেতাকর্মী তাদের মারধর করে মোবাইল ফোন এবং মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। ঘটনাটি শুনতে পেয়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে যাই এবং বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করি। কিন্তু তারা কোনো কথা না বলেই আমার ওপর চড়াও হয়।”

তিনি আরো বলেন, “পরে আমাকে মল চত্বরে নিয়ে যাওয়া হয়। দ্বিতীয়বারের মতো তারা আমার ওপর চড়াও হয়। আমার পরিচয় দেয়ার পরও রেহাই পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে তারা আমাকে মুহসীন হলে নিয়ে যায়। সেখানে তৃতীয়বারের মতো তারা আমাকে মারধর করে। কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হানিফ ভাই আমাকে উদ্ধার করতে গেলে ব্যর্থ হন তিনি। পরে হল শাখার সভাপতি মিঠু ভাইয়ের হস্তক্ষেপে আমরা মুক্তি পাই। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে মাদ্রাসার হলে আসি।”

কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আবু হানিফ নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, “মুহসীন হলের সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোবাইল ছিনতাই করতে যায়। তাদের সঙ্গে আলিয়ার ছাত্রলীগের কর্মীদের কথা কাটাকাটি হয় এবং তাদের মোবাইল এবং মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ১০/১২জনকে হলে নিয়ে এসেও বেধম মারধর করে।”

হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসানের মোবাইল ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি। তার ফোনটি সকাল থেকেই বন্ধ ছিল।

হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মিঠু বলেন, “হলের সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মীরা হলে ঝামেলা করেছিল। খবরটি শুনে আমি হলের নিচে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।”

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদি হাসান বলেন, “তিনি এ বিষয়ে বিশেষ কিছুই জানেন না।”

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর শরিফ নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, “আমি ঘটনাটি শুনেছি। পরে বিস্তারিত জেনে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এএম আমজাদ নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, “ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আলিয়া মাদ্রাসার ছেলেদের শিবির সন্দেহে মারধর করেছে। পরে বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে।”

Click this link

বিষয়: বিবিধ

১০৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File