মুসলমান - ইহুদী - খৃষ্টান আমরা সবাই একই ত্রাতার জন্য অপেক্ষা করছি ..But there is a catch!

লিখেছেন লিখেছেন পটাশিয়াম নাইট্রেট ২৬ অক্টোবর, ২০১৮, ০৯:২৭:২৮ সকাল

মুসলমান - ইহুদী - খৃষ্টান সবাই একজন মহা নায়কের জন্য এবং একজন মহাভিলেনের জন্য অপেক্ষা করছে ।

ইমাম মাহদী এবং দাজ্জাল সংক্রান্ত হাদীসগুলো যদি জেনে থাকেন এবং খৃষ্টান ধর্মের চশমায় বিষয়টা দেখেন তবে আপনার মনে হবে আপনি ঐ হাদিসগুলুর প্রতিবিম্বই দেখছেন। একই কথা ইহূদীদের বেলায় ও। ঐ সময়কার লক্ষণ, প্রত্যেকটি ঘটনা এবং সময়-কাল একদম (১০০%) এক । গড়মিলটা হচ্ছে আমরা যাকে নায়ক বলছি ওদের চোখে তিনি ভিলেন এবং আমরা যাকে ভিলেন বলছি তারা সেই মহানয়কের জন্য হাজার বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

মুসলমান বিশ্বাস: মহাযুদ্ধের শেষ দিকে ইমাম মাহদী আসবেন এবং কোনঠাসা মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ করে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে মুসলমানদের বিজয়ী করবেন। এরপর দাজ্জাল আসলে ঈসা ( আ : ) আসবেন এবং ঈমাম মাহদীর বাহিনীর সাথে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দাজ্জালের বিরুদ্ধে লড়ে দাজ্জালকে হত্যা করবেন । ঘটনাগুলু প্রধানত ঘটবে মক্কা, মদিনা, শাম (সিরিয়া, ইরাক, ফিলিস্তিন, জেরুজালেম ঘিরেই)। মুসলমান বিশ্বাসে ঘটনাগুলু কোনটার পর কোনটা ঘটবে তা পরিস্কার। কখন ঘটবে সেটা বিরাট তর্কের বিষয়। ভবিষ্যতের জ্ঞান মানুষের নেই। তাই অনেকে এ বিষয়ে খুবই সতর্ক। আমার মনে হয় এটা অতিরিক্ত সতর্কতা। কারণ চলমান ভূ-রাজনীতির দিকে দৃষ্টিপাত করলে এবং এ সংক্রান্ত যে কয়টি সহীহ হাদীস রয়েছে সেগুলু প্যারালালী রাখলেই একটা ষ্পষ্ট ধারণা পাওয়া সম্ভব। এ বিষয়ে গবেষণা করছেন এমন ওলামাদের সংখ্যা খুবই কম।

সহীহ্‌ হাদীস অনুযায়ী দাজ্জাল আসার প্রায় ৭ বছর পূর্বে ইমাম-মাহদী আত্মপ্রকাশ করবেন। বোখারীর একটি হাদিস অনুযায়ী মহাযুদ্ধের মাঝে মুসলমানরা যখন কোনঠাসা এমন সময় একদল আলেম ইমাম মাহদীকে কাবা-শরীফ তাওয়াফ করা অবস্হায় চিনে ফেলবে এবং জোড় করে বাইয়্যাৎ গ্রহণ করবে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সিরিয়া থেকে মুসলমান সেনাবাহিনীই (!) প্রথম ইমাম মাহদীকে হত্যার জন্য মক্কাভিমূখে রওয়ানা হবে এবং পথে বাইদা নামক স্হানে ভূমি-ধ্বসে গোটা সেনাবাহিনীই ধ্বংস হবে। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লেই মুলত ইমাম মাহদীর আগমনের বিষয়টা ঈমানদার কাছে পরিস্কার হবে।

একটু ভাবুনতো! এত যুদ্ধের পর ও সিরিয়ায় বাশার আল আসাদ শিয়াদের সহায়তায়) ক্ষমতায় টিকে আছে। উল্লেখ্য বাশার আল আসাদকে অনেক ওলামরা হাদিসে বর্ণিত সেই সুফিয়ানী রাজা মনে করে, যার সেনাবাহিনী ইমাম মাহদীর বিরুদ্ধে সেনা পাঠাবে। খুব সহজেই অনুমেয় ইমাম মাহদীকে মুসলমানদের বিশাল অংশ মানবেনা বা চিনতে পারবেনা। কারণ শুধু সিরিয়া নয়, সিরিয়া- ইরান ব্লকের অনেক মুসলমান দেশই ইমাম মাহদীর বিপক্ষে থাকবে,। যেমন : ইরান, বাহরাইন, আরব আমিরাত ইত্যাদি।

সৌদি আরবের কথা ভাবছেন নিশ্চয়! হাদিস অনুযায়ী সৌদির বাদশার মৃত্য়ুর পর ৩ রাজপুত্রের মাঝে প্রবল ক্ষমতার দ্বন্দে চলতে থাকবে। আন্তর্জাতিক বিশ্বে মক্কা-মদিনা তথা সৌদি আরব গুরুত্ব হারাবে। দীর্ঘদিন যুদ্ধের ধকলে সৌদি আরব বিভিন্ন অঞ্চলে ভাগ হয়ে পড়বে। যারা সাম্প্রতিক সৌদি আরবের খবর রাখছেন তারা নিশ্চয় এতক্ষণে আঁতকে উঠেছেন! ৮২ বছর বয়স্ক সৌদি বাদশাহ্‌ সালমান যায়-যায় অবস্হা। তিনি সকল নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী করেছেন। মোহাম্মদ বিন সালমান অনেক সৌদি রাজপূত্রদের বন্দী করেছেন, অনেককে হত্যা করেছেন। এখন বর্তমান বাদশাহর মৃত্য়ুর পর হাদিসে বর্ণিত ক্ষমতার দ্বন্দ দেখা দেওয়াটা খুব স্বভাবিক নয় কি ?

খৃষ্টান বিশ্বাস : আর্মাগেডন (মহাযুদ্ধ), এন্টিক্রাইস্ট নিয়ে গুগল বা ইউটিউবে সার্চ করে দেখতে পারেন। এ বিষয়ে প্রচুর গবেষণা হচ্ছে। খৃষ্টানরা বিশ্বাস করে এন্টিক্রাইস্ট শান্তির বার্তা নিয়ে ক্রাইস্ট পরিচয়ে এসে মানুষকে বিভ্রান্ত করবে এবং যিশু এসে (Second coming of Jesus) পবিত্র আত্মা (ভাল খ্রিষ্টানদের) স্বর্গে তুলে নিয়ে (The rapture)যাবে। ইমাম মাহদী যখন লাইম- লাইটে চলে আসবেন তখন তিনি খৃষ্টানদের চোখে এন্টিক্রাইষ্ট। খৃষ্টানরা অপেক্ষা করবে ক্রটাইষ্ট / যিশু / ঈসা ( আ: ) জন্য। ইমাম মাহদী ( আ : ) আসার সাত বছর পর যেরুজালেমে যখন দাজ্জাল আসবে তখন তারা দাজ্জালকেই যিশু মনে করে বিভ্রান্ত হবে।

ইহুদী বিশ্বাস : ইহুদীরা বিশ্বাস করে তাদের ত্রাতা মাসিয়াখের আগমন খুবই সন্নীকটে। উল্লেখ্য তাদের মাসিয়াখের বৈশিষ্ট্য এবং হাদীসের বর্ণিত দাজ্জালের বৈশিষ্ট একদম এক । সে হযরত দাউদ (আHappy এর বংশের একজন। সে এসে মহাযুদ্ধের মাধ্যমে ফলস প্রফেট (ইমাম মাহদীকে )বধ করবে । প্যালেষ্টাইন, জর্ডান, মিশর, সিরিয়া, ইরাক অঞ্চলে গ্রেটার ঈসরাঈল প্রতিষ্ঠা করবে। জেরুজালেম হবে গ্রেটার ঈসরাঈল এর রাজধানী । যা কিছুদিন আগে ডোনাল্ড ট্টাম্প ঘোযণা দিয়েছে। আষ্ট্রেলিয়া সহ বেশ কয়েকটি ইউরিপিয়ান দেশ আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মাসিয়াখের আবির্ভাবের জন্য বেশ কিছু শর্ত রয়েছে, যা প্রায় সম্পূর্ণ হয়েছে। মাসিয়াখ আসার আগ থেকেই কোরবানী চালু করতে হবে যেখানে হযরত ইবরাহীম ( আHappy পূত্র ঈসমাঈলকে ( আHappy কোরবানী দেয়ার জন্য গলায় ছুরি চালিয়েছিলেন। কোরবানী দিতে হবে একদম নিখুঁত এবং লাল রঙের বাছুর ( রেড হফার) যা অত্যন্ত বিরল। টেম্পল ইনষ্টিটিউট ঈসরাঈলে শুধু এই উদ্দেশ্যে রেড হফার এর খামার প্রতিষ্ঠা করেছে। উল্লেখ্য গত ২৮ আগষ্ট ২০১৮ তে প্রায় দুই হাজার পর নিখুঁত লাল বাছুর (Red Heifer) এর জম্ম হয়েছে জেরুজালেমে যা টেম্পল ইনষ্টিটিউটভাবে ঘোষণা দিয়েছে। এটাকে আরো কিছুদিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর চূড়ান্ত ঘোষণা করা হবে।

তাওরাত অনুযায়ী টেম্পলের প্রিষ্টদের পোষাক আসবাব, এমনকি স্পেশাল সুগন্ধী ( ধুপ), যা হারিয়ে যাওয়া একটি গুল্ম থেকে তৈরি তাও রেডি। বায়োলজিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে সে গুল্মটি আবার উৎপাদন হচ্ছে, যা শুধু টেম্পল ইনষ্টিটিউটের হাতেই রয়েছে।

সমস্যা শুধু এক যায়গায় আটকে আছে, আল-আকসা সংলগ্ন কোরবানীর ঐ যায়গাটি মুসলমানদের নিয়ন্ত্রণে। সবচাইতে বড় এবং কঠীন শর্তটি হল থার্ড টেম্পল প্রতিষ্ঠা করতে হবে যেখানে কিং ডেভিড ( দাউদ আHappy এবং পরবর্তিতে কিং সলোমান ( সোলাইমান আHappy এর টেম্পল (উপাসনালয়) ছিল। বেশীর ভাগ ইহুদীরা মনে করে আল -আকসা মসজীদ সংলগ্ন "ডোম অব রক" যা আল আকসা মসজীদের মুল কাঠামোর অংশ, তা কিং ডেভিড ও কিং সলোমান টেম্পল এর উপর বানানো হয়েছে। আল - আকসা কমপ্লেক্স এর পশ্চিম দেয়ালকে তারা মুল টেম্পল এর ধ্বংসাবশেষ মনে করে সেখানে প্রার্থনা করে মাসিয়াখের আগমনের জন্য। তারা বিশ্বাস করে অচিরেই আল-আকসা মসজীদ ভেঙ্গে থার্ড টেম্পল নির্মান করলেই তাদের মাসিয়াখ আসবে।

আরেক দল ইহুদী মনে করে টেম্পলটি ছিল বর্তমান আল-আকসা কমপ্লেক্স থেকে কয়েক শ মিটার দূরে। কিন্তু সেখানে টেম্পল তৈরি করতে গেলেও মসজিদুল আকসা ভাংতে হবে বা আংশিক ভাবে ভাংতে হবে। অনেকে মনে করছেন এই থার্ড টেম্পল নির্মান এবং মসজীদুল আকসা ভাঙ্গা নিয়েই আর্মাগেডন বা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে যার এক পর্যায়ে ইমাম মাহদী আসবেন।

এর পর আসবে দাজ্জাল (মুসলিম বিশ্বাসে), ইহুদীদের কাংখিত মাসিয়াখ, খৃষ্টানদের কিছু মনে করবে তাদের মাসিয়া্‌ঃ এবং অন্যরা মন করবে সে ফলস

ইহুদীরা বিশ্বাস করে ঈসা(আHappy সহসাই দুনিয়াতে আসবেন। তার বিশ্বাস করে মুসলমানরা আর খৃষ্টানরা যে ঈসাকে বিশ্বাস করে সে ছিল ফলস্‌ মাসিহা। তাওরাতে বর্ণিত ঈসা এখনো দুনিয়াতে আসেননি। এবং ততদিন পর্যন্ত আসবেনা যতদিন জেরুজালেমে আল-আকসা মসজীদের স্হানে কিং অব সলোমানের টেম্পল পূণ:নির্মান না হচ্ছে।

বি: দ্র : - বিষয়টা নিয়ে তিনটি প্রধান ধর্মের তুলনামূলক বিশ্বাস নিয়ে পড়া এবং লেকচার শুনা আমার প্রিয় কাজ গুলোর একটি এবং সেটা অনেক দিনের । ইদানিং বিষয়টা মাথার মধ্যে কিলবিল করছিল তাই লিখে সারমর্মের মত করে লিখে মাথাটা খালি করলাম। কেউ সিরিয়াসলী নেবেননা।

বিষয়: বিবিধ

১৫৬৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

386059
২৬ অক্টোবর ২০১৮ দুপুর ০৩:৪৪
হতভাগা লিখেছেন : দাব্বাতুল আরদ কখন আসবে নাকি এসে গেছে ? সূরা নামল এর শেষের দিকে আছে।
২৬ অক্টোবর ২০১৮ রাত ১১:২৫
318041
পটাশিয়াম নাইট্রেট লিখেছেন : ওটা ঈসা ( আ: ) মৃত্যুর পর। পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়ের পর সম্ভবত।
386064
২৬ অক্টোবর ২০১৮ সন্ধ্যা ০৭:২২
শেখের পোলা লিখেছেন : সবকিছু বোধ হয় হঠাৎ করেই হবে না। ধীরে ধীরে হবে। আর তার শুরু হয়ে গেছে। তাই সাবধান। ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।
২৬ অক্টোবর ২০১৮ রাত ১১:২৭
318042
পটাশিয়াম নাইট্রেট লিখেছেন : আমি মনে করছি ইমাম মাহদীর আবির্ভাব একেবারেই কাছে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File