হেফাযতের অহংকার নাকি অদূরদর্শীতা !
লিখেছেন লিখেছেন পটাশিয়াম নাইট্রেট ১২ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৩:৩০:১৭ রাত
ইসলামকে ভালবাসে কিন্তু রাজনীতিতে ইসলামকে মানতে চাননা এমন লোকের সংখ্যা বাংলাদেশে অনেক। জামায়াত-শিবির ইসলামের নামে রাজনীতি করে এমন অপবাদে অন্যান্যদের মত সাম্প্রতিক লাইম লাইটে আসা হেফাযতে ইসলাম ও জামায়াত-শিবিরকে ঐতিহাসিকভাবে ঘৃণা করতো , অপবাদ দিত এবং ভোটটা ও দিত নৌকায়। নৌকা-ওয়ালারা ও ভালবাসতো ঐ হুযুরদের। আওয়ামি পরিবারেরে বিয়ে-শাদী বা মিলাদে-ক্ষৎনায় ঐ হুযুররাই দাওয়াত পেতেন। আওয়ামি নিয়ন্ত্রীত মসজীদ-মাদ্রাসায় মূয়াজ্জীন বা ইমাম পদে ঊনারা ছাড়া আলিয়া মাদ্রাসার হুযুরদের কোন স্হানই ছিলনা। শুধু তাই নয় ! ছেলেকে আরবী-শিক্ষিত করতে চাইলে আওয়ামিলীগাররা ছেলেকে আলীয়া মাদ্রাসায় দিতেন না শিবির হয়ে যাবার ভয়ে ! দিতেন ঐ খারেজীদের (ওদের ভাষায়) মাদ্রাসায়। কিন্তু সে বেহুলা-লক্ষিন্দরের বাসর এখন সর্পের ছোবলে খান্খান হয়ে গেছে।
যেইমাত্র মসজিদ-মাদ্রাসা আর জিকীর-আজকারের গন্ডির বাহিরে ঐ হুযূররা কথা বলতে লাগলো আওয়ামিলীগ প্রমাদ গুনলো। ওদের তো এই বিপ্লবী ইসলামকেই যত ভয়! তাই অপ্রস্তুত এবং অদূরদর্শী হেফাযতকে অংকূরেই ফ্লাশ আউট করা হলো (আওয়ামিলীগের ভাষায় টয়লেটের ময়লার মত)। হেফাযত সেই যে ঘরে ঢুকলো আর মাথা বের করার শক্তি পেলনা। অথচ গণমানূষ হেফাযতের আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছিল। বি এন পি, জামায়াত এবং হেফাযত সবার একটা কমন গ্রাউন্ড ছিল। কিন্তু হেফাযত কাঁধে-কাঁধ মেলাতো চাইলোনা রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্টতার তকমা লেগে যাবে বলে। জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা ওদের বুকে টেনে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু জানিনা কোন অহমিকায় ওরা জামায়াতকে অচ্ছূত মনে করলো!
কাদের মোল্লার ফাঁসির নাটক যে ১০০% মিথ্যার উপর চলছে তাতে কি হেফাযত নেতাদের কোন সন্দেহ আছে? কাদের মোল্লাকে পছন্দ করেন না , ভাল কথা! তাই বলে এতবড় অন্যায়ের বিপক্ষে একটা শব্দ উচ্চারণের ক্ষমতা আল্লাহ্ আপনাদের দিলেন না?
শাপলা চত্বরে সরকারের সীমাহীন বাঁধা উপেক্ষা করে লক্ষ-লক্ষ লোকের সমাবেশ করতে পারলেন। মাত্র ক'মাসের ব্যবধানে আপনাদের ঘরের ভেতর (চট্রগ্রামে) সরকারের বাঁধায় সমাবেশ করার মুরোদ হারিয়ে ফেল্লেন? ডেকে বসলেন হরতাল, যা বাংলাদেশে এখন দূর্বলের একমাত্র অস্ত্র। অথচ পরিস্হিতি এরকম হবার কথা ছিলন! অন্তত: চট্রগ্রামে তো নয়-ই ! একমাত্র আপনারাই ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত এমন চিন্তা-ভাবনা থেকে বের না হয়ে আসতে পারলে খুব সহসাই হারিয়ে যাবেন।
আপনাদের নিয়ে সাম্প্রতিক বাংলাদেশে যা ঘটেছে তা একটা হাইপ। যতটা না আপনাদেরকে ভালবেশে মানুষ সাড়া দিয়েছে তার চাইতে বেশি সাড়া দিয়েছে আওয়ামিলীগকে ঘৃণা করে। আওয়ামিলীগের বিরুদ্ধে মানুষ একটা শক্তিশালী এবং সম্ভাবনাময় প্লাটফর্ম খুঁজছিল। তা হয়তো মানুষ আপনাদের মাঝে ঐ সময় খুঁজে পেয়েছিল। কিন্তু আপনারা মানুষের পাল্স বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন।
আপনারা সরকারের বিরুদ্ধে এখনো আন্দোলন করছেন, ভাল কথা! কিন্তু কর্মসূচীগুলা এমনভাবে দিচ্ছেন যাতে জামায়াত বা বি এন পির কর্মসূচীর সাথে মিলে না যায়। অথচ কর্ম-সূচীগুলা একই সাথে হলে সরকারের উপর অনেক বেশি চাপ পড়তোনা?
আজ হোক, কাল হোক রাজনীতে আপনারা আসবেন। অভিষেক কিন্তু করে ফেলেছেন! তাহলে কেন জ্বলন্ত রাজনৈতিক অবিচারগুলুর বিরুদ্ধে কথা বলছেন না? কেন অন্যান্য ইসলামী দলগলার সাথে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন?
হামবড়া ভাব এবংঅদূরদর্শীতা কখনোই কারো জন্য কল্যান বয়ে আনেনি।
বিষয়: বিবিধ
১১০৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন