মেয়ে শিশুরাও মায়ের হাত ধরে মসজিদে যাবে

লিখেছেন লিখেছেন সাফওয়ানা জেরিন ০২ জুলাই, ২০১৪, ০৭:৩৪:০১ সন্ধ্যা



মাত্র ৫ মিনিট দেরী করার শাস্তি পেলাম আজকে। মসজিদে যেয়ে দেখি, ২০০ নারী মুসুল্লির মধ্যে ১০০ই আন্ডার ১৫ পুচকি! তিল ঠাই আর নাহিরে অবস্থা!

তাদের জন্য বড়রা যায়গা পাচ্ছেনা। একেকজনের একেক রকম কথা ! কেউ বলছে

- এই পুচকি গুলো মসজিদে কেন আসছে!

- এগুলা তো ঠিকমতো অজু ই করেনা! এহ! আসছে আবার নামাজ পড়তে!

এক মহিলা আরেক পিচ্চিকে শাঁসালো!

- এই নিয়ে তুই আমার জায়নামজের উপর দিয়ে ৫ বার গেছিস! আর একবার যদি গেছিস তোর খবর আছে!

পিছনের সারিতে নামাজে যে এত্ত ক্যাচাল হয় তা তো আগে জানতাম নাহ! নামাজ পড়বো না এদের কাণ্ড দেখবো! আমার পাশের পিচ্চি টা পিচ্চিদের উপর বড়দের খবরদারী দেখে এতক্ষনে চুপসে গেছে ভয়ে। আমার পাশের ইয়াং আপুটা ওর থুতনি ধরে বলল- তুমি নামাজের কি বুঝো! যে নামাযে আসছ?

পিচ্চির চক্ষু ছলছল। ফরজ শেষ হওয়ার পর সবাইকে একলা একলা নামাজ পড়তে দেখে আমাকে বলল- আপু, এখন কি পড়বো!

আমি বললাম- এখন ২ রাকাত সুন্নত পড়।

এরপর নামাজের মধ্যেও একটু পরপর পাশের আরেক পিচ্চির সাথে গুটুর গুটুর করে। ২ রাকাত তারাবী শেষ হলে বললাম- নামাজের মধ্যে কথা বললে কিন্তু নামাজ হয় না!

- না আপু! মানে , ও আমাকে জিজ্ঞেস করছিলো এটা কি সালাতুত তাসবিহ

এতক্ষনে মনে মনে খুব হাসি পেলো। পিচ্চিগুলা এটাই জানে না , এটা যে রমাজনের বিশেষ সালাত , যেই সালাত পড়তে তাদের আগমন!

যাই হোক, তারপরেও! এভাবেই হয়তো সামাজিকীকরণের মাধ্যমেই আমরা ধর্মকে চিনি, বুঝতে শিখি। পিচ্চিরা অনেক দুষ্টুমি করে ঠিকই, তারপরেও ওদের আগ্রহকে ছোট করা আসলে অযৌক্তিক।

সেদিন একজন তার পাশের বাসার প্রতিবেশীর ছোট্ট ১০ বছরের মেয়েটাকে এবনরমাল বলছিল।

কারন জানতে চেয়ে শুনলাম- মেয়েটা নাকি অন্য রকম! এই বয়সেই ফজরের নামাজ পড়ে বাসার সবাইকে ডেকে ডেকে তোলে। এটা কি স্বাভাবিক? ওকে আমার মতে অনেক বেশী বেশী ফ্রি মিক্সিঙ্গের সুযোগ দেওয়া উচিৎ, যাতে এই অসুখটা সেরে যায়।

আমি বাচ্চাটাকে চিনি। মনিপুর স্কুলের অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী, কথাবার্তা, আচার আচরণে এই বয়সেই এক কথায় অনন্য। একটু আলাদা! একটু আল্লাহ ভক্ত। একটু ভাবুক!

তাই বলেই তাকে পাগল ভাবতে হবে, এই বয়সে ধর্মের প্রতি অনুরাগকে খারাপ চোখে দেখতে হবে এটা কেমন কথা!

এই বয়সে মানুষের মন কোমল থাকে। এই বয়স থেকেই তো মানুষের আত্ম উপলব্ধির সূচনা হয়! আর এখন সমাজের দৃষ্টি ভঙ্গি এমন হয়ে গেছে যে, স্রোতের বিপরীতে কাউকে চলতে দেখলেই তার মধ্যে কিন্তু খোঁজা শুরু হয়ে যায়। এই শিশুরা ফেরেশতার মতো পবিত্র, পবিত্র এদের মন, এটাই সময় গড়ে তোলার। আপনি আমি তাদের সেই পরিবেশ দিতে না পারলে খারাপ হওয়ার দ্বায় ভার একা তাদের দেওয়ার কোন যুক্তি নেই। ছেলে পিচ্চিরা বাবার হাত ধরে মসজিদে যেতে পারলে , এই রোজার মাসে এই একটা মাসে মেয়ে পুচকি গুলো ও মায়ের হাত ধরে মসজিদে যাবে। এভাবেই গড়ে উঠবে আগামীর মায়েরা। শিক্ষা দিতে হবে ছোটবেলা থেকেই, গাছের গোঁড়া কেটে পরে আগায় পানি দিলে কোন লাভ হবে কিনা সেটা আজকের নারী সমাজই উদাহরণ

বিষয়: বিবিধ

১৭১৪ বার পঠিত, ২৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

241038
০২ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪০
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : বাহ অনেক সুন্দর যুক্তি ,,ছোট্র শিশুদের মা নিজেই নিয়ে যাবে মসজিদে বা শিক্ষাপ্রতিষ্টানে আর এটাই উপযুক্ত শিশুটির মানসিকতার জন্য।
০২ জুলাই ২০১৪ রাত ০৮:২৩
187106
সাফওয়ানা জেরিন লিখেছেন : Happy Happy Happy
241040
০২ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫২
ভিশু লিখেছেন : 'মানে, ও আমাকে জিজ্ঞেস করছিলো এটা কি সালাতুত তাসবিহ?!' Rolling on the Floor আপনার উপস্থাপনা বেশ অ্যাট্রাক্টিভ...Happy একটু বুঝমান বাচ্চাদেরই বাবা-মায়ের সাথে মসজিদে আসা খুব-খবি দরকার! ওদের জন্য কাল থেকে দয়া করে কিছু চকলেটও নিয়ে যাবেন, ইনশাআল্লাহ! ধন্যবাদ...Praying Good Luck Rose
০২ জুলাই ২০১৪ রাত ০৮:২২
187104
সাফওয়ানা জেরিন লিখেছেন : বাব্বাহ! চকলেট! আমাকেই তো কেউ চকলেট দেয় না! অ্যা
241041
০২ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৬
এ কিউ এম ইব্রাহীম লিখেছেন : ভালো লাগলো... অনেক ধন্যবাদ
241045
০২ জুলাই ২০১৪ রাত ০৮:০৭
ঈগল লিখেছেন : লিখাটি সম্ভবত আপনি ফেসবুকেও দিয়েছিলেন।
241046
০২ জুলাই ২০১৪ রাত ০৮:১৯
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ঈগল লিখেছেন : লিখাটি সম্ভবত আপনি ফেসবুকেও দিয়েছিলেন।
241048
০২ জুলাই ২০১৪ রাত ০৮:২৪
রিদওয়ান বিন ফয়েজ লিখেছেন : আমার মনে হয় বাহরাইনে সালাতুত তারাবিহ ৮০% মহিলা মসজিদে আদায় করে । আর বাচ্চারা যে বাহিরে কি করে না দেখে বুঝার উপায় নেই । মা হলো বাচ্চাদের সর্ব প্রথম আদর্শ শিক্ষক । ধন্যবাদ, সাফওয়ানা জেরিন আপনার লিখা গুলো অনেক আদর্শিক .।
০২ জুলাই ২০১৪ রাত ১০:০৮
187131
সাফওয়ানা জেরিন লিখেছেন : বাহরাইনের খোবোর জানিনা। পড়ার জন্য ধন্যবাদ
241057
০২ জুলাই ২০১৪ রাত ০৮:৪৪
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : চমৎকার লেখা।
আমার বাংলাদেশে থাকা কালীন অবস্থায় কেবল
মাএ বায়তুল মোকারাম মসজিদে মহিলাদের
ব্যবস্থা ছিল। ভালই তো অগ্রগতি। আমি তো
ভেবে নিয়েছিলাম। আমেরিকা অথবা ইউরোপের
কোন দেশ হবে। এখানের মায়েরা, তাদের বাচ্চা নিয়ে মসজিদে আসে। লেখা চালিয়ে যান।
০২ জুলাই ২০১৪ রাত ১০:০৯
187132
সাফওয়ানা জেরিন লিখেছেন : সারা বাংলাদেশ একদিন এমন হবে এই আশা করতে দোষ কি!
০৪ জুলাই ২০১৪ রাত ০৯:০৪
187644
সাফওয়ানা জেরিন লিখেছেন : ধন্যবাদ
৩০ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০১:৩২
193831
আবু জান্নাত লিখেছেন : আশা করতে দোষ নাই তবে বাংলার পরিস্থিতি বর্তমানে এপর্যায়ে নেই, যে দিনদুপুরে স্কুল থেকে ফিরতে প্রতিনিয়ত ধর্ষনের শিকার হচ্ছে, সেখানে রাতের বেলা মসজিদে ??? প্রশ্নই আসে না।
আগে আরব দেশগুলোর মত মানষিকতা, পরিস্থিতি, সার্বিক আইনী ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা গড়ে তুলতে হবে, অতপর আশা করতে হবে না, বাস্তবেই আসবে।
241116
০৩ জুলাই ২০১৪ রাত ০৩:০১
সবুজেরসিড়ি লিখেছেন : খুব সুন্দর লিখেছেন , বাচ্চাদের মসজিদে নিয়ে আসা মুসলিম বাবামাদের নৈতিক দায়িত্ব বলে আমি মনে করি । মাটি যখন নরম থাকে তখন তাকে যে রকম ইচ্ছা সে রকম বানানো সম্ভব কিন্তু শক্ত মাটি দ্বারা তা সম্ভব নয় । বাচ্চারা হল সেই রকম কাদা মাটির মতো তাদের যেদিকে নেওয়া যাবে তারা সেদিকেই যাবে . . .
০৪ জুলাই ২০১৪ রাত ০৯:০৩
187642
সাফওয়ানা জেরিন লিখেছেন : জি , ধন্যবাদ
241271
০৩ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০২:১৫
মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন লিখেছেন : আমার মতে যদি মসজিদে মহিলাদের নামাযের ব্যবস্থা থাকে তবে ভালো নতুবা পারতপক্ষে মহিলাদের ঘরে নামায পড়াতেই সওয়াব বেশি। জামাতে যেতে অসুবিধা নেই যদি পর্দা লঙ্ঘিত না হয়। কারণ পর্দা করাও ফরজ। আপনি মূলত একটা সুন্নতে মুওয়াক্বাদা জামাতে আদায় করার জন্য গিয়ে যদি ফরজ তরক হয় তাহলে সেটা কি ঠিক হবে?

আমি জানি্, আমার এ মন্তব্যের পর হয়ত অনেকেই আমার সমালোচনা করবেন কিন্তু এটাই সত্য।
০৪ জুলাই ২০১৪ রাত ০৯:০৪
187643
সাফওয়ানা জেরিন লিখেছেন : তর্ক করতে চাই না। তবে রমজানে তারাবীর নামাজ পড়ায় কোন ক্ষতি দেখছিনা
১০
241283
০৩ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০৩:২২
শারিন সফি অদ্রিতা লিখেছেন : আপু! কি বলেন !! কিউট মাসুম বাচচা গুলা কে এভাবে বকল কেনো ?? :( :(

আপনি আপু এভাবেই সুন্দর ভাবে ঐ আন্টি দের কেও বুঝানোর চেষ্টা করেছিলেন বুঝি যে এভাবে বাচচাদের বকে না ?Happy আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যত ! Happy
০৪ জুলাই ২০১৪ রাত ০৯:০৩
187641
সাফওয়ানা জেরিন লিখেছেন : তা তো একটু করেছিই! টিচার মানুষ, মানুষকে বুঝানোর লোভ ছাড়তে পারিনা , সুযোগ পেলেRolling on the Floor Rolling on the Floor
১১
241381
০৩ জুলাই ২০১৪ রাত ০৮:২১
বাজলবী লিখেছেন : বাচ্চাদেরকে বকলে মসজিদে যাওয়ার অাগ্রহটা হারিয়ে ফেলে। অামরা ছোটকালে দেখেছি প্রথম কাতারে দাড়ালে বলত ছোটরা পিছনে যাও এতে মনে কষ্ট পেতাম। ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
১২
241421
০৩ জুলাই ২০১৪ রাত ১০:১৬
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : এটা কি সালাতুত তাসবিহ? Rolling on the Floor এই পিচ্চিগুলা আমাদের এখানেও তারাবীতে আসে। এদের চেয়ে ছোট এক বছরের বাচ্চা নিয়েও অনেকে আসেন। এদের কান্নাকাটিতে অনেকে বিরক্ত হন। তবে আমার কাছে ভাল লাগে দেখতে যে তারা মায়েদের সাথে মসজিদে আসছে। ঘরে থাকলে কার্টুন দেখত, তা না হলে ভিডিও গেম। এর চেয়ে তো ভাল।

ধন্যবাদ আপু আপনাকে। রমজান মুবারাক Love Struck Good Luck Rose
০৪ জুলাই ২০১৪ রাত ০৯:০২
187639
সাফওয়ানা জেরিন লিখেছেন : Happy Happy হুম , ঠিক বলেছেন
১৩
241619
০৪ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০২:৫৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : পিচ্চি ছেলেরাই এই দেশে মসজিদে যেতে পারেনা আর পিচ্চি মেয়ে!!!!
০৪ জুলাই ২০১৪ রাত ০৯:০২
187640
সাফওয়ানা জেরিন লিখেছেন : কেন? যায় তো!
০৪ জুলাই ২০১৪ রাত ১০:১৩
187647
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/3609/sabuj1981/30044 এই পোষ্টটি দেখুন। ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File