***কিছু কথা যা আপনার অপ্রিয়ও হতে পারে***
লিখেছেন লিখেছেন egypt12 ২০ জুলাই, ২০১৪, ০৯:২১:২৪ রাত
বান কি মুন এসে এভাবেই ইসরায়েলয়ের গায়ে লেগে থাকা রক্ত গুলো ধুয়ে দেবে...আর আমরা কে শিয়া কে সুন্নি আর কে কত কারনে কাফের এটা নিয়ে তর্কে লিপ্ত থাকব...
আসুন তবে শুরু করিঃ-
A: আসসালামুআলাইকুম।
B: ওয়াআলাইকুম আসসালাম।
B: তো ভাই কেমন আছেন?
A: ভালো নেই ভাই।
B: কেন ভাই কারণ কি?
A: দেখছেন না গাজায় ইসরায়েল কিভাবে মুসলিম মারছে!?
B: হুম আমাদের কিছু করা উচিত।
A: ঠিক বলেছেন ভাই সব মুসলিম কিছু করা উচিত ইরানের মত কাফের শিয়ারা ছাড়া।
B: কি বলেন ভাই সব মুসলিম অবশ্যই কিছু করবে তবে সৌদি আর তুরস্কের মত সালাফি ও ওহাবিরা বাদে।
A: ধুর ভাই আপনি দেখি কাফেরের মত কথা বলছেন ইরানের মত বাতেল ফেরকার পক্ষে কথা বলছেন!?
B: বস্তুত আপনি নিজেই কাফের আপনার চৌদ্দগোষ্ঠী কাফের মুরতাদ।
A: কি বললি! (পাথর নিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়া হল)।
B: কি তুই আমার মাথা ফাটালি নে তুইও মর (ছুরি মেরে দেয়া হল)।
(অতপর দুজনই জাহান্নামে চলে গেল তওবার সুযোগ না পেয়ে)
কিন্তু তাদের একই পদ্দতিতে জানাজা পড়িয়ে কবর দেয়া হল!!!
এটাই বর্তমান মুসলিমদের অবস্থা...
আরে ভাই গাল ভরা বুলিতে তো বলি ১৫০ কোটি মুসলিম বাস করে সারা বিশ্বে কিন্তু যদি একে অপর কে ভাগ করতে থাকি তবে কি দাঁড়াবে দেখিঃ-
১. শিয়া ২. সুন্নি ৩. হানাফি ৪. হাম্বলি ৫. মালেকি ৬.শাফেয়ি ৭. আরও অনেক পথ মত।
এটা তো গেল আকিদা ও বিশ্বাস গত এবার আসি বৃহত্তর আঞ্চলিকা গত বিভক্তি-
১. আরব ২. আফ্রিকান ৩. এশিয়ান ৪. ইউরোপীয় ৫. উত্তর আমেরিকান ৬. দক্ষিন আমেরিকান।
এবার আসি দেশ ভিত্তিকঃ-
১. আফগান ২. বাংলাদেশী...অসংখ্য বিভক্তি।
তাই আরাকান পুড়লে বাংলাদেশীদের কিছু যায় আসে না, চেচনিয়া পুড়লে কারো কিছু যায় আসে না, জিংজিয়ানে মুসলিম মরলে কারো ভ্রুক্ষেপ নেই, থাইল্যান্ডেও একই বস্তুত সবখানেই একই চিত্র।
আর ইরাক, সিরিয়াতে মুসলিম একে অপরকে জাহান্নামে পাঠাচ্ছে আর সবাই নিজ নিজ আকিদাগত স্বার্থে এসব আগুনে ঘি ঢেলে যাচ্ছে।
ফলে কি হচ্ছে!?
আমার চোখে শুধু বাংলাদেশিরা মুসলিম আপনার চোখে শুধু ইরানিরা বা তুর্কীরা মুসলিম আবার আমার চোখে সুন্নিরা মুসলিম আবার আপনার চোখে শিয়ারা। এতে করে আমরা শত শত খণ্ডে বিভক্ত জাতিতে পরিণত হচ্ছি যদিও আমরা;
১. আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস করি।
২. রাসুলের খাতমে নব্যুয়তে বিশ্বাস করি।
৩. ফেরেস্তায় বিশ্বাস করি।
৪. পূর্ব নবী রাসুলগনে বিশ্বাস করি।
৫. কোরআনে বিশ্বাস করি।
৬. সুন্নায় বিশ্বাস করি।
৭. আখিরাতে বিশ্বাস করি।
৮. পরকালীন বিচারে বিশ্বাস করি।
তবুও আমরা কেন জানি নিজ নিজ অন্তর হতে ঐক্যের ব্যাপারে দ্বিধা বিভক্ত। তাই আমরা সৌদি বাদশাহদের নীতির বিরোধিতা করতে গিয়ে পুরো সৌদি আরবের জনগণের গায়ে দোষ চাপাই; সেক্যুলার সাদ্দামের দোষ ধরতে গিয়ে সব সুন্নি ইরাকিকে দোষ দিয়ে বসি, সেক্যুলার বাশারের দোষ ধরতে গিয়ে বা ইরানের সমালোচনা করতে দিয়ে সব শিয়াকেই এক কাতারে এনে গালি দেই।
আসলে আমাদের কারো কাছেই কোন প্রকার সহনশীলতা নেই। ওটা যেন ভিন গ্রহের কোন আজব বস্তুতে পরিণত হয়েছে।
আর বিপরীতে আমাদের শত্রুরা সব আমাদের ঘায়েল করতে ঐক্যবদ্ধ। আমেরিকা, ইউ, রাশিয়া, চায়না, মায়ানমার, থাইল্যান্ড সব খানেই আমাদের মুসলিম ভাইদের জবাই করা হচ্ছে। আর আমরা আছি সেই একই বাহাসে কে কত কারনে কাফের আর বাতিল!
বস্তুত ১৫০ কোটি মুসলিম বিশ্বে নেই আছে ১৫০ কোটি একত্ববাদীর শত মতের শ্রেণী। যেমন প্রাইভেট স্কুল কলেজে ৩৫-৪০ জন নিয়ে গঠিত এ সেকশন বি সেকশন থাকে তাদের মাঝে প্রতিযোগিতা হয় খেলা হয় মারামারি হয় আর আমাদের শত্রুরা পড়ে পাবলিক স্কুল ও কলেজে যেখানে এক ক্লাসের ছাত্র ১০০-১৫০ হয়।
আল্লাহ আমাদের সীসাঢালা ঐক্যের কথা বলেছেন আর আমরা আছি বালির মত অনৈক্যে। আল্লাহ আমাদের বলেছেন জমিনের কথা আর আমরা আছি ভূখণ্ডগত জাতীয়তাবাদের গভীর খাদে। আল্লাহ আমাদের মুসলিম হয়ে মরতে বলেছেন আর আমরা মরছি শিয়া-সুন্নি-সালাফি-ওহাবী হয়ে।
এবার বলুন আমরা যে আল্লাহর নির্দেশের বিরুদ্ধচারন করছি আল্লাহ কি আমাদের শাস্তি দেবেন না!? অবশ্যই দেবেন এজন্যই জন্ম হয়েছে ফিলিস্তিন, চেচনিয়া, কাশ্মীর, আরাকান, আফগান, ইরাক, সিরিয়া, কুর্দিস্তান ও জিনাজিয়ানের মত শিক্ষা ক্ষেত্রের তবুও আমদের হুঁশ নেই। কারণ আমরা আপন মত ও পথের বিজয় চাইতে গিয়ে বেহুঁশ হয়ে আছি। তাই আমি শিয়া সুন্নি পার্থক্য করলেও শত্রুর বুলেট টা করেনা কারন শত্রুর বুলেটও জানে আমরা মুসলিম। শুধু আমরাই জানিনা আমরা এক আল্লাহ, এক কোরআন, এক রাসুলের অনুসারী মুসলিম।
এসো ভাই সব ভেদাভেদ ভুলে মুসলিম হই, ভুলে যাই মানচিত্রের সীমাবদ্ধতা। আল্লাহর জমিনে শান্তি আনি এক কালেমার নিশান তলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে। ইরাক, ইরান, আফগান, বাংলাদেশ, বসনিয়া, চেচনিয়া, ফিলিস্তিন, ভারত, বার্মা, চায়না, রাশিয়া, আমেরিকা এবং সবই আমার জমিন কারণ আল্লাহ কোন দেশের কথা বলেননি বলেছেন তার জমিনের কথা। বার বার বলেছেন তোমরা আমার জমিনে ফ্যাসাদ করে বেড়াইও না। আসুন ঐক্যবদ্ধ হই ফ্যাসাদ ছাড়ি আর জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে সকল আঘাতের পাল্টা জবাব দিয়ে মহা সাফল্যের পথে এগিয়ে যাই; নতুবা এভাবেই একে অপরের কাঁটা হয়ে একে অপরের বুকে বিদ্ধ হয়ে কাপুরুষের ও দোজখীর মৃত্যু আলিঙ্গন করি। পথ দুটোই ঐক্য বা বিভক্তি- জয় বা পরাজয়।
২০.০৭.১৪
বিষয়: রাজনীতি
১৪৮২ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
youtube]_-rSguB1MVw[/youtube]
ঐক্যের অভাব আর নিজের মতের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি আমাদের এই অবস্থার প্রধান কারন।
বিভেদ নিয়ে পরে আলোচনা হবে৷
ধন্যবাদ এক্যের কামমনায় লেখা পোষ্টটি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন