ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা ভবিষ্যতে যে রায়ই দেবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে’

লিখেছেন লিখেছেন রাহিম ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০১:০৩:৫৬ দুপুর

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিষয়ে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশের বিরুদ্ধে সরকারের আপিল করার সুযোগ নেই বলে মনে করছেন বিশিষ্ট আইনজীবীরা। তারা বলেন, কাদের মোল্লাকে যে অপরাধের বিষয়ে খালাস দেয়া হয়েছে, সরকার ইচ্ছা করলে তার বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে। আলোচনায় অংশ নেন প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক এবং ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। তবে টকশোতে টেলিফোনে অংশ নিয়ে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিমের প্রধান সমন্বয়কারী এম কে রহমান বলেছেন, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সরকার খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিরুদ্ধেও সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিলের সুযোগ রয়েছে। টেলিফোনে অংশ নিয়ে ট্রাইব্যুনালের ডিফেন্স টিমের প্রধান সমন্বয়কারী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, ট্রাইব্যুনালে সরকারপক্ষের একজন সাক্ষীও বলেননি যে আবদুল কাদের মোল্লাকে তিনি অপরাধ করতে দেখেছেন। সবাই শোনা কথার ওপর ভিত্তি করেই জবানবন্দি দিয়েছেন। আমরা এ রায়কে যৌক্তিক মনে করি না বিধায় এর বিরুদ্ধে আপিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গতকাল সন্ধ্যায় দিগন্ত টেলিভিশনে টকশোতে অংশ নিয়ে তারা এ মতামত দেন।

রফিক-উল হক : আবদুল কাদের মোল্লাকে দেয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় প্রত্যাখ্যান করে তার ফাঁসির দাবিতে সরকারি দলের আন্দোলন ও বিক্ষোভের বিষয়ে প্রথিতযশা আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বলেন, আইন ও আদালতকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দেয়া উচিত। আন্দোলন, বিক্ষোভ ও সংগ্রাম করে আদালতের ওপর চাপ সৃষ্টি করা মোটেও কাম্য নয়। তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনাল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন। সরকারি দল এখন তার ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করছে। ওই বিক্ষোভে কেন্দ্রীয় নেতারা এমনকি মন্ত্রীরাও গিয়ে ফাঁসির দাবিতে বক্তব্য দিচ্ছেন। সামনে আরও মামলার রায় অপেক্ষমাণ। এ অবস্থায় ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের কাছে একটি মেসেজ যাচ্ছে। সামনে যদি কাউকে ফাঁসি দেয়া হয়, তাহলে এটা মনে করা খুবই স্বাভাবিক হবে যে, বিচারকরা সরকারি দলের নেতা ও মন্ত্রীদের ভয়ে এই রায় দিয়েছেন। মন্ত্রী ও সরকারি দলের কেন্দ্রীয় নেতারা যেভাবে রাস্তায় নেমেছেন, তাতে বিচারকদের ঘাড়ে কয়টি মাথা যে তারা ফাঁসি ছাড়া অন্য রায় দেবেন? কাজেই আমি বলব, ফাঁসির দাবিতে যারা আন্দোলন করছেন এমনকি ট্রাইব্যুনাল বাতিলের দাবিতেও যারা আন্দোলন করছেন, তারা ঠিক কাজটি করছেন না। এতে করে দেশ ভয়ানক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা কারও জন্যই কাম্য হতে পারে না। আইনকে তার নিজস্ব গতিতেই চলতে দেয়া উচিত।

তিনি বলেন, সরকার যে উদ্দেশ্যেই আদালত গঠন করুক না কেন, বিচারকরা ‘নিউট্রাল’ বিচার করবেন— এটাই জাতি প্রত্যাশা করে। Thumbs Up Thumbs Up

বিষয়: বিবিধ

৮০১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File