রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবিদের চিন্তার সংকট
লিখেছেন লিখেছেন থার্ড পারসন ০২ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:৫৪:৫২ রাত
আমাদের দেশের রাজনীতিবিদ এবং তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের চিন্তার সংকট প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শাহবাগ আন্দোলনের ঢেউ খেলা শুরু হবার পর বাংলাদেশের অনেক সাংবাদিক,বুদ্ধিজীবি,শিক্ষাবিদ,কলামিষ্ট,লেখক,কবি উপন্যাসিক,ক্রীড়াবিদ,ডাক্তার,পেশাজীবি সহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা নিজেদের অবস্থানের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারেননি। তার হয়ত চিন্তা করলেন এই বুঝি বাংলাদেশ বদলে গেল। ওঁনারা শাহবাগকে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের প্রতিচ্ছবি মনে করলেন। দূর্ভাগ্য এ জাতির যে, চিন্তাশীল, জাতির বিবেক বলে আমরা যাদের জানতাম বা মিডিয়া যাদের ফলাও করে টকশোতে দাওয়াত দেন, তারা আগামী একমাসের চিন্তাশক্তিও বোধ হয় রাখেননা। এসব চিন্তাশীলরা সত্যিকারার্থে জনগণের মৌলিক চিন্তার প্রতি অবজ্ঞা করেন অথবা সাধারণ মানুষের ভাষা বোঝেন না। টকশোও দু'চারটি ফোন আসলে তারা মনে করেন বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষ বুঝি তার কথা শুনছে। কতগুলো তরুণ তরুণীর অনায্য দাবীর ফাঁদে ধরা খেয়ে গেলেন। অতএব যা হবার তাই হলো। শাহবাগী ব্লগারদের ধর্ম অবমাননার খবর বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হবার পর ধর্মীয় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল গুলোও এখন চুড়ান্ত আন্দোলনের পথে। এখন সরকারের শীর্ষ নীতি নির্ধারণী মহল চরম অস্বস্তিতে আছেন। শাহবাগী আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে গিয়ে প্রজন্ম চত্তর থেকে যে বিদ্ধেষ ছাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল এবং প্রধানমন্ত্রী সংসদে তাদের প্রশংসায় যে বক্তব্য দিয়েছিলেন এবং সেই বক্তব্যে বিচারকদের প্রতি যে প্রছন্ন চাপ দিয়েছিলেন তাতে সাঈদীর ফাঁসীর রায় বলে অনেকে মনে করেন। যদি সত্যই এমনটা হয় তাহলে সাঈদীর রায় পরবর্তী যে গণহত্যা সংগঠিত হয়েছে তাতে সংশ্লিষ্ট কেউ বাঁচতে পারবেন না। আর যেভাবে আন্দোলন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে তাতে সরকার খুব স্বাছন্দে সব কার্যক্রম চালাতে পারবেন বলে আপাতত মনে হচ্ছেনা। সুতরাং তত্বাবধায়ক সরকার, যুদ্ধাপরাধ মামলা ও তার রাজনৈতিক ব্যবহার, ব্যাংকিং ও অব্যাংকিং খাতের কেলেঙ্কারী,শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারী সহ রাজনৈতিক নিপিড়ন ইত্যাদিতে সরকারের নীতি নির্ধারণী মহল সহ তথাকথিত বুদ্ধিজীবি ও রাজনীতিবিদরা চিন্তার সংকটে আছেন এটা নিসন্দেতে বলা যায়।
অপরদিকে বিএনপি মনে করেছিল জামায়াতকে ঘায়েল করলে আমাদের কোন সমস্যা নেই তাই যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে খোলাশা কোন বক্তব্য না দিয়ে বরং শাহবাগকে স্বাগত জানিয়েছিল। এটাও তাদের রাজনৈতিক দুরদর্শিতার অভাব। বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াত যে একটি ফ্যাক্টর তা আরেকবার বিএনপিকে বুঝাতে হয়েছে।
সবশেষে আমাদের বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে দুঃখ হয় যে, তারা সাংবাদিক ও সমাজ চিন্তক বলে নিজেদেরকে দাবী করেন কিন্তু সমাজের মৌলিক চিন্তার সাথে তারা আজও প্রতারণা করছেন। সামগ্রিকভাবে দেশের অধিকাংশ জনগণের মনের ভাষাকে তারা তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন। দেশের সাধারণ মানুষ হানাহানি,খুন রাহাজানি,হত্যা-ধর্ষণ,রাজনৈতিক হত্যা ইত্যাদিকে মোকাবেলা করতে শিখেছে সুতরাং বিভেদ পরিহার করুন, দেশকে ভালোবাসুন আর ভালোবাসুন দেশের মানুষকে।
বিষয়: বিবিধ
১০৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন