শাহবাগ আন্দোলন ও দেশের অর্থনৈতিক হুমকি
লিখেছেন লিখেছেন থার্ড পারসন ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১১:৫২:৪৪ রাত
শাহবাগ আন্দোলন সূচনা হয়েছিলো আন্তর্জাতির অপরাধ ট্রাইবুনালে দেয়া জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশের মধ্য দিয়ে। দেশের কিছু অনলাইন ব্লগার যারা ছাত্রলীগ, যুবলীগ, ছাত্রমৈত্রী ও ছাত্র ইউনিয়নের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তারা এই রায় মেনে নিতে পারেনি। তারা কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবীতে শাহবাগ এসে আন্দোলনের ডাক দেয়। মিডিয়ার অনুগ্রহে শাহবাগ ক্রমেই রাজনীতির কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হলো। আবদুল কাদের মোল্লা দোষী কি নিদোর্ষ তা আমাদের বলার কিছু নেই । এটি আদালতের বিষয়। আদালত এই রায় দিতে কোন চাপ অথবা আবেগের বশবতী হয়েছিল কিনা তাও আমাদের বক্তব্য নয়। আদালতের রায়ে সংক্ষুদ্ধরা প্রথমে কাদের মোল্লার ফাঁসী চেয়েছিল, অতপর তার পরে বলল সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসী চাই, অতপর বলা শুরু করল জামায়াত ও শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি সকল ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী । দাবী এখানেই শেষ নয়। দাবী উঠানো হলো জামায়াত শিবিরের সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠান বয়কট সহ লেনদেন বন্ধ করে দেয়ার জন্য। শাহবাগের এ আন্দোলনকে বেগবান করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি, সাহিত্যিক সর্ব মহলের বাম নেতারাও সর্বাত্নক সহযোগীতা ও সংহতি প্রকাশ করেছেন। সকলের সংহতি প্রকাশের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে আদর্শিক দ্বন্ধ চরম পর্যায়ে পৌছানোর প্রচেষ্ঠা চলছে। কেউ কেউ বলেছেন এমন যে, শাহবাগ থেকে হয়ত ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হতে পারে। ধারণা সত্যি প্রমাণের প্রয়োজন বোধ হয় আর নেই। ইতোমধ্যে ব্লগার রাজীব ওরফে থাবা বাবা নিহত হয়েছেন সে তার ব্লগে ইসলাম, মহানবী (সা) ও তাঁর সহধর্মীনি ও তাহাজ্জুদ সম্পর্কে যা লিখেছেন তা কোন মুসলমানের পক্ষে পড়া আদৌ সম্ভব নয়। এহেন নাস্তিকের জানা হল। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দীকি বলেছেন জানাযার নামায নাকি ওযু ছাড়া পড়েছে অনেকে। যাই হোক শাহবাগ আন্দোলন কারীদের মধ্যে হয়ত এমন আরো থাবা বাবা লুকিয়ে আছে যার থাবা আমরা এখনো হয়ত আঁছ করতে পারছিনা। সাহসী সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান লিখেছিলেন "শাহবাগে ফ্যাসিবাদের পদ্বধ্বনি" কিন্তু এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ দেখলো শাহবাগে এখন নাস্তিকের পদ্বধ্বনি। এই নাস্তিকের লাশে থুথু নিক্ষেপ না করে আওয়ামীলীগের অনেক নেতা (তোফায়েল,আবদুর রাজ্জাক) তাকে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ বলে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছে।
শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর থেকে দেশের কিছু ব্যাংক, বীমা, মেডিকেল ও কোচিং সেন্টার সহ অনেক প্রতিষ্ঠানের তালিকা দিয়েছে যাদের সাথে লেনদেন না করতে শপত করানো হয়েছে। এই শপতের পর পরই এসব প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর অব্যাহত রয়েছে। জনমতে আতংক সৃষ্টি করা হচ্ছে।
দেখনু আমরা যে অনলাইনে ব্লগিং করি সেখানেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ আছে। রাজনীতির মত অর্থনীতিকে নিয়ে খেলা করলে দেশ কোথায় যাবে। দেশের অর্থনীতিতে সেবা উৎপাদনকারী বা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর উপর হামলার পেছনে শাহবাগ আন্দোলন উৎসাহ যুগিয়েছে। শাহবাগের তরুণরা কি তাহলে অর্থনৈতিক কোন জ্ঞান রাখেন না? যদি তা না হয় তাহলে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের সাথে অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান গুলোতে হামলার কি কারণ থাকতে পারে। নিশ্চয় বাংলাদেশ ছাড়া বোধ হয় পৃথিবীতে এমন কোন দেশ নাই যে দেশে স্বাধীনতার তিন যুগ পেরিয়ে গেলেও দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য জাতি এখনো ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি। দূর্ভাগ্য যে, অর্থনৈতিক মুক্তির বদলে আজ অর্থনীতিকে ধ্বংসের আয়োজন চলছে । দেশকে জানুন , অর্থনীতিকে জানুন, দেশের সম্ভাবনাকে ভালোবাসুন সত্যিকার ভাবে, রাজনীতি করুন দেশের জন্য, ঐক্যের জন্য, বিভেদের জন্য নয়। যদি রাজনীতি হয় জাতিগত বিভেদের জন্য তাহলে লাখো প্রজম্ন শাহবাগে জীবন দিলেও দেশের মানুষের মুক্তি অসম্ভব। ধন্যবাদ।
বিষয়: বিবিধ
১২৯৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন