ফিশ আউট অফ ওয়াটার
লিখেছেন লিখেছেন সাফওয়ানা জেরিন ১৩ নভেম্বর, ২০১৪, ০৭:৪৭:৪৮ সন্ধ্যা
নিজের রুপে মুগ্ধ হবু লাক্স সুন্দরি কলেজের গেইটে পা দিয়ে চোখ বড় বড় করে চারদিকে তাকায়। আজ সে যদিও বেশ শালীন পোশাকেই এসেছে। শালীন বলতে জামাটা পা পর্যন্তই, শুধু জামার সামনে পেছনের গলাটা বেশ বড় , আর হাতা এবং পিঠ কাটা। এ আর এমন কি! জামার ৯৯ ভাগই তো শালীন!
অবশ্য সাধারণ ক্লাসের জন্য অনেকদিন ধরেই কলেজে আসা হয়না নিয়মিত। আজ পরীক্ষা তাই র্যাম্প প্র্যাকটিস থেকে ছুটি নিয়ে হলেও পরীক্ষা দিতে আসলো। আর এই উদ্দেশ্যেই শালীন পোশাকে আসা।
কিন্তু বাংলাদেশের ছেলেদের এমনকি মেয়েদের ও স্বভাব বুঝে উঠতে পারছেনা সুন্দরী। এতো শালীন পোশাকে আসার পরেও কলেজের সামনে দাড়িয়ে থাকা মুড়িওয়ালা টুপিপরা বুড়া মামা কেমন করে যেন তাকাচ্ছেন।
যেন কোন অপরাধ হয়ে গেছে! এরপর কলেজের মেয়েগুলো ও এমনভাবে তাকাচ্ছে যেন আজব কোন চিড়িয়া দেখছে!
এইসব কেয়ার করলে অবশ্য হয়না।
তাই নিজের ঠাট বজিয়ে রেখে হিলের ঠকঠক শব্দ তুলে পরীক্ষার হলের দিকে ছুটতে থাকে সুন্দরী।
হলে ঢুকে ম্যামদের কাছে খাতা নিতে যাবে , ঠিক তখনই পরীক্ষার পরিদর্শক ৪ জন ম্যামই সুন্দরীর দিকে ঘুরে বসে।
- কি চাই?
- ম্যাম! খাতা নিবো।
- তুমি কি এক্সাম দিতে এসেছ?
- জী ম্যাম!
-কিন্তু দেখে তো মনে হয়না এক্সাম দিতে এসেছ!
- কেন ম্যাম!
- তোমার ড্রেস আপ দেখে মনে হচ্ছে র্যাম্প করতে এসেছ! আমাদের সাথে ভাব দেখাও না? নিজেকে কি মনে করো মেয়ে? এটা র্যাম্প না পরীক্ষার হল।
- ইয়ে মানে...
- শুনো, কলেজে মেয়েরা পড়ালেখা করতে আসে, এভাবে র্যাম্পের বেশে না। এখানে ভদ্র পরিবারের মেয়েরা পড়ালেখা করে।
- ম্যাম! কলেজে তো কোন ড্রেস কোড নেই যে আপনারা এভাবে কথা বলছেন।
- শুনো অনার্স লেভেলে কোন প্রতিষ্ঠানেই ড্রেস কোড নেই। কিন্তু একটা স্বাভাবিক ড্রেস কোড আমাদের সমাজে আছে। সেটা হল শালীনতা।
ম্যাম! আমি তো পা পর্যন্ত ঢেকে আসছি
- হ্যা। পা পর্যন্ত জামা পরে ওড়না না পরলে কি লাভ ! আর তোমার শরীর তো পুরাই খোলা। পা ঢেকে কি লাভ! এসব মেয়েদের জন্য তো বাকি মেয়েরাও খারাপ হয়ে যাবে! এরপর থেকে আর এসব জামা কাপড় যেন না দেখি।
-জী ম্যাম। সরি।
সুন্দরীর প্রেসটিজ পুরাই পাঙ্কচার হয়ে গেলো। পাংশু মুখে খাতা নিয়ে পরীক্ষা দিতে বসে। অথচ, মেয়েগুলো তাও বারবার তার দিকে তাকাচ্ছে। ওদের কি কোন কাজ নেই!
সুন্দরীর অবস্থা এখন ফিশ আউট অফ ওয়াটার। ওয়াটারটা তার ঐ র্যাম্প আর সুন্দরী প্রতিযোগিতার স্টেজই। আপাতত এটাই তার জন্য বাস্তবতা। এখানে কেউ তাকে বাহবা দিবেনা। পানিহীন মাছের মতো সুন্দরী ছটফট করতে থাকে।
( সত্য ঘটনা অবলম্বনে লিখিত )
বিষয়: বিবিধ
১৪৮১ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
খুব ভালো লাগল.।.।।
কিন্ত এই তথাকথিত সুন্দরি রা আদেী কি লেখাপড়ার ধার ধারে। এখনকার বেশিরভাগ মডেল তাড়কাই নাকি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রি। এক কুখ্যাত নগ্ন মডেল এর পরিচয় দাঁতের ডাক্তার! তাও বেসরকারি মেডিকেল থেকে!!
আসলে কিছু ইংরেজি বলতে পারাটাই শিক্ষা পরিচয় নয়। আর এই তাড়কাদের নাকি মেধাও পরিক্ষা হয়!!! এই মেধা পরিক্ষার নামে যে সব প্রশ্নে বিবরন পড়লাম দুইবার আইএসএসবি এবং অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে ইন্টারভিউ দেওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি এভাবে আই.কিউ যাচাই হয়না।
ঐ সব তথাকথিত সুন্দরী আদতে বারবনিতাদের চপেটাঘাত হয়েছে অসাধারণ এই লেখনী!
মন্তব্য করতে লগইন করুন