আপনি জুলুমের পক্ষে আর আমি মাজলুমের পক্ষেঃ মাওলানা মওদুদী(রঃ)।
লিখেছেন লিখেছেন বিভীষিকা ২৬ মে, ২০১৬, ০২:২৯:৪৭ দুপুর
মাওলানা মওদূদীর সাহাবা সমালোচনা তত্ব বনাম কথিত দেওবন্দি আকাবিরদের মিথ্যাচার ।।
জামায়াত ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মাওলানা সামসুল হক ফরীদপুরী রহঃ ইজতিহাদগত কারনে মওদূদী রহ কে যথেষ্ট মহাব্বত করতেন । কিন্তু মাওলানা মওদূদী রহ এর লেখা "খেলাফত ও মুলকিয়াত" বইটিতে হযরত মুয়াবিয়া রাঃ এর সম্পর্কে যেসব অভিযোগ প্রখ্যাত ইতিহাসবিদের উদৃতি সহকারে পেশ করেছেন সেসব বিষয়ে তিনি ভিন্নমত পোষন করতেন এবং কোন কোন ইতিহাসবিদকে শিয়া মতাবলম্বী বলে ধারনা করতেন ।
আর এভাবেই ফরীদপুরী রহ মাওলানা মওদূদী রহ এর ইতিহাসিকদের উৎস সম্পর্কে আপত্তি তোলেন । কিন্তু ব্যক্তি মওদূদী রহ এর প্রতি কোন আপত্তি তোলেননি । তখন আধ্যাপক গোলাম আযম স্যার রহ ফরীদপুরী রহ সাহেবকে আসস্ত করেন যে মাওলানা মওদূদী রহ আগামী বছর সফরে ঢাকা আসলে আপনার সাথে মওদূদী রহ এর সাক্ষাত আলোচনা ব্যবস্থা করতে চাই ।
কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, মাওলানা মওদূদী রহ যখন ঢাকায় আসলেন তখন মাওলানা ফরীদপুরী রহ সাহেব সম্পূর্ন শয্যাগত অবস্থায় । অধ্যাপক আযম স্যার রহ লালবাগ মাদ্রাসায় তার সাথে দেখা করতে গেলেন । তখন ফরীদপুরী হুজুর রহ সাহেব কথা বলতেও অক্ষম ছিলেন । আযম স্যার রহ তাঁর খুব কাছে গিয়ে তার সাথে হাত মিলিয়ে বললেন, যে পূর্বের কথা অনুযায়ী আপনাকে মাওলানা মওদূদী রহ এর কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছি । তখন ফরীদপুরী রহ তার প্রতিনিধি হিসেবে লালবাগ মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস সাহেবকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইশারা করে বললেন । তখন সিনিয়র মুহাদ্দিস সাহেবকে ফরীদপুরী রহ এর প্রতিনিধি হিসেবে মাওলানা মওদূদী রহ এর সাথে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হয় ।
ফরীদপুরী রহ এর প্রতিনিধি হিসেবে মুহাদ্দিস সাহেবকে মাওলানা মওদূদী রহ আন্তরিকতার সাথে গ্রহন করেন । এরপরে কুশলাদি বিনিময়ের পরে মাওলানা মওদূদী রহ মুহাদ্দিস সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমার কোন লেখা সম্পর্কে আপনার আপত্তি মেহেরবানী করে বলুন, ফরীদপুরী রহ এর প্রতিনিধি মুহাদ্দিস সাহেব বললেন, আপনার লেখা "খেলাফত ও মুলকিয়াত" বইতে হযরত মুয়াবিয়া রাঃ এর বিরুদ্ধে কতক অভিযোগ এনেছেন । একজন সাহাবীর দোষচর্চা করা কী যায়েয হয়েছে ?
তখন মওদূদী রহঃ বললেন কোন অভিযোগ সম্পর্কে আপনার আপত্তি ? মুহাদ্দিস সাহেব বল্লেন আপনি লিখেছেন যে, হযরত মুয়াবিয়া রা মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর রা কে অত্যান্ত অন্যায়ভাবে হত্যা করেছেন । একজন সাহাবা আমিরুল মুমিনীন হিসেবে জালেম হতে পারেন না ।
তখন মওদূদী রহ বলেন যাকে হত্যা করা হয়েছে তিনিও একজন সাহাবী । তাহলে আমার আর আপনার অপরাধ একই সমান । আপনিও একজন সাহাবীর সমালোচনা করেছেন । কারন মুয়াবিয়া রা যে সাহাবীকে হত্যা করেছেন তাকে যদি অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়ে থাকে তাহলে তিনি দোষীই সাব্যস্ত হোন । এই অবস্থায় আমি একজন সাহাবাকে দোষী বলেছি । আর আপনি অন্য সাহাবীকে দোষী মনে করেছেন । তবে পার্থক্য হলো এই যে, আমি মজলুমের পক্ষে আর আপনি যুলুমের পক্ষে ।
এইটুকু আলোচনার পরে দুইজনই চুপ হয়ে গেলেন । মুহাদ্দিস সাহেব আর কোন প্রশ্ন করলেন না । মুহাদ্দিস সাহেব মাওলানা থেকে বিদায় নিয়ে আসার পরে এই বিষয়ে আর কোন আপত্তি তোলার প্রয়োজনবোধ করেননি । কিন্তু অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় ফরীদপুরী রহ এর মৃত্যুর পরে তার নামে ভুল সংশোধন বইটি চাপিয়ে দিয়ে মওদূদী রহ এর বিরুধীরা এই মিথ্যাচার করতে একটুও কার্পন্যতা প্রদর্শন করেনি । আল্লাহ রহম করুন মিথ্যাচারীদেরকে।
তথ্যসূত্রঃ http://xeroxtree.com/pdf/sotter_alo.pdf
বিষয়: বিবিধ
১৯১৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন