সুপার ফাইভে খেলছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন
লিখেছেন লিখেছেন পটাশিয়াম নাইট্রেট ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০২:৫১:১৮ রাত
সারা পৃথিবী যেখানে আওয়ামিলীগের সীমাহীন অন্যায় আর অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার সেখানে একমাত্র ভারতই ভিন্ন পথে হাঁটছে। ভারতের আশ্বাসের ওপর ভর করেই শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ মানুষের মতামতকে তোয়াক্কা না করে সীমাহীন বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে। বুড়ো-আঙ্গুল দেখিয়েছে জাতিসংঘ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ও । দিনে দিনে বড়-বড় শক্তিগুলু বাংলাদেশ সংকটে জড়িয়ে পড়ছে এবং সংকট ও ঘনিভূত হচ্ছে।
কাদের মোল্লার হত্যাকে কেন্দ্র করে আগ বাড়িয়ে পাকিস্তানের সাথে ঝগড়া বাঁধিয়ে বাংলাদেশের কি লাভ হলো সেটা আওয়ামিলীগাররাই ভাল বলতে পারবে। কাদের মোল্লার মৃত্যুতে শুধু পাকিস্তান নয়, সারা বিশ্বই নিন্দা করেছে। তাহলে শুধু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিষেদাগার করে ওরা কার স্বার্থ রক্ষা করার চেষ্টা করছে? বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্তের প্রতি যদি কখনো হুমকি আসে সেটা আসবে ভারতের দিক থেকেই, পাকিস্তানের দিক থেকে নয়। পাকিস্তানের ভৌগলিক অবস্হান বিবেচনা করে বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য পাকিস্তান চাইলে ও কখনো কার্যকর হুমকি হয়ে উঠতে পারবেনা।
কুটনীতিক শিষ্ঠাচারের মাথা খেয়ে ভারত যেভাবে নগ্নভাবে বাংলাদেশে আওয়ামিলীগকে ক্ষমতায় রাখতে চাচ্ছে তাতে আন্তর্জাতিক বোদ্ধামহলের টনকে নড়েছে। অনেকে বলছেন আমেরিকায় দেবযানি খোবড়াগাড়কে নিয়ে যে ঘটনা ঘটলো তা বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের কুটনৈতিক টানাপোড়নের একটা দৃশ্যমান আইটেম মাত্র।
চীন কিছুদিন আগে স্পষ্টই বলেছে "চীন একটি স্বাধীন বাংলাদেশ দেখতে চায়" আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চীন সাধারণত আগ বাড়িয়ে নাক গলাতে যায়না। তাই চীনের এ ধরণের মন্তব্য খুবই তাৎপর্যবহ। দুই দিন আগে লাদাখ সীমান্তে ভারতীয় ভূ-খন্ডের বেশ ভেতরে ঢুকে চীনা বাহিনী তাবু গেঁড়ে এখনো অবস্হান করছে। এটা ভারতের উপর চীনের একটা মনস্তাত্বিক চাপ। এ সময়ে ভারতের বিরুদ্ধে চীনের এ ধরণের আচরণ খুবই তাৎপর্যবহ। আগামি কয়েকদিনের মধ্যে বাংলাদেশে চীনের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনীধি দল আসছেন বলে শোনা যাচ্ছে। বাংলাদেশে যে খেলাটা হচ্ছে তাতে বাংলাদেশ একটা খেলার মাঠ মাত্র। ভারতই সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। তাই ধকল টা বাংলাদেশের সাথে ভারত কে ও সামলাতে হবে। এখন পাকিস্তান যদি সীমান্তে কড়া কোন ম্যাসেজ ভারতকে দেয় তাহলে অবাক হবোনা।
এখন প্রশ্ন আওয়ামিলীগকে সাপোর্ট করতে গিয়ে ভারত কেন এতটা রিস্ক নিচ্ছে বা অন্যরা ও কেনইবা এত মাথা ঘামাচ্ছে। এটা অনেক ব্যাপক একটা বিষয়। তবে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পয়েন্ট হচ্ছে :
ভবিষ্যত সাম্ভাব্য চীন-ভারত যুদ্ধের সময় বাংলাদেশে যদি ভারতের একান্ত নতজানু কোন সরকার না থাকে, চীন যুদ্ধের প্রথম ধাক্কাতেই শিলিগুঁড়ি করিডোরের "চিকেন নেক" চেপে ধরবে। তাতে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে সামরিক সরন্জাম পরিবহন করতে না পারলে ভারত পূর্ব-পশ্চিমে দ্বিখন্ডিত হয়ে পড়বে যুদ্ধের প্রথম দিনেই। বাংলাদেশে যদি একটা নিউট্রাল সরকার ক্ষমতায় থাকে তবে ভারতকে সে অনুমতি দেবেনা। কারন সে সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশ নিশ্চয় চীনের সামরিক হামলার মুখে পড়তে চাইবেনা! তাই ভারতের বাংলাদেশে আওয়ামিলীগের মত একটা নতজানু সরকার দরকার। তাছাড়া বাংলাদেশে ভারত বিরোধি কোন সরকার (জামায়াত প্রভাবিত) দীর্ঘদীন ক্ষমতায় থাকলে সেভেন সিস্টার্স রাজ্যগুলুতে যদি কখনো সহায়তা দেয়া শুরু করে তবে ভারতের অখন্ডতা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
ভারত মহাসাগরে নজরদারি বা ভবিষ্যৎ কোন সামরিক প্রয়োজনে আমেরিকার জন্য দিয়াগো গর্সিয়া এখন আর পর্যাপ্ত নয়। তাছাড়া মায়ানমার চীনের খুবই ঘনিষ্ট হবার সুবাদে বন্গোপসাগরের অনেক গভীর পর্যন্ত চীন যে কোন সময় প্রভাব-বিস্তার করতে পারবে। এ সব জটিল হিসেব নিকেশে চট্রগ্রাম বন্দর এখন সবার চোখে গরীবের সুন্দরী বউ ! যুক্তরাষ্ট্র কখনো চট্রগ্রাম বন্দর বা নিঝুম-দ্বীপে সামরিক ঘাঁটি করার সুযোগ পাক বা না পাক, এসবকে তো আর ভারত বা চীনের হাতে তুলে দিতে পারেনা! সেজন্যই যুক্তরাষ্ট্র খেলার বাহিরে থাকবেনা, থাকছেনা।
একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় থাকলেই কেবল পরাশক্তিগুলি বাংলাদেশের দিকে কু-নজরে তাকাবেনা। পানি যখন ঘোলা হবে, তখন যে যার মত সুযোগ নিতে আসবেই। উল্লেখ্য বর্তমান অবস্হায় চীন বা যুক্তরাষ্ট্র কেউ বাংলাদেশকে ভালবেসে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি, ওরা নাক গলাচ্ছে নিজেদের স্বার্থের জন্য যতটুকু দরকার, ততটুকুই।
বিষয়: বিবিধ
২১৬৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন