যুদ্ধাপরাধের নিরপেক্ষ বিচার দাবি জাতিসঙ্ঘের
লিখেছেন লিখেছেন ক্ষেপনাস্ত্র ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১১:১৩:৫৬ রাত
জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকারবিষয়ক দুজন বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাম্প্রতিক শাস্তিদানের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়ে বলেছে। এতে বলা হয়েছে, মৃত্যুদণ্ডাদেশসহ যে রায় দেয়া হয়েছে তা যথাযথ প্রক্রিয়ায় হয়নি। জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার অফিস এই অভিযোগ করেছে বলে ইউএন নিউজ সেন্টার বৃহস্পতিবার তাদের ওয়েবসাইটে এখবর প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সম্প্রতি আবুল কালাম আযাদের অনুপস্থিতিতে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। কিন্তু এই বিচার কার্যক্রমে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ন্যায়বিচার করা হয়নি। জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার অফিস জানায়, ৫ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। আরো কয়েকটি মামলার বিচারপ্রক্রিয়া চলছে এবং এতে এই ঝুঁকি রয়েছে যে, তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হতে পারে। বিচারবর্হিভূত, সংক্ষিপ্ত বা স্বেচ্ছাচারমূলক দণ্ডাদেশবিষয়ক জাতিসঙ্ঘ স্পেশাল র্যাপোটিয়ার ক্রিস্টফ হেইনস এবং নিরপেক্ষ বিচারক ও আইনজীবীবিষয়ক স্পেশাল র্যাপোটিয়ার গ্যাবিয়েলা নাউল বলেন, এসব বিচারের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনুধাবন করে এবং সম্ভাব্য মৃত্যুদণ্ড প্রযোগের বিষয়টি মাথায় রেখে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, ট্রাইব্যুনালের সামনে আসা সব আসামি নিরপেক্ষ বিচার পাবে। বিশেষজ্ঞ দুজন বলেন, অতীতের মারাত্মক অপরাধ সুরাহার জন্য এই ট্রাইব্যুনাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ন্যায়বিচার ও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণের মৌলিক উপাদান এতে থাকতেই হবে। হেইনস যে মামলার কার্যক্রমের মাধ্যমে আযাদকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে, তার নিরপেক্ষ বিচার ও যথাযথ প্রক্রিয়া নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, যেসব ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়, সেখানে আন্তর্জাতিক নিয়ম হলো অত্যন্ত কঠোরভাবে ন্যায়বিচার হতে হবে এবং যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। তিনি বলেন, ইন্টারন্যাশনাল কোভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস-এ স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ তখনই কাউকে মৃত্যুদণ্ড দিতে পারবে, যখন নিরপেক্ষ বিচার ও যথাযথপ্রক্রিয়া সম্ভব সর্বোচ্চভাবে মেনে চলবে। জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক অপর র্যাপোটিয়ার গ্যাবিয়েলা নাউল ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের নিরপেক্ষতা ও কৌঁসুলিদের নিরপেক্ষতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি নির্বাহী বিভাগ থেকে তাদের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, আসামিপক্ষের সাক্ষী ও আইনজীবীরা বৈরী পরিবেশ, ভীতিপ্রদর্শন ও হয়রানির অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, অন্তত এতটুকু যথাযথ প্রক্রিয়া প্রয়োজন যাতে আসামিরা বিনা বাধায় তাদের আইনজীবীদের সাথে কথা বলতে পারেন, তাদের আইনি প্রস্তুতি নিতে পারেন এবং তাদের পক্ষে সাক্ষী দিতে সাক্ষীদের ডেকে নিতে পারেন। বিচারপ্রক্রিয়ার অংশ সমান অধিকার পাওয়ার নীতিমালাও নিশ্চিত করতে হবে। তারা উভয়ে বলেন, যেকোনো আপিলের ক্ষেত্রে বিচারপ্রক্রিয়ার সব ধরনের ত্রুটিগুলো সতর্কভাবে পরীক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে যেখানে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিধান রয়েছে, সেখানে নিরপেক্ষ বিচারের নিশ্চয়তার নির্দেশনা মেনে চলবে।
নয়া দিগন্ত অনলাইন
http://www.dailynayadiganta.com/new/?p=112253
বিষয়: বিবিধ
৯৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন