হিজাবঃ বিকৃতি বিচ্যুতি এবং সম্ভাবনা
লিখেছেন লিখেছেন সাফওয়ানা জেরিন ৩০ অক্টোবর, ২০১৫, ০৬:৫৪:৪১ সন্ধ্যা
কিছুদিন আগে একটা ছবি দেখেছিলাম। নট উইদ আউট মাই ডটার নামক একটি ছবি। অনেকেই হয়তো বিখ্যাত এই ছবিটির নাম শুনে থাকবেন। ইরানের ইসলামী বিপ্লবের উপর অবলম্বন করে নির্মিত এই ছবিটি। এখানে নায়িকা বেটি একজন আমেরিকান , যার বিয়ে হয় এক ইরানি ছেলে মাহমুদির সাথে। মাহমুদী অনেক ভুলিয়ে বেটিকে ইরানে নিয়ে আসে। সেই সময় ইরানে বাধ্যতামূলক সবাইকে হিজাব পড়তে হতো এবং একই ধারাবাহিকতায় বেটিকেও হিজাব ধারণ করতে হয়। একজন খ্রিস্টান মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও ইরানে থাকাকালীন পুরো সময়টাই তাকে বড় আবায়া পড়ে থাকতে হয়, যা তার জন্য একটা বন্দিত্ব বটে। শুধু তার জন্যই না, তৎকালীন সময়ের আলোচিত সেকুলার ইরানি নারী শিরিন এবাদির বই- Iran awaking এও রাষ্ট্রীয়ভাবে চাপিয়ে দেওয়া এই পোশাককে বোঝা হিসেবেই দেখানো হয়েছে। সে যাই হোক! মূল কথা এই যে, পোশাক বিশ্বাসের শক্তি বহন করে। আপনি কি বিশ্বাস করেন, মুসলিম হিসেবে ধর্মকে কতোটুকু মানেন সেটা আপনার পোশাকেই প্রকাশ পায়। কিন্তু আলোচিত উদাহরণে বেটি কিংবা শিরিন এবাদিরাও তো হিজাব পড়েছেন, তবে সেটা কোন বিশ্বাসের ধারক হিসেবে নয়। পড়তে হবে তাই পড়েছে। তাই বলে নিশ্চয়ই আপনি বলবেন না, বেটি মাহমুদি হিজাব পড়েই মুসলিম হয়ে গেছেন! কারণ, মুসলিম মাত্রই আমি আপনি জানি, শুধু মাত্র আচার নিষ্ঠা নয়, মনে প্রানে ধারণ করা এবং তা কাজে পরিণত করা। তাই তো বলা হয়- change first happens in mind, then reflect in action. সুতরাং, যে পরিবর্তন মন থেকে শুরু হয়না, সে পরিবর্তনে বাহ্যিকতার প্রকাশ শুধু মাত্র বস্তুবাদিতার লোক দেখানো রূপ ছাড়া আর কিছুই না। ইদানিং হিজাবের প্রকৃত রূপ থেকে বিচ্যুতি বিকৃতি নিয়ে অনেক লেখালেখি হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত সমস্যার সমাধান আসলে কেউই বলতে পারছেন না। উল্টো সমাধানের চেয়ে বিশেদ্গার করে পর্দা সম্পর্কে নেতিবাচক জনসমর্থন গড়ে তোলার অপচেষ্টা দেখা যাচ্ছে। প্রথমতঃ এই দেশে প্রকৃত পর্দা থেকে বিচ্যুতির যে কারণ ঘটেছে তার পেছনে পুরো সমাজই কিছুটা হলেও দায়ী। একটা সময় কলসি বোরখা, গোল বোরখা পড়া হতো, এখন সেগুলোর চল নেই বললেই চলে। কিংবা আমি এও বলবো না যে সেগুলোই যথার্থ পর্দার রূপ ছিল। কিন্তু, আমরা কি দেখেছি? পর্দানশিল মেয়েদের পদে পদে শুধু বাঁধাই সৃষ্টি করেছে সমাজ। ভাইভা বোর্ড থেকে শুরু করে ইউনিভার্সিটির প্রবেশপথ, মেধা তালিকায় প্রথম হওয়া সত্ত্বেও টিচার না হতে পারা, কর্পোরেট লাইফে ঠাই না পাওয়া। প্রতিযোগিতায় পর্দাশিলরা কেন পেরে উঠবে লাস্যময়ী ললনাদের সাথে? বসের মনোরঞ্জনে তো তাদের সঙ্কীর্ণ হবার কথা কারো অজানা নয়! তাই না? যেখানে নারী সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন , যেখানে নারীর চাকরী মানেই বসের টোপ গেলা মাছ, সেখানে পর্দানশিল মেয়েদের জন্য সমাজের গঠনমূলক যায়গাগুলোতে অবস্থান বানিয়ে নেওয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাঁধা কিন্তু ছিল এই সুশীল আর কথিত নারীবাদীরাই। কই! যখন মেয়েদের স্কুলে ফুল হাতা জামা কেঁচি দিয়ে কাঁটা হয়, যখন ইউনিভার্সিটিতে হিজাব নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়না, যখন ভাইভা বোর্ডে, ক্লাসের ডায়াসে ডাকিয়ে শুধু মাত্র প্রকৃত পর্দা করার অপরাধে অপমানিত করা হয়, তখন তো এই সুশীলদের দেখা যায় না, প্রকৃত পর্দার জন্য মায়াকান্না করতে! তখন বরং এরাই কোমর বেঁধে নেমে পড়ে, বোরখা কীভাবে নারীকে বন্দি করেছে, কীভাবে স্বাধীনতা হরণ করেছে! অথচ, আজ হিজাব পড়ে এমন একটি মেয়েকে জিজ্ঞেস করে দেখেন তো – তাকে কে জোর করে হিজাব পড়তে বাধ্য করেছে! এমনই যখন সমাজের প্রতিকূল চালচিত্র, তখন পর্দা প্রিয় হিজাবিরা ধীরে ধীরে পর্দার ধরণে পরিবর্তন আনতে শুরু করলো। আর এই পরিবর্তনে আমরা হটাত করেই খেয়াল করলাম, হিজাব অনেক ব্যাপকতা পেলো। কারণ- মেয়েদের মধ্যে একটা নিরাপত্তার আনন্দ তৈরি করে দিয়েছিলো এই হিজাব। আর যখন কোন কিছু সমাজে হুট করেই খুব বেশী ব্যাপকতা পায়, তখন অনেক মানুষ ধারণ করার কারণে কিছুটা বিকৃতি দেখা দেয় তাতে। আর সঠিক প্রচার এবং শিক্ষার অভাবে এই বিকৃতি একটা সময় মহামারী আকার ধারণ করে। সে ক্ষেত্রে বিকৃতিকে শুধরানোর জন্য সঠিক ধারণার চর্চার বিকল্প নেই। কিন্তু সুশীলদের বক্তব্য হল- মাথা ব্যাথা তো মাথাই কেটে ফেলি Not without my daughter ছবিটির কথা বলছিলাম। ওখানে ইরানেই বেটির সাথে এক আমেরিকান কনভার্টেড মুসলিম মেয়ের দেখা হয়। বাসায় যাওয়ার পরে সেই মহিলা রান্না ঘরে যেয়ে হিজাব খুলে ফেলে। দৃশ্যটাকে হলিউডের এই ছবিটাতে এমনভাবে দেখানো হল- যেন সে কি একটা আজাব থেকে মুক্তি পেলো! অথচ- সে কিন্তু জেনে বুঝে কুরআন মেনে মুসলিম হয়েছে! এই যে দেখার কিংবা দেখানোর দৃষ্টিভঙ্গি! এতেই কিন্তু বোঝা যায় ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টির প্রতি আপনি কতোটুকু বায়াস। কিন্তু আপনি যদি প্রকৃত মুসলিম হিসেবে এই সব হিজাবিদের দেখে লজ্জাই পান, আপনার উচিৎ ছিল প্রকৃত পর্দা কি বা তা কতোটা সুন্দর তা তুলে ধরা, সেই সাথে তুলে ধরা এর বিকৃতিতে আপনার কষ্টের মায়াকান্নার স্বরূপ ও। শুধু বিশেদ্গার করেই ক্ষান্ত হলেন। অথচ, যখন সুন্দরি প্রতিযোগিতায় আপনারাই বিচারক হন, যখন একটা মেয়ের ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে তার মানুষ হবার শ্রেষ্ঠত্বকে পরিমাপ করে ফেলেন, যখন এই আপনাদের রুপের প্রচারণা, নারীকে পণ্য বানানোর মানসিকতা হাজার হাজার কালো মেয়ের জীবনে অভিশাপ হয়ে নেমে আসে, যখন এই আপনাদের উন্মুক্ত রূপ প্রদর্শন আরেক মেয়ের ঘর ভাঙ্গে তখন কোথায় থাকে আপনাদের এইসব মায়াকান্না! তখন যতো দোষ নন্দ ঘোষ সব পুরুষের। হিজাব ব্যাপকতা পেয়েছে এটা অবশ্যই একটি ইতিবাচক ব্যাপার। প্রত্যেক ইতিবাচক পরিবর্তন কিছু বিচ্যুতি বিকৃতি ও সাথে করে নিয়ে আসে। যেমন তথ্য প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে অনেক সহজ করেছে, আবার নৈতিক বিকৃতির ও দুয়ার খুলে দিয়েছে। কিন্তু তাই বলে আমরা প্রযুক্তিকে পরিত্যাগ করিনা। ঠিক তেমনি হিজাবের এই ইতিবাচক বিকাশে বিকৃতির জন্য হিজাবের প্রয়োজনীয়তাকেও অস্বীকার করতে পারবো না। বরং হিজাবের প্রকৃত তাৎপর্য আর বিশ্বাসের আধেয় তুলে ধরার এখনই সময়। ফ্যাশন হাউজগুলো ঠিক করে দেয় আপনি কি পড়বেন কি করবেন। প্রকৃত হিজাবের ফ্যাশন ট্রেন্ড তৈরি, কিংবা বিশ্বাসের সাথে যায় এমন যুগোপযোগী পর্দার পোশাক কিংবা রোল মডেল মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য আপনি আমি কি করেছি? কিংবা শুধু যে টাইট ফিট জিন্স আর মুখে দস্তুরমতো মেকআপ লাগালেই ফ্যাশনেবল হওয়া যায় না, তার কি বিকল্প আমরা তুলে দিয়েছি নারী সমাজের হাতে। ঢিলেঢালা মার্জিত বোরখা হিজাব এখন সময়ের চাহিদা। যা সতর ঢেকে, বিশ্বাস সংরক্ষণ করে, পর্দার উদ্দেশ্য পূরণের সাথে সাথে সময়, পেশাগত ও আভিজাত্যের ধারা ও অক্ষুণ্ণ রাখতে পারে। এখনই সময় এমন বিকল্প তৈরি করার, এমন হিজাব নিয়ে ভুল মতবাদের প্রচারণা তুঙ্গে ওঠার আগেই। কিছুদিন আগে একটা ছবি দেখেছিলাম। নট উইদ আউট মাই ডটার নামক একটি ছবি। অনেকেই হয়তো বিখ্যাত এই ছবিটির নাম শুনে থাকবেন। ইরানের ইসলামী বিপ্লবের উপর অবলম্বন করে নির্মিত এই ছবিটি। এখানে নায়িকা বেটি একজন আমেরিকান , যার বিয়ে হয় এক ইরানি ছেলে মাহমুদির সাথে। মাহমুদী অনেক ভুলিয়ে বেটিকে ইরানে নিয়ে আসে। সেই সময় ইরানে বাধ্যতামূলক সবাইকে হিজাব পড়তে হতো এবং একই ধারাবাহিকতায় বেটিকেও হিজাব ধারণ করতে হয়। একজন খ্রিস্টান মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও ইরানে থাকাকালীন পুরো সময়টাই তাকে বড় আবায়া পড়ে থাকতে হয়, যা তার জন্য একটা বন্দিত্ব বটে। শুধু তার জন্যই না, তৎকালীন সময়ের আলোচিত সেকুলার ইরানি নারী শিরিন এবাদির বই- Iran awaking এও রাষ্ট্রীয়ভাবে চাপিয়ে দেওয়া এই পোশাককে বোঝা হিসেবেই দেখানো হয়েছে। সে যাই হোক! মূল কথা এই যে, পোশাক বিশ্বাসের শক্তি বহন করে। আপনি কি বিশ্বাস করেন, মুসলিম হিসেবে ধর্মকে কতোটুকু মানেন সেটা আপনার পোশাকেই প্রকাশ পায়। কিন্তু আলোচিত উদাহরণে বেটি কিংবা শিরিন এবাদিরাও তো হিজাব পড়েছেন, তবে সেটা কোন বিশ্বাসের ধারক হিসেবে নয়। পড়তে হবে তাই পড়েছে। তাই বলে নিশ্চয়ই আপনি বলবেন না, বেটি মাহমুদি হিজাব পড়েই মুসলিম হয়ে গেছেন! কারণ, মুসলিম মাত্রই আমি আপনি জানি, শুধু মাত্র আচার নিষ্ঠা নয়, মনে প্রানে ধারণ করা এবং তা কাজে পরিণত করা। তাই তো বলা হয়- change first happens in mind, then reflect in action. সুতরাং, যে পরিবর্তন মন থেকে শুরু হয়না, সে পরিবর্তনে বাহ্যিকতার প্রকাশ শুধু মাত্র বস্তুবাদিতার লোক দেখানো রূপ ছাড়া আর কিছুই না। ইদানিং হিজাবের প্রকৃত রূপ থেকে বিচ্যুতি বিকৃতি নিয়ে অনেক লেখালেখি হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত সমস্যার সমাধান আসলে কেউই বলতে পারছেন না। উল্টো সমাধানের চেয়ে বিশেদ্গার করে পর্দা সম্পর্কে নেতিবাচক জনসমর্থন গড়ে তোলার অপচেষ্টা দেখা যাচ্ছে। প্রথমতঃ এই দেশে প্রকৃত পর্দা থেকে বিচ্যুতির যে কারণ ঘটেছে তার পেছনে পুরো সমাজই কিছুটা হলেও দায়ী। একটা সময় কলসি বোরখা, গোল বোরখা পড়া হতো, এখন সেগুলোর চল নেই বললেই চলে। কিংবা আমি এও বলবো না যে সেগুলোই যথার্থ পর্দার রূপ ছিল। কিন্তু, আমরা কি দেখেছি? পর্দানশিল মেয়েদের পদে পদে শুধু বাঁধাই সৃষ্টি করেছে সমাজ। ভাইভা বোর্ড থেকে শুরু করে ইউনিভার্সিটির প্রবেশপথ, মেধা তালিকায় প্রথম হওয়া সত্ত্বেও টিচার না হতে পারা, কর্পোরেট লাইফে ঠাই না পাওয়া। প্রতিযোগিতায় পর্দাশিলরা কেন পেরে উঠবে লাস্যময়ী ললনাদের সাথে? বসের মনোরঞ্জনে তো তাদের সঙ্কীর্ণ হবার কথা কারো অজানা নয়! তাই না? যেখানে নারী সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন , যেখানে নারীর চাকরী মানেই বসের টোপ গেলা মাছ, সেখানে পর্দানশিল মেয়েদের জন্য সমাজের গঠনমূলক যায়গাগুলোতে অবস্থান বানিয়ে নেওয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাঁধা কিন্তু ছিল এই সুশীল আর কথিত নারীবাদীরাই। কই! যখন মেয়েদের স্কুলে ফুল হাতা জামা কেঁচি দিয়ে কাঁটা হয়, যখন ইউনিভার্সিটিতে হিজাব নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়না, যখন ভাইভা বোর্ডে, ক্লাসের ডায়াসে ডাকিয়ে শুধু মাত্র প্রকৃত পর্দা করার অপরাধে অপমানিত করা হয়, তখন তো এই সুশীলদের দেখা যায় না, প্রকৃত পর্দার জন্য মায়াকান্না করতে! তখন বরং এরাই কোমর বেঁধে নেমে পড়ে, বোরখা কীভাবে নারীকে বন্দি করেছে, কীভাবে স্বাধীনতা হরণ করেছে! অথচ, আজ হিজাব পড়ে এমন একটি মেয়েকে জিজ্ঞেস করে দেখেন তো – তাকে কে জোর করে হিজাব পড়তে বাধ্য করেছে! এমনই যখন সমাজের প্রতিকূল চালচিত্র, তখন পর্দা প্রিয় হিজাবিরা ধীরে ধীরে পর্দার ধরণে পরিবর্তন আনতে শুরু করলো। আর এই পরিবর্তনে আমরা হটাত করেই খেয়াল করলাম, হিজাব অনেক ব্যাপকতা পেলো। কারণ- মেয়েদের মধ্যে একটা নিরাপত্তার আনন্দ তৈরি করে দিয়েছিলো এই হিজাব। আর যখন কোন কিছু সমাজে হুট করেই খুব বেশী ব্যাপকতা পায়, তখন অনেক মানুষ ধারণ করার কারণে কিছুটা বিকৃতি দেখা দেয় তাতে। আর সঠিক প্রচার এবং শিক্ষার অভাবে এই বিকৃতি একটা সময় মহামারী আকার ধারণ করে। সে ক্ষেত্রে বিকৃতিকে শুধরানোর জন্য সঠিক ধারণার চর্চার বিকল্প নেই। কিন্তু সুশীলদের বক্তব্য হল- মাথা ব্যাথা তো মাথাই কেটে ফেলি Not without my daughter ছবিটির কথা বলছিলাম। ওখানে ইরানেই বেটির সাথে এক আমেরিকান কনভার্টেড মুসলিম মেয়ের দেখা হয়। বাসায় যাওয়ার পরে সেই মহিলা রান্না ঘরে যেয়ে হিজাব খুলে ফেলে। দৃশ্যটাকে হলিউডের এই ছবিটাতে এমনভাবে দেখানো হল- যেন সে কি একটা আজাব থেকে মুক্তি পেলো! অথচ- সে কিন্তু জেনে বুঝে কুরআন মেনে মুসলিম হয়েছে! এই যে দেখার কিংবা দেখানোর দৃষ্টিভঙ্গি! এতেই কিন্তু বোঝা যায় ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টির প্রতি আপনি কতোটুকু বায়াস। কিন্তু আপনি যদি প্রকৃত মুসলিম হিসেবে এই সব হিজাবিদের দেখে লজ্জাই পান, আপনার উচিৎ ছিল প্রকৃত পর্দা কি বা তা কতোটা সুন্দর তা তুলে ধরা, সেই সাথে তুলে ধরা এর বিকৃতিতে আপনার কষ্টের মায়াকান্নার স্বরূপ ও। শুধু বিশেদ্গার করেই ক্ষান্ত হলেন। অথচ, যখন সুন্দরি প্রতিযোগিতায় আপনারাই বিচারক হন, যখন একটা মেয়ের ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে তার মানুষ হবার শ্রেষ্ঠত্বকে পরিমাপ করে ফেলেন, যখন এই আপনাদের রুপের প্রচারণা, নারীকে পণ্য বানানোর মানসিকতা হাজার হাজার কালো মেয়ের জীবনে অভিশাপ হয়ে নেমে আসে, যখন এই আপনাদের উন্মুক্ত রূপ প্রদর্শন আরেক মেয়ের ঘর ভাঙ্গে তখন কোথায় থাকে আপনাদের এইসব মায়াকান্না! তখন যতো দোষ নন্দ ঘোষ সব পুরুষের। হিজাব ব্যাপকতা পেয়েছে এটা অবশ্যই একটি ইতিবাচক ব্যাপার। প্রত্যেক ইতিবাচক পরিবর্তন কিছু বিচ্যুতি বিকৃতি ও সাথে করে নিয়ে আসে। যেমন তথ্য প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে অনেক সহজ করেছে, আবার নৈতিক বিকৃতির ও দুয়ার খুলে দিয়েছে। কিন্তু তাই বলে আমরা প্রযুক্তিকে পরিত্যাগ করিনা। ঠিক তেমনি হিজাবের এই ইতিবাচক বিকাশে বিকৃতির জন্য হিজাবের প্রয়োজনীয়তাকেও অস্বীকার করতে পারবো না। বরং হিজাবের প্রকৃত তাৎপর্য আর বিশ্বাসের আধেয় তুলে ধরার এখনই সময়। ফ্যাশন হাউজগুলো ঠিক করে দেয় আপনি কি পড়বেন কি করবেন। প্রকৃত হিজাবের ফ্যাশন ট্রেন্ড তৈরি, কিংবা বিশ্বাসের সাথে যায় এমন যুগোপযোগী পর্দার পোশাক কিংবা রোল মডেল মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য আপনি আমি কি করেছি? কিংবা শুধু যে টাইট ফিট জিন্স আর মুখে দস্তুরমতো মেকআপ লাগালেই ফ্যাশনেবল হওয়া যায় না, তার কি বিকল্প আমরা তুলে দিয়েছি নারী সমাজের হাতে। ঢিলেঢালা মার্জিত বোরখা হিজাব এখন সময়ের চাহিদা। যা সতর ঢেকে, বিশ্বাস সংরক্ষণ করে, পর্দার উদ্দেশ্য পূরণের সাথে সাথে সময়, পেশাগত ও আভিজাত্যের ধারা ও অক্ষুণ্ণ রাখতে পারে। এখনই সময় এমন বিকল্প তৈরি করার, এমন হিজাব নিয়ে ভুল মতবাদের প্রচারণা তুঙ্গে ওঠার আগেই।
বিষয়: বিবিধ
১৫৯৬ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
চমৎকার বিশ্লেষন করেছেন, ভালো লাগলো।
হিজাবের কারণে মেয়েদের পদোন্নতি বাধাগ্রস্থ এটা হয়তো বর্তমান প্রেক্ষপট হিসেবে ঠিক তবে হিজাবের বেসিক কনসেপ্ট ঠিক না রেখেই যদি কেউ ট্রেন্ড বানাতে চায় ভূল করবে। আজকাল বাজারে যে হিজাব বের হয়েছে( টাইট, কারুকাজ, আকর্ষনীয় ) সেটার প্রেক্ষিতে বলছি । আরেকটি কথা হালের ফ্যাশন আর আমাদের হিজাবের সঠিক ধারণা দুটো একসাথে সব সময় সামন্জষ্যশীল নাও হতে পারে এবং ব্যক্তি ভেদে(তাকওয়া)হিজাবের ধরণ ও ভিন্ন হবে মনে করি।
অনেকেই আছেন শুধু সমালোচনা করেন হিজাবের -হিজাবীদের আমি বলতে চাই সমালোচনা না করে বরং সঠিক পর্দা রক্ষা হয় সেই মত হিজাব বানানোতে মন দেয়া উচিত!
আপু, লিখাটা দুবার এসেছে, এডিট করে দিয়েন।
জাযাকিল্লাহু খাইর। দোআ ও শুভকামনা নিরন্তর
লিখাটা দু'বার এসেছে, এডিট করে দিবেন প্লিজ।
খুব সুন্দর বলেছেন! জাযাকিল্লাহ
আপু, লেখাটা কয়েকটা প্যারায় ভেঙ্গে দিলে পাঠকের জন্য সুবিধাজনক হতো!
আলহামদুলিল্লাহ্, আমার অনেক নিকটাত্মীয়া যারা কিনা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে, বাজারের দামী কাপড়টা দিয়েই বোরখা বানাচ্ছে, এটাকে আভিজাত্য হিসেবেই গ্রহণ, ক্লাস, পরীক্ষাসহ চলতে ফিরতে নানান জায়গাতেই বিড়ম্বনার স্বীকার হচ্ছে, তবুও তারা তাদের যৌক্তিক এবং নৈতিক অবস্থানে শিথিলতা আনেনি। তারা পারছে এই জন্যই যে, পর্দার সঠিক রূপ তারা জেনে নিয়েছে। কারো চাপাচাপি অথবা নিছক লোকের দেখাদেখিতেও নয়, যা আজকাল হরহামেশাই হয়ে থাকে।
বোনদের উদ্দেশ্যে বলছি, এই বৈরি পরিবেশে বোরখা নিয়ে নাজেহাল হবেনি, তাই বলে বোরখাটাকে অভিশাপ মনে করা যাবে না, স্রোতের বিপরীতে নিজেদের নিজস্বতা নিয়ে টিকেই থাকাইতো প্রকৃত মুমিনের কাজ, এবং প্রকৃত মুমিনরাই টিকে থাকার যোগ্যতা রাখে। আমরা ছেলেরাওতো কম হেনস্থার স্বীকার হয় না! হয়তো ক্লাস পরীক্ষাতে অপমান করার সুযোগ থাকে না, কিন্তু রাস্তা ঘাটে দাড়ি টুপি থাকা মানেই নির্দিষ্ট দলের মনে করে হেনস্থার স্বীকার হওয়া, চাকুরীর জন্য গেলেতো যাচ্ছে তাই ব্যবহার। তবুও আমরা আমাদের মতই আছি, থাকব ইনশাআল্লাহ্।
লিখাকে প্যারা করে দেয়ার পরামর্শ থাকল।
বরাবরের মতই ভালো লিখেছেন।
বিশ্লেষণধর্মী সুন্দর পোষ্টটির জন্য অনেক অনেক শুকরিয়া।
আজ যদি কোন শিক্ষর্থীকে হিজাব/পাঞ্জাবী পরিধানে বাধ্য করা হত, তখন মিডিয়া পাড়া ও সারাবিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়ে যেত। অথচ সেচ্চায় পরার অপরাধে তাদের উপর চলছে জুলুমের তরবারী। এর শেষ কোথায় আল্লাহই ভালো জানেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন