আমরা কেমন মুসলমান ?
লিখেছেন লিখেছেন ডিকটেটর ১৯ এপ্রিল, ২০১৩, ০৪:১২:১০ রাত
একটা ছোট্ট পুরাতন গল্প দিয়ে শুরু করা যাক ।
যদি এক পুরুষ লোক তার স্ত্রীকে তাঁর দৈহিক চাহিদা পূরণ করার জন্য বলে।আর এতে স্ত্রী বিরক্ত হয়ে যদি বলে আমি তোমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি , কিন্তু বিবাহেরদিনে যখন কবুল বলি তখন তো এ রকম কোন শর্ত ছিলনা যে তোমার চাহিদা পূরণ করতে হবে ।
বলুন তো এমন পরিস্থিতিতে স্বামীর কি করণীয় ?
ঠিক এমন পরিস্থিতিতে বুদ্ধিমান স্বামী বলতেই পারেযেদিন আমি তোমাকে বিবাহ করেছি সেদিন তো আমি বলিনি আমিতোমাকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসবো , তোমাকে ভরণপোষন দিব,স্ত্রী হিসেবে তোমার যে চাওয়া পাওয়া তা পূরণ করবো ।
সম্মানিত পাঠক , উপরের এই ছোট্ট উপমায় আশা করি অন্তত এতটুকু বুঝতে পেরেছেন যে , অনেক সময় অনেক কিছুই উল্লেখ করা হয়না কিন্তু তা উল্লেখ নাকরার কারণে যে তা অত্যন্ত দূর্বল প্রকৃতির হবে তা মোটেই বলা যাবেনা ।
অনেক সময় এমন হয় যে উল্লেখ না করলেও উল্লেখকৃত বিষয়ের চাইতে এই অনুল্লেখিত বিষয়ই বেশী গুরুত্বের দাবিদার । যেমন বিবাহে কবুলের সময় স্ত্রীর প্রতি স্বামীর যেমন শারীরিক সম্পর্কের কথা বা ভরণ পোষনের কথা উল্লেখ করা নাহলেও বিবাহের মূখ্য উদ্দেশ্যঐ গুলিই ।
এখন মূলকথায় আসা যাক ।
আল্লাহপাক আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন একটি উদ্দেশ্য নিয়েই , আর হল একমাত্র তাঁরই ইবাদত করা,তাঁর দাসত্ব করা , দুনিয়াতে তাঁর প্রদত্ত জীবন ব্যবস্থা তথা ইসলামকে জমিনে প্রতিষ্ঠাকরা ।
যদি আপনাকে বলা হয় , আপনি কি মুসলমান ? উত্তরে বলবেন , অবশ্যই ,কেন নয় ? কারণ আমি কলেমা পড়ে একমাত্র আল্লাহর উপরই বিশ্বাস স্থাপন করছি তথা ঈমান এনেছি ।
আবার যদি বলি , আপনি যেহেতু মুসলিম হিসেবে দাবি করেছেন তবে ইসলামের মৌলিক বিষয় নামাজ , রোযা ,হজ্জ্ব , যাকাত প্রদান করে থাকেন , তাই না ? এখানে উত্তর আসবে ,হ্যাঁ ।
তাহলে আপনি যদি নিজেকে প্রকৃত মুসলমান হিসেবে দাবি করেন তবে আল্লাহর দ্বীন কে তাঁর জমীনে প্রতিষ্ঠিত করাও আপনার দায়িত্ব। আমাদের যত বিপত্তি এখানেই । কেন আপনার এমন দ্বি-মুখী
নীতি । আপনি নিজেকে মুসলিম হিসেবে দাবি করেন , ইসলামের মৌলিক বিষয় মেনে চলেন কিন্তু ধর্ম প্রতিষ্ঠার কথা বললেই আপনার এত খোঁড়া অজুহাত
কেন ?
একদিকে ধর্মকে ব্যক্তি জীবনেমানবেন আবার রাষ্ট্টীয় জীবনেপ্রতিষ্ঠার কথা বললেই বিরোধিতা করবেন এ আবার আপনার কেমন মুসলমানিত্ব । আল্লাহ পাক তো আদেশ করেছেন , যে ধর্মকে মানতে হলে পুরাপুরি মানতে হবে। অর্থাত্ দ্বীনেরভিতর পুরাপুরি প্রবেশ করতে হবে ।
অনেক গবাদি বলেন দ্বীন তার ব্যক্তিগত বিষয় । হ্যাঁ , তাদের কথা ঠিক হতে পারে। অন্যধর্মের কথা বলতে পারবনা , তাই ঐ প্রকার গবাদিও বুলি অন্য ধর্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও হতে পারে। ইসলাম ধর্মে একথা শুন্য ভাগও প্রযোজ্য নয় ।কারণ ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা ।
আপনি যদি বলেন , দ্বীন একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় তবে আপনি মহাগ্রন্থ আল কুরআনকেই অস্বীকার করলেন । কেননা স্বয়ং কুরআনে ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে ঘোষনা করা হয়েছে ।
আমরা অনেকেই এ সব জেনেও ব্যক্তিগত স্বার্থে অনেক সময়কুরআনকে অমান্য করি ।
একটা সংক্ষিপ্ত ঘটনার মাধ্যমে বিষয়টা পরিস্কার করাযাক ।
একজন আমাকে বললেন (তিনি গ্রামসম্পর্কে আমার দাদা হন )যে ইসলামী দল গুলোকে কোন ভোট দেয়া যাবেনা ।আমি বললাম কেন দাদা ? তিনি বললেন ওরা ক্ষমতায় আসলে বিভিন্ন প্রকার টাকা ,খাজনা আরোপ করবে । আমি বললাম , কেমন ? তিনি বললেন এই ধর উশর , যাকাত সহ আরোও অন্যান্য নামে বেনামে অনেক খাজনা আরোপ করবে ।
আমি বললাম ,উশর ,যাকাত এগুলো তো ইসলামী আইন মোতাবেকই তো দেওয়া উচিত ।তাই তারা চাইবে যা মুসলমান হিসেবে আমাদের কে দিতেই হবে ।তিনি বললেন , হ্যাঁ আর এ জন্যইতো ওদের কে ভোট দেওয়া যাবেনা । আমার জানা মতে তিনি ইসলামেরসব মৌলিক বিষয় গুলো মেনে চলেন।
তাহলে এই যদি হয় আমাদের ইসলামকে মান্য করার চেহারা । তবে এই সামান্য পার্থিব অর্থ ও সম্পদের জন্য পরকালে আমাদের কে অবশ্যই কঠিন শাস্তিতে পতিত হতে হবে ।
পরিশেষে প্রথমগল্পের আলোকে বলতে পারি, দ্বীনকে সঠিক ভাবে মানতে হলে তা আমাদেরকে রাষ্ট্রীয় জীবনেও প্রতিষ্ঠা করার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে ।উল্লেখিত বিষয় ও অনুল্লেখিতউভয় বিষয় উভয় কে সমান গুরুত্বদিতে হবে । "সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ" নীতি পরিহার করতেহবে ।আর যারা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠার মহা আঞ্জামে ব্যস্ত আছেন তাদের কে সর্বাত্মক সহযোগিতার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্ট অর্জন করতে হবে ।
আল্লাহ আমাদের কে সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করুন ।
আমিন ।
বিষয়: বিবিধ
১৯৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন