বিশ্বজিতের দেহ থেকে বেড়িয়েছে মানুষের রক্ত; আর নিহত জামাত কর্মীর দেহ থেকে যা পরছে তা শুধুই গংগার জল..!
লিখেছেন লিখেছেন চারুকলাইনষ্টিটিউট ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৭:৫২:৩২ সকাল
অতি সাম্প্রতিক সময়ের দুটি প্রাণহানি
আর লুটিয়ে পরা ১৯ টি তাজা লাশ এর ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় -
আমাদের জাতীয় বিবেক, সমগ্র সংবাদ মাধ্যমসমূহ,মানবাধিকার কর্মী ও কথিত সুশিল সমাজের দায়িত্বশীল মহলসহ রাজনীতি বোদ্ধা ও রাজনীতিবিদদের অবিশ্বাস্য নিরবতা ও সীমাহীন আস্ফালনের জ্বলজেন্ত দ্বিমুখী তত্পরতায় , জাগ্রত বিবেকে ও সচেতন মানবাত্মা মাত্রই গা শিহরে উঠবে....।
যথাক্রমে ১ম দুটি প্রাণ হানির বর্ণনা ও আদর্শিক পরিচয়......
১. ছাত্রলীগ কর্তৃক শিবির কর্মী ভেবে প্রকাশ্যে চাপাতি দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে
মিসফায়ার হিসাবে একজন ননমুসলিম হিন্দু বিশ্বজিতের মৃত্যু
আদর্শিক পরিচয় :
সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনপদে অধিবাসি হিসাবে সে হিন্দু ধর্মের একজন অমুসলিম এবং মুশরিক।পেশাগত ভাবে সে একজন টেইলার কর্মী, খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ ।
দ্বিতীয়জন হল আজকের এই ব্লগার রাজীব, যাকে অজানা দুষ্কৃতিকারীরা
কুপিয়ে খুন করে রাস্তায় ফেলে যায়
আদর্শিক পরিচয় :
যে কিনা আল্লায় অবিশ্বাসী স্বঘোষিত একজন নাস্তিক।শুধু নাস্তিক ই নয় চরম উগ্র ইসলাম বিদ্বেষী এবং ধর্মানুভূতিকে কটাক্ষ বা আঘাত করে করে বিকৃত মানসিক তৃপ্তি পাওয়া ই যার নিত্য নেশা।
আর অন্যদিকে বাকি ১৯ জন হল-
গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে শুধুমাত্র সরকারবিরোধী স্লোগান উচ্চারণের অপরাধে পুলিশ ও সরকারি দলীয় সংগঠনগুলোর যৌথ হামলায় -
'''রাজশাহীর এক ১৭ বছরের শিশু মাদরাসার ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়া
'''কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পুলিশ ও যুবলীগের হামলা পুলিশের গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী
''''মিরপুরে পুলিশ ও যুবলীগের হামলায় নিহত কলেজ ছাত্র
'''বগুড়ায় পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের যৌথ হামলা ও গুলিতে ছাত্র পেশাজীবী সহ নিহত ৪ যুবক
'''চট্টগ্রামে নির্বিচার গুলিতে নিহত ৪ ছাত্র যুবক
এদের ১৯ বছরবয়সী একজন কিশোর ছাত্র আবিদ যে কিনা সম্পূর্ণ সুস্থ
অবস্থায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে কাস্টডিতে যাওয়ার পর দুচোখ উপড়ানো ও মাথার মগজ বের করা অবস্থায় রাস্তায় উপর লাশ হয়ে পড়েছিল''
'''কাওরান বাজারে পুলিশের গুলিতে নিহত যুবক
'''এবং কক্সবাজারে পুলিশের উপর্যুপরি নির্বিচার গুলিতে নিহত সাত সাতটি ছাত্রজনতার লাশ
১+১+১+৪+৪+১+৭=মোট ১৯ টি লাশ ।সাম্প্রতিক সময়ের এই লুটিয়ে পড়া মোট ১৯ টি তরতাজা যুবকের লাশ।
তাদের সবার আদর্শিক পরিচয় : তারা সবাই আল্লাহ বিশ্বাসী মুসলমান ।সংখ্যাগরিষ্ঠ এই মুসলিম সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে ইসলামী রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে তারা নারায়ে তাকবিরের স্লোগান দেয়
প্রথমোক্ত দুজন মানুষের জীবন হানির ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় আমাদের জাতীয় সংবাদ মিডিয়াগুলোর আকাশছোঁয়া চেতনাদীপ্ত দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকার যে মহাবিস্ফোরণ-
সপ্তাহ-মাসব্যাপী, পাতায় পাতায় লাল কালির হেড লাইনের সয়লাব,পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা কলাম,শব্দভাণ্ডার যেন ফুরাই না,টিভিতে বৃষ্টির মতো ব্রেকিং নিউজ ,ক্যাপশন ,ফুটেজ, লাইভ ,ক্যামেরা অ্যাকশান।
টকশো গুলিতে আতশবাজির মতো জাগ্রত বিবেকের হাজারো প্রশ্ন..
সুশীল সচেতন নাগরিকদের দু:খ ক্ষোভ লজ্জা গ্লানিতে পুরো দেশময় যেন কর্দমাক্ত..
মানবাধিকার কর্মীদের ক্রমাগত করুণ ক্রন্দন ধ্বনিতে আকাশ মেঘলা হয়ে এখুনি বুঝি অশ্রুজলে জাতীয় বৃষ্টি ঝড়বে.....
কিন্তু যখন সাম্প্রতিক এই একই সময়ে ১টি নয় ২টি নয় সেই ১টির তুলনায় বা সংখ্যা বিবেচনায় ২০গুণ বেশি জীবন কেড়ে নেয়ার ঘটনা ঘটল!
সেই একই সময়ে যখন পুলিশের উপর্যুপরি নির্বিচার গুলিতে হরবর করে মাটিতে লুটিয়ে পরছে ঊনিশ উনিশটি তপ্ত তাজা প্রাণ!
তখন কোথায় সেই মিডিয়াগুলোর উতাল পাতাল করা প্রলয়ংকরী ঝড়?
কোথায় সেই সচেতন নাগরিক সমাজের গর্জন ??
নেই তো কোন মানবাধিকার কর্মীর কান্নার বান ???
তখন যেন সকল প্রলয়ংকরী ঝড় ঝাপটা হুংকার গর্জন সবকিছু ছাপিয়ে আমাদের জাতীয় জীবনে নেমে আসে এক নিরব নির্লিপ্ত লালিমা ভরা আকাশের সেই হেমন্তের বিকেল ।যেখানে বাতাস ও থাকে ছুটিতে।
তখন তর্জন গর্জন তো দূরে থাক ,এদেশে যে জাগ্রত বিবেকের বলে কেউ প্রশ্ন তীর ছুটতে জানে সেটা বোঝারই কোন জু নেই !
কিন্তু কেন ? কেন এই অবিশ্বাস্য রহস্যপূর্ণ নিরবতা?? ? কেন এই সীমাহীন দ্বিমুখীতা???
কেনই বা
৯০ ভাগ মুসলমানের এই দেশে একজন মুশরিক ও নাস্তিক জীবনের প্রদেয় মূল্য ,তার মানবাধিকার এবং মর্যাদা সংরক্ষন প্রশ্নে যেখানে ১৬ আনা ছাপিয়ে শত আনার দায়িত্বশীলতা দেখনো হচ্ছে-
সেখানে একজন আল্লায় বিশ্বাসী মুসলমান যারা পা সোজা করে দাঁড়ানোর অধিকার থেকেও আজ বঞ্চিত, তাদের জীবনের মূল্য বা মর্যাদার রক্ষার কথা হয় তো দূরে থাক, কিন্তু মানুষ হিসাবে রাষ্ট্রীয় এই নিধনযজ্ঞ প্রশ্নে ও
তোমরা কি নির্বিকার ?!কি সীমাহীন নিরবতা তোমাদের ??
কিন্তু কেন ? কেন এই তোমাদের নির্লজ্জ দ্বিমুখীতা? ?
ছিঃ ধিক্ !শত ধিক্ তোমাদের এই মানবতা বাদিতাকে !! তোমাদের এই ভন্ড মানবিকতা বোধের খোলসের প্রতি ঘৃণা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই!!
মুসলমানরা এদেশে আজ নিজ ঘৃহে পরবাসী !!!
খুব জানতে ইচ্ছে করে -
নিহত বিশ্বজিতের শরীরের ক্ষত থেকে সেটা বেড়িয়ে আসে সেটা তো মানুষের রক্ত ।
আর নিহত জামাত কর্মী আব্দুর রহমানের শরীরের ক্ষত থেকে যেটা গড়িয়ে পরছে সেটা তো গংগার জল! তাইনা???
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন