কোন চিনি খাবেন ? সাদা চিনি, না লাল চিনি ??
লিখেছেন লিখেছেন বিভীষিকা ০২ জুন, ২০১৬, ০১:২৩:৩১ রাত
(নয়ন চ্যাটার্জি)
বাজারে গেছেন চিনি কিনতে। দোকানদার প্রথমেই জিজ্ঞেস করবে- কোন চিনি দেবো, সাদা চিনি, না লাল চিনি। দুটোর দামই সমান।
যখন দেখলেন- সাদা চিনি দেখতে সুন্দর, পরিষ্কার স্বচ্ছ। অথচ লাল চিনি দেখতে অপরিষ্কার, অসচ্ছ। তখন স্বাভাবিকভাবেই বেছে নিবেন সাদা চিনি।
কিন্তু চিনি চয়েজ করতে গিয়েই করলেন ভুল। পরিবারের জন্য কিনে নিয়ে গেলেন এক প্যাকেট বিষ।
সাদা চিনি বা রিফাইন করা চিনি যে শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, সে সম্পর্কে ড. উইলিয়াম কোডা মার্টিন এক গবেষণাপত্র বের করেছিলেন অনেক আগেই। সেখানে ড. মার্টিন সাদা রিফাইন চিনিকে বর্ণনা করেন বিষের সাথে।
ড. উইলিয়াম কোডা মার্টিন গবেষনাপত্রে বলেন-
চিনি রিফাইন করে সাদা করার জন্য চিনির সাথে যুক্ত প্রাকৃতিক ভিটামিন ও মিনারেল সরিয়ে শুধু কার্বোহাইড্রেট রাখা হয়। কিন্তু শুধু কার্বোহাইড্রেট শরীর গ্রহণ করতে পারে না। মিনারেল ও ভিটামিনবিহীন কার্বোহাইড্রেট দেহের মধ্যে টক্সিক মেটাবোলাইট সৃষ্টি করে। এতে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হতে থাকে। ফলে কোষ অক্সিজেন পায় না এবং অনেক কোষ মারা যায়।
ড. উইলিয়াম কোডা মার্টিন গবেষণা লব্ধ ফলাফল দিয়ে প্রমাণ করে- রিফাইন করা চিনি খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, হার্ট ও কিডনী ধিরে ধিরে কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং ব্রেনের উপর মারাত্মক ক্ষতিকারণ প্রভাব সৃষ্টি করে। (http://goo.gl/7xGRVG)
উল্লেখ্য, দেশীয় চিনিতে গুড় মিশ্রিত থাকায় তা লাল বর্ণ ধারণ করে। অপরদিকে বিদেশ থেকে আমদানীকৃত চিনি তৈরিতে সবসময় আখ ব্যবহার করা হয় না। আখের বিকল্প উপাদান দিয়েও চিনি তৈরি হয়। এই চিনিতে মিষ্টতা আনতে বাড়তি রাসায়নিক মিশ্রিত করা হয়। আর পরিশোধন প্রক্রিয়ায় চিনিতে যুক্ত হয় আরও ক্ষতিকর নানা উপাদান। আবার পরিষ্কার বা সাদা করার জন্য ব্যবহার করা হয় ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান সালফার ও হাড়ের গুঁড়ো। বলাবাহুল্য এই হাড়ের গুড়ো আবার অনেক সময় মুসলমানদের হালালও হয় না। (http://goo.gl/ORWI4d)
আরো উল্লেখ্য বিজ্ঞানীরা মরণ ব্যাধি ক্যান্সারের যে ১০ কারণ চিহ্নিত করেছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে এই রিফাইন করা চিনি। তাদের মতে বাজার থেকে কেনা এনার্জি এবং ফ্রুট ড্রিংকস-এ থাকে প্রচুর পরিমাণে এই চিনি । সোডা আর এই চিনি ক্যান্সার জীবাণু বৃদ্ধির জন্য দায়ী। এছাড়া এই চিনি শরীর মোটা করার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। নষ্ট করে শরীরের শর্করা ও পুষ্টিগুণ। (http://goo.gl/72oUjQ)
বাংলাদেশ খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরীক্ষায় দেখা গেছে,
আমদানিকৃত পরিশোধিত এবং দেশে উৎপাদিত পরিশোধিত চিনি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আখ থেকে উৎপাদিত দেশি চিনিতে ক্যালসিয়ামের মাত্রা ১৬০ দশমিক ৩২, যা পরিশোধিত চিনিতে ১ দশমিক ৫৬ থেকে ২ দশমিক ৬৫ ভাগ। পটাশিয়াম দেশি চিনিতে ১৪২ দশমিক ৯ ভাগ, পরিশোধিত চিনিতে শূন্য দশমিক ৩২ থেকে শূন্য দশমিক ৩৫ ভাগ। ফসফরাস দেশি চিনিতে ২ দশমিক ৫ থেকে ১০ দশমিক ৭৯ ভাগ আর পরিশোধিত চিনিতে ২ দশমিক ৩৫ ভাগ। আয়রন দেশি চিনিতে শূন্য দশমিক ৪২ থেকে ৬ ভাগ আর পরিশোধিত চিনিতে শূন্য দশমিক ৪৭ ভাগ। ম্যাগনেশিয়াম দেশি চিনিতে শূন্য দশমিক ১৫ থেকে ৩ দশমিক ৮৬ ভাগ আর পরিশোধিত চিনিতে শূন্য দশমিক ৬৬ থেকে ১ দশমিক ২১ ভাগ। সোডিয়াম দেশি চিনিতে শূন্য দশমিক ৬ ভাগ, আর পরিশোধিত চিনিতে শূন্য দশমিক ২ ভাগ। (http://goo.gl/ORWI4d)
তাই আজ থেকে নিজেকে এবং পরিবারকে সুস্থ রাখতে পরিত্যাগ করুন সাদা চিনি, গ্রহণ করুন লাল চিনি।
বিষয়: বিবিধ
১৭৫০ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন