শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলনকারীদের স্বাগত জানিয়ে প্রকারন্তরে বিএনপি সালাউদ্দীন কাদের চৌধরী ও আব্দুল আলিম এর ফাঁসি চায়!

লিখেছেন লিখেছেন শিপন চৈাধুরী ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৬:৫১:১২ সন্ধ্যা





শাহবাগে ফাঁসির দাবিকে বিএনপির স্বাগত : আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে দলের স্থায়ী কমিটি! অন্ধকার প্রোকোষ্টের বাসিন্দাদের এভাবে মনে কষ্ট দেওয়া বিএনপির চরম হীন মানষিকতার পরিচয়!!

শাহবাগ আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি। সোমবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে শাহবাগে তরুণ প্রজন্মের পক্ষ থেকে তুলে ধরা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের ফাঁসির দাবিকে স্বাগত জানানো হয়। একই সঙ্গে দেশে চলমান লুট, দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক পুনর্বহালের দাবির আন্দোলনে যোগ দিতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। শাহবাগের সমাবেশ থেকে কিছু মিডিয়া ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দেয়া হুমকিকে অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে বিএনপি বলেছে, বহুদলীয় গণতন্ত্রে ভিন্ন মত ও পথের প্রতি এ ধরনের অসহিষ্ণুতা নৈরাজ্যকে অনিবার্য করে দেশকে গভীর সঙ্কটে নিপতিত করতে পারে। এটা কারও কাম্য হতে পারে না। রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে সব মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করার আশ্বাস দেয়া হয় বিএনপির বিবৃতিতে।

দলটির দফতরের দায়িত্বে নিয়োজিত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।

‘এক সপ্তাহ ধরে বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণী ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ফাঁসি প্রদানের দাবিতে ঢাকার শাহবাগে অবস্থান করছেন। তাদের সমাবেশে অবশ্য আরও কিছু অতিরিক্ত বিষয় নিয়ে প্রস্তাব পাঠ করা হয়েছে। দেশের তরুণ প্রজন্ম জাতির বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে আগ্রহী হবেন এবং যৌক্তিক ও কার্যকর অবস্থান নেবেন—এটাই কাঙ্ক্ষিত। তাই তারুণ্যের এ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।

সমাবেশ মঞ্চ থেকে সমাবেশটিকে দলনিরপেক্ষ বলে দাবি করলেও ক্রমান্বয়ে এটা প্রতীয়মান হচ্ছে, একটি বিশেষ রাজনৈতিক ঘরানার ব্যক্তিদের হাতেই এর নেতৃত্ব কুক্ষিগত করার প্রয়াস চলছে। সমাবেশ মঞ্চ থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময় বহুলভাবে উচ্চারিত একটি স্লোগান স্বাধীনতা-উত্তরকালে চরমভাবে দলীয়করণ করার ফলে যা সর্বজনগ্রাহ্যতা হারায়, সেই স্লোগান বারবার উচ্চারিত হওয়ার কারণে জনমনে চরম সংশয় এবং সমাবেশের নিরপেক্ষতা সম্পর্কে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সমাবেশের অরাজনৈতিক চরিত্রের পক্ষে দাঁড়ানোর কারণে এর একজন সুপরিচিত ছাত্রী উদ্যোক্তা দলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে নিগৃহীত হয়েছেন। এটি অত্যন্ত গর্হিত ও নিন্দনীয় ঘটনা।

‘জনগণ আজ ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। বিএনপি সর্বদা এই বিচারের পক্ষে। একই সঙ্গে বিচারটি যাতে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয়, বিএনপি সে দাবিও জানিয়ে আসছে। বিএনপির এই দাবির প্রতি সম্মান দেখালে বিচারটি প্রশ্নবিদ্ধ হতো না। উল্লেখ্য, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলও এই বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। একটি সভ্য রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে বাংলাদেশ কত ন্যায়নিষ্ঠভাবে মানবাধিকার ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে পারছে।’

‘দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা বিবেচনা করে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ বিচারকদের অনুরোধ জানিয়ে গোটা জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে সমাবেশ মঞ্চের ঘোষণা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অথচ মানবতাবিরোধীসহ যে কোনো অপরাধে অভিযুক্তদের যথাযথ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারপ্রধানের। বিচারকরা তাদের নিজস্ব মূল্যায়ন, যুক্তিতর্ক ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে স্বাধীনভাবে যদি রায় ঘোষণা করতে না পারেন, তা হলে সমগ্র বিচারিক প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে। এটা আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। শাহবাগের সমাবেশ থেকে কিছু মিডিয়া ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও অনাকাঙ্ক্ষিত হুমকি উচ্চারিত হয়েছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রে ভিন্ন মত ও পথের প্রতি এ ধরনের অসহিষ্ণুতা নৈরাজ্যকে অনিবার্য করে দেশকে গভীর সঙ্কটে নিপতিত করতে পারে। এটা কারও কাম্য হতে পারে না।’

‘তরুণ প্রজন্ম দেশের ভবিষ্যত্। তারা অন্যায়, অত্যাচার ও অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলবে, অবস্থান নেবে এবং প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবে—এটাই স্বাভাবিক। আমরা বিশ্বাস করি, তরুন-তরুণীরা সব ধরনের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধারণ করবে এবং এদেশে সংগঠিত মানবতাবিরোধী সব অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে।’

‘স্বাধীনতার অব্যবহিত পর পরই সিরাজ সিকদারসহ, অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও অগণিত তরুণ-তরুণী যেভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন এবং সাম্প্রতিককালে ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমসহ যারা গুম হয়েছেন, গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলামের হত্যা এবং অ্যাডভোকেট এম ইউ আহমেদসহ যারা পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছেন, সেসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়, শিশু ও নারী নির্যাতন, বিশ্বজিতের হত্যাকাণ্ড, সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ড, দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মা সেতুর জন্য বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন প্রত্যাহার, হলমার্ক, ডেসটিনি, শেয়ারবাজার, কুইক রেন্টাল কেলেঙ্কারি, শাসক দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনে সন্ত্রাস বাংলাদেশের কপালে কলঙ্কের তিলক এঁকে দিয়েছে। এই বিষয়গুলো শাহবাগে সমেবত তরুণসমাজের হৃদয় ও আবেগকে স্পর্শ করলে এবং তাদের উদ্বেগ ও প্রতিবাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে বর্তমানের আন্দোলন আরও মহিমান্বিত হতো। আমরা আশা করব, শাহবাগে সমবেত তরুণ-তরুণী দেশবাসীর এসব উদ্বেগ ও উত্কণ্ঠা ধারণ করবেন।’

‘আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, বিএনপি যদি নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে আসে, তাহলে বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে এবং অবশ্যই মানবতাবিরোধী অপরাধসহ সব ধরনের অপরাধের নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করবে।’

‘১৯৭১ সালে হানাদারমুক্ত হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের জনগণ বহুদলীয় গণতান্ত্রিক অধিকার, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, সুশাসনসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করে আসছে। এসব অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলেই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়িত হবে।’

‘বাংলাদেশের জনগণ বর্তমানে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছেন। আমরা বিশ্বাস করি, দেশের এই ক্রান্তিকালে গণতন্ত্রকে রক্ষা এবং অব্যাহত রাখার জন্য আগামী নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ। একমাত্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। তাই আমাদের সবার প্রত্যাশা, নতুন প্রজন্ম বহুদলীয় গণতন্ত্রকে রক্ষা এবং অব্যাহত রাখার জন্য একটি বলিষ্ঠ ভূমিকা গ্রহণ করবে।’

‘আজ সময় এসেছে, দেশের ভবিষ্যত্ প্রজন্মের স্বার্থে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক, শক্তিশালী, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার। বাংলাদেশের জনগণ এই স্বপ্নকে লালন করেই মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আমরা তরুণ প্রজন্মসহ দেশের সব মানুষের প্রতি আহ্বান জানাই।’

শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলনকারীদের স্বাগত জানিয়ে প্রকারন্তরে বিএনপি সালাউদ্দীন কাদের চৌধরী ও আব্দুল আলিম এর ফাঁসি চায়!

শাহবাগে ফাঁসির দাবিকে বিএনপির স্বাগত : আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে দলের স্থায়ী কমিটি! অন্ধকার প্রোকোষ্টের বাসিন্দাদের এভাবে মনে কষ্ট দেওয়া বিএনপির চরম হীন মানষিকতার পরিচয়!!

শাহবাগ আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি। সোমবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে শাহবাগে তরুণ প্রজন্মের পক্ষ থেকে তুলে ধরা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের ফাঁসির দাবিকে স্বাগত জানানো হয়। একই সঙ্গে দেশে চলমান লুট, দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক পুনর্বহালের দাবির আন্দোলনে যোগ দিতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। শাহবাগের সমাবেশ থেকে কিছু মিডিয়া ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দেয়া হুমকিকে অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে বিএনপি বলেছে, বহুদলীয় গণতন্ত্রে ভিন্ন মত ও পথের প্রতি এ ধরনের অসহিষ্ণুতা নৈরাজ্যকে অনিবার্য করে দেশকে গভীর সঙ্কটে নিপতিত করতে পারে। এটা কারও কাম্য হতে পারে না। রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে সব মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করার আশ্বাস দেয়া হয় বিএনপির বিবৃতিতে।

দলটির দফতরের দায়িত্বে নিয়োজিত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।

‘এক সপ্তাহ ধরে বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণী ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ফাঁসি প্রদানের দাবিতে ঢাকার শাহবাগে অবস্থান করছেন। তাদের সমাবেশে অবশ্য আরও কিছু অতিরিক্ত বিষয় নিয়ে প্রস্তাব পাঠ করা হয়েছে। দেশের তরুণ প্রজন্ম জাতির বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে আগ্রহী হবেন এবং যৌক্তিক ও কার্যকর অবস্থান নেবেন—এটাই কাঙ্ক্ষিত। তাই তারুণ্যের এ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।

সমাবেশ মঞ্চ থেকে সমাবেশটিকে দলনিরপেক্ষ বলে দাবি করলেও ক্রমান্বয়ে এটা প্রতীয়মান হচ্ছে, একটি বিশেষ রাজনৈতিক ঘরানার ব্যক্তিদের হাতেই এর নেতৃত্ব কুক্ষিগত করার প্রয়াস চলছে। সমাবেশ মঞ্চ থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময় বহুলভাবে উচ্চারিত একটি স্লোগান স্বাধীনতা-উত্তরকালে চরমভাবে দলীয়করণ করার ফলে যা সর্বজনগ্রাহ্যতা হারায়, সেই স্লোগান বারবার উচ্চারিত হওয়ার কারণে জনমনে চরম সংশয় এবং সমাবেশের নিরপেক্ষতা সম্পর্কে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সমাবেশের অরাজনৈতিক চরিত্রের পক্ষে দাঁড়ানোর কারণে এর একজন সুপরিচিত ছাত্রী উদ্যোক্তা দলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে নিগৃহীত হয়েছেন। এটি অত্যন্ত গর্হিত ও নিন্দনীয় ঘটনা।

‘জনগণ আজ ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। বিএনপি সর্বদা এই বিচারের পক্ষে। একই সঙ্গে বিচারটি যাতে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয়, বিএনপি সে দাবিও জানিয়ে আসছে। বিএনপির এই দাবির প্রতি সম্মান দেখালে বিচারটি প্রশ্নবিদ্ধ হতো না। উল্লেখ্য, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলও এই বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। একটি সভ্য রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে বাংলাদেশ কত ন্যায়নিষ্ঠভাবে মানবাধিকার ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে পারছে।’

‘দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা বিবেচনা করে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ বিচারকদের অনুরোধ জানিয়ে গোটা জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে সমাবেশ মঞ্চের ঘোষণা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অথচ মানবতাবিরোধীসহ যে কোনো অপরাধে অভিযুক্তদের যথাযথ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারপ্রধানের। বিচারকরা তাদের নিজস্ব মূল্যায়ন, যুক্তিতর্ক ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে স্বাধীনভাবে যদি রায় ঘোষণা করতে না পারেন, তা হলে সমগ্র বিচারিক প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে। এটা আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। শাহবাগের সমাবেশ থেকে কিছু মিডিয়া ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও অনাকাঙ্ক্ষিত হুমকি উচ্চারিত হয়েছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রে ভিন্ন মত ও পথের প্রতি এ ধরনের অসহিষ্ণুতা নৈরাজ্যকে অনিবার্য করে দেশকে গভীর সঙ্কটে নিপতিত করতে পারে। এটা কারও কাম্য হতে পারে না।’

‘তরুণ প্রজন্ম দেশের ভবিষ্যত্। তারা অন্যায়, অত্যাচার ও অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলবে, অবস্থান নেবে এবং প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবে—এটাই স্বাভাবিক। আমরা বিশ্বাস করি, তরুন-তরুণীরা সব ধরনের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধারণ করবে এবং এদেশে সংগঠিত মানবতাবিরোধী সব অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে।’

‘স্বাধীনতার অব্যবহিত পর পরই সিরাজ সিকদারসহ, অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও অগণিত তরুণ-তরুণী যেভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন এবং সাম্প্রতিককালে ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমসহ যারা গুম হয়েছেন, গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলামের হত্যা এবং অ্যাডভোকেট এম ইউ আহমেদসহ যারা পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছেন, সেসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়, শিশু ও নারী নির্যাতন, বিশ্বজিতের হত্যাকাণ্ড, সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ড, দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মা সেতুর জন্য বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন প্রত্যাহার, হলমার্ক, ডেসটিনি, শেয়ারবাজার, কুইক রেন্টাল কেলেঙ্কারি, শাসক দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনে সন্ত্রাস বাংলাদেশের কপালে কলঙ্কের তিলক এঁকে দিয়েছে। এই বিষয়গুলো শাহবাগে সমেবত তরুণসমাজের হৃদয় ও আবেগকে স্পর্শ করলে এবং তাদের উদ্বেগ ও প্রতিবাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে বর্তমানের আন্দোলন আরও মহিমান্বিত হতো। আমরা আশা করব, শাহবাগে সমবেত তরুণ-তরুণী দেশবাসীর এসব উদ্বেগ ও উত্কণ্ঠা ধারণ করবেন।’

‘আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, বিএনপি যদি নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে আসে, তাহলে বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে এবং অবশ্যই মানবতাবিরোধী অপরাধসহ সব ধরনের অপরাধের নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করবে।’

‘১৯৭১ সালে হানাদারমুক্ত হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের জনগণ বহুদলীয় গণতান্ত্রিক অধিকার, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, সুশাসনসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করে আসছে। এসব অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলেই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়িত হবে।’

‘বাংলাদেশের জনগণ বর্তমানে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছেন। আমরা বিশ্বাস করি, দেশের এই ক্রান্তিকালে গণতন্ত্রকে রক্ষা এবং অব্যাহত রাখার জন্য আগামী নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ। একমাত্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। তাই আমাদের সবার প্রত্যাশা, নতুন প্রজন্ম বহুদলীয় গণতন্ত্রকে রক্ষা এবং অব্যাহত রাখার জন্য একটি বলিষ্ঠ ভূমিকা গ্রহণ করবে।’

‘আজ সময় এসেছে, দেশের ভবিষ্যত্ প্রজন্মের স্বার্থে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক, শক্তিশালী, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার। বাংলাদেশের জনগণ এই স্বপ্নকে লালন করেই মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আমরা তরুণ প্রজন্মসহ দেশের সব মানুষের প্রতি আহ্বান জানাই।’

শাহবাগে ফাঁসির দাবিকে বিএনপির স্বাগত : আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে দলের স্থায়ী কমিটি! অন্ধকার প্রোকোষ্টের বাসিন্দাদের এভাবে মনে কষ্ট দেওয়া বিএনপির চরম হীন মানষিকতার পরিচয়!!

শাহবাগ আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি। সোমবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে শাহবাগে তরুণ প্রজন্মের পক্ষ থেকে তুলে ধরা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের ফাঁসির দাবিকে স্বাগত জানানো হয়। একই সঙ্গে দেশে চলমান লুট, দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক পুনর্বহালের দাবির আন্দোলনে যোগ দিতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। শাহবাগের সমাবেশ থেকে কিছু মিডিয়া ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দেয়া হুমকিকে অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে বিএনপি বলেছে, বহুদলীয় গণতন্ত্রে ভিন্ন মত ও পথের প্রতি এ ধরনের অসহিষ্ণুতা নৈরাজ্যকে অনিবার্য করে দেশকে গভীর সঙ্কটে নিপতিত করতে পারে। এটা কারও কাম্য হতে পারে না। রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে সব মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করার আশ্বাস দেয়া হয় বিএনপির বিবৃতিতে।

দলটির দফতরের দায়িত্বে নিয়োজিত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।

‘এক সপ্তাহ ধরে বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণী ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ফাঁসি প্রদানের দাবিতে ঢাকার শাহবাগে অবস্থান করছেন। তাদের সমাবেশে অবশ্য আরও কিছু অতিরিক্ত বিষয় নিয়ে প্রস্তাব পাঠ করা হয়েছে। দেশের তরুণ প্রজন্ম জাতির বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে আগ্রহী হবেন এবং যৌক্তিক ও কার্যকর অবস্থান নেবেন—এটাই কাঙ্ক্ষিত। তাই তারুণ্যের এ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।

সমাবেশ মঞ্চ থেকে সমাবেশটিকে দলনিরপেক্ষ বলে দাবি করলেও ক্রমান্বয়ে এটা প্রতীয়মান হচ্ছে, একটি বিশেষ রাজনৈতিক ঘরানার ব্যক্তিদের হাতেই এর নেতৃত্ব কুক্ষিগত করার প্রয়াস চলছে। সমাবেশ মঞ্চ থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময় বহুলভাবে উচ্চারিত একটি স্লোগান স্বাধীনতা-উত্তরকালে চরমভাবে দলীয়করণ করার ফলে যা সর্বজনগ্রাহ্যতা হারায়, সেই স্লোগান বারবার উচ্চারিত হওয়ার কারণে জনমনে চরম সংশয় এবং সমাবেশের নিরপেক্ষতা সম্পর্কে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সমাবেশের অরাজনৈতিক চরিত্রের পক্ষে দাঁড়ানোর কারণে এর একজন সুপরিচিত ছাত্রী উদ্যোক্তা দলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে নিগৃহীত হয়েছেন। এটি অত্যন্ত গর্হিত ও নিন্দনীয় ঘটনা।

‘জনগণ আজ ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। বিএনপি সর্বদা এই বিচারের পক্ষে। একই সঙ্গে বিচারটি যাতে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয়, বিএনপি সে দাবিও জানিয়ে আসছে। বিএনপির এই দাবির প্রতি সম্মান দেখালে বিচারটি প্রশ্নবিদ্ধ হতো না। উল্লেখ্য, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলও এই বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। একটি সভ্য রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে বাংলাদেশ কত ন্যায়নিষ্ঠভাবে মানবাধিকার ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে পারছে।’

‘দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা বিবেচনা করে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ বিচারকদের অনুরোধ জানিয়ে গোটা জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে সমাবেশ মঞ্চের ঘোষণা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অথচ মানবতাবিরোধীসহ যে কোনো অপরাধে অভিযুক্তদের যথাযথ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারপ্রধানের। বিচারকরা তাদের নিজস্ব মূল্যায়ন, যুক্তিতর্ক ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে স্বাধীনভাবে যদি রায় ঘোষণা করতে না পারেন, তা হলে সমগ্র বিচারিক প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে। এটা আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। শাহবাগের সমাবেশ থেকে কিছু মিডিয়া ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও অনাকাঙ্ক্ষিত হুমকি উচ্চারিত হয়েছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রে ভিন্ন মত ও পথের প্রতি এ ধরনের অসহিষ্ণুতা নৈরাজ্যকে অনিবার্য করে দেশকে গভীর সঙ্কটে নিপতিত করতে পারে। এটা কারও কাম্য হতে পারে না।’

‘তরুণ প্রজন্ম দেশের ভবিষ্যত্। তারা অন্যায়, অত্যাচার ও অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলবে, অবস্থান নেবে এবং প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবে—এটাই স্বাভাবিক। আমরা বিশ্বাস করি, তরুন-তরুণীরা সব ধরনের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধারণ করবে এবং এদেশে সংগঠিত মানবতাবিরোধী সব অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে।’

‘স্বাধীনতার অব্যবহিত পর পরই সিরাজ সিকদারসহ, অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও অগণিত তরুণ-তরুণী যেভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন এবং সাম্প্রতিককালে ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমসহ যারা গুম হয়েছেন, গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলামের হত্যা এবং অ্যাডভোকেট এম ইউ আহমেদসহ যারা পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছেন, সেসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়, শিশু ও নারী নির্যাতন, বিশ্বজিতের হত্যাকাণ্ড, সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ড, দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মা সেতুর জন্য বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন প্রত্যাহার, হলমার্ক, ডেসটিনি, শেয়ারবাজার, কুইক রেন্টাল কেলেঙ্কারি, শাসক দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনে সন্ত্রাস বাংলাদেশের কপালে কলঙ্কের তিলক এঁকে দিয়েছে। এই বিষয়গুলো শাহবাগে সমেবত তরুণসমাজের হৃদয় ও আবেগকে স্পর্শ করলে এবং তাদের উদ্বেগ ও প্রতিবাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে বর্তমানের আন্দোলন আরও মহিমান্বিত হতো। আমরা আশা করব, শাহবাগে সমবেত তরুণ-তরুণী দেশবাসীর এসব উদ্বেগ ও উত্কণ্ঠা ধারণ করবেন।’

‘আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, বিএনপি যদি নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে আসে, তাহলে বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে এবং অবশ্যই মানবতাবিরোধী অপরাধসহ সব ধরনের অপরাধের নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করবে।’

‘১৯৭১ সালে হানাদারমুক্ত হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের জনগণ বহুদলীয় গণতান্ত্রিক অধিকার, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, সুশাসনসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করে আসছে। এসব অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলেই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়িত হবে।’

‘বাংলাদেশের জনগণ বর্তমানে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছেন। আমরা বিশ্বাস করি, দেশের এই ক্রান্তিকালে গণতন্ত্রকে রক্ষা এবং অব্যাহত রাখার জন্য আগামী নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ। একমাত্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। তাই আমাদের সবার প্রত্যাশা, নতুন প্রজন্ম বহুদলীয় গণতন্ত্রকে রক্ষা এবং অব্যাহত রাখার জন্য একটি বলিষ্ঠ ভূমিকা গ্রহণ করবে।’

‘আজ সময় এসেছে, দেশের ভবিষ্যত্ প্রজন্মের স্বার্থে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক, শক্তিশালী, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার। বাংলাদেশের জনগণ এই স্বপ্নকে লালন করেই মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আমরা তরুণ প্রজন্মসহ দেশের সব মানুষের প্রতি আহ্বান জানাই।’

শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলনকারীদের স্বাগত জানিয়ে প্রকারন্তরে বিএনপি সালাউদ্দীন কাদের চৌধরী ও আব্দুল আলিম এর ফাঁসি চায়!

শাহবাগে ফাঁসির দাবিকে বিএনপির স্বাগত : আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে দলের স্থায়ী কমিটি! অন্ধকার প্রোকোষ্টের বাসিন্দাদের এভাবে মনে কষ্ট দেওয়া বিএনপির চরম হীন মানষিকতার পরিচয়!!

শাহবাগ আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি। সোমবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে শাহবাগে তরুণ প্রজন্মের পক্ষ থেকে তুলে ধরা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের ফাঁসির দাবিকে স্বাগত জানানো হয়। একই সঙ্গে দেশে চলমান লুট, দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক পুনর্বহালের দাবির আন্দোলনে যোগ দিতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। শাহবাগের সমাবেশ থেকে কিছু মিডিয়া ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দেয়া হুমকিকে অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে বিএনপি বলেছে, বহুদলীয় গণতন্ত্রে ভিন্ন মত ও পথের প্রতি এ ধরনের অসহিষ্ণুতা নৈরাজ্যকে অনিবার্য করে দেশকে গভীর সঙ্কটে নিপতিত করতে পারে। এটা কারও কাম্য হতে পারে না। রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে সব মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করার আশ্বাস দেয়া হয় বিএনপির বিবৃতিতে।

দলটির দফতরের দায়িত্বে নিয়োজিত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।

‘এক সপ্তাহ ধরে বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণী ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ফাঁসি প্রদানের দাবিতে ঢাকার শাহবাগে অবস্থান করছেন। তাদের সমাবেশে অবশ্য আরও কিছু অতিরিক্ত বিষয় নিয়ে প্রস্তাব পাঠ করা হয়েছে। দেশের তরুণ প্রজন্ম জাতির বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে আগ্রহী হবেন এবং যৌক্তিক ও কার্যকর অবস্থান নেবেন—এটাই কাঙ্ক্ষিত। তাই তারুণ্যের এ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।

সমাবেশ মঞ্চ থেকে সমাবেশটিকে দলনিরপেক্ষ বলে দাবি করলেও ক্রমান্বয়ে এটা প্রতীয়মান হচ্ছে, একটি বিশেষ রাজনৈতিক ঘরানার ব্যক্তিদের হাতেই এর নেতৃত্ব কুক্ষিগত করার প্রয়াস চলছে। সমাবেশ মঞ্চ থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময় বহুলভাবে উচ্চারিত একটি স্লোগান স্বাধীনতা-উত্তরকালে চরমভাবে দলীয়করণ করার ফলে যা সর্বজনগ্রাহ্যতা হারায়, সেই স্লোগান বারবার উচ্চারিত হওয়ার কারণে জনমনে চরম সংশয় এবং সমাবেশের নিরপেক্ষতা সম্পর্কে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সমাবেশের অরাজনৈতিক চরিত্রের পক্ষে দাঁড়ানোর কারণে এর একজন সুপরিচিত ছাত্রী উদ্যোক্তা দলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে নিগৃহীত হয়েছেন। এটি অত্যন্ত গর্হিত ও নিন্দনীয় ঘটনা।

‘জনগণ আজ ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। বিএনপি সর্বদা এই বিচারের পক্ষে। একই সঙ্গে বিচারটি যাতে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয়, বিএনপি সে দাবিও জানিয়ে আসছে। বিএনপির এই দাবির প্রতি সম্মান দেখালে বিচারটি প্রশ্নবিদ্ধ হতো না। উল্লেখ্য, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলও এই বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। একটি সভ্য রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে বাংলাদেশ কত ন্যায়নিষ্ঠভাবে মানবাধিকার ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে পারছে।’

‘দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা বিবেচনা করে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ বিচারকদের অনুরোধ জানিয়ে গোটা জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে সমাবেশ মঞ্চের ঘোষণা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অথচ মানবতাবিরোধীসহ যে কোনো অপরাধে অভিযুক্তদের যথাযথ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারপ্রধানের। বিচারকরা তাদের নিজস্ব মূল্যায়ন, যুক্তিতর্ক ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে স্বাধীনভাবে যদি রায় ঘোষণা করতে না পারেন, তা হলে সমগ্র বিচারিক প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে। এটা আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। শাহবাগের সমাবেশ থেকে কিছু মিডিয়া ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও অনাকাঙ্ক্ষিত হুমকি উচ্চারিত হয়েছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রে ভিন্ন মত ও পথের প্রতি এ ধরনের অসহিষ্ণুতা নৈরাজ্যকে অনিবার্য করে দেশকে গভীর সঙ্কটে নিপতিত করতে পারে। এটা কারও কাম্য হতে পারে না।’

‘তরুণ প্রজন্ম দেশের ভবিষ্যত্। তারা অন্যায়, অত্যাচার ও অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলবে, অবস্থান নেবে এবং প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবে—এটাই স্বাভাবিক। আমরা বিশ্বাস করি, তরুন-তরুণীরা সব ধরনের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধারণ করবে এবং এদেশে সংগঠিত মানবতাবিরোধী সব অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে।’

‘স্বাধীনতার অব্যবহিত পর পরই সিরাজ সিকদারসহ, অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও অগণিত তরুণ-তরুণী যেভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন এবং সাম্প্রতিককালে ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমসহ যারা গুম হয়েছেন, গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলামের হত্যা এবং অ্যাডভোকেট এম ইউ আহমেদসহ যারা পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছেন, সেসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়, শিশু ও নারী নির্যাতন, বিশ্বজিতের হত্যাকাণ্ড, সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ড, দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মা সেতুর জন্য বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন প্রত্যাহার, হলমার্ক, ডেসটিনি, শেয়ারবাজার, কুইক রেন্টাল কেলেঙ্কারি, শাসক দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনে সন্ত্রাস বাংলাদেশের কপালে কলঙ্কের তিলক এঁকে দিয়েছে। এই বিষয়গুলো শাহবাগে সমেবত তরুণসমাজের হৃদয় ও আবেগকে স্পর্শ করলে এবং তাদের উদ্বেগ ও প্রতিবাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে বর্তমানের আন্দোলন আরও মহিমান্বিত হতো। আমরা আশা করব, শাহবাগে সমবেত তরুণ-তরুণী দেশবাসীর এসব উদ্বেগ ও উত্কণ্ঠা ধারণ করবেন।’

‘আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, বিএনপি যদি নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে আসে, তাহলে বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে এবং অবশ্যই মানবতাবিরোধী অপরাধসহ সব ধরনের অপরাধের নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করবে।’

‘১৯৭১ সালে হানাদারমুক্ত হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের জনগণ বহুদলীয় গণতান্ত্রিক অধিকার, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, সুশাসনসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করে আসছে। এসব অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলেই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়িত হবে।’

‘বাংলাদেশের জনগণ বর্তমানে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছেন। আমরা বিশ্বাস করি, দেশের এই ক্রান্তিকালে গণতন্ত্রকে রক্ষা এবং অব্যাহত রাখার জন্য আগামী নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ। একমাত্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। তাই আমাদের সবার প্রত্যাশা, নতুন প্রজন্ম বহুদলীয় গণতন্ত্রকে রক্ষা এবং অব্যাহত রাখার জন্য একটি বলিষ্ঠ ভূমিকা গ্রহণ করবে।’

‘আজ সময় এসেছে, দেশের ভবিষ্যত্ প্রজন্মের স্বার্থে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক, শক্তিশালী, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার। বাংলাদেশের জনগণ এই স্বপ্নকে লালন করেই মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আমরা তরুণ প্রজন্মসহ দেশের সব মানুষের প্রতি আহ্বান জানাই।’

বিষয়: বিবিধ

১০৫৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File