নববর্ষ বা নওরোজ কিভাবে এলো ?

লিখেছেন লিখেছেন বিভীষিকা ১২ এপ্রিল, ২০১৬, ১০:২০:৪৪ সকাল

(নয়ন চ্যাটার্জি)



অনেকে দাবি করে, ইরানে যদি নববর্ষ পালিত হয়, তবে বাংলাদেশে হতে সমস্যা কোথায় ?? এর ব্যাখ্যায় বলতে হয়, ইরানে নববর্ষ পালনটা ঠিক ইসলামী সংস্কৃতি থেকে আসেনি। এসেছে অন্য ধর্ম থেকে। ইরানে নববর্ষকে বলা হয় নওরোজ। এ সম্পর্কে উইকিপিডিয়ায় বলা হয়েছে-

“ নওরোজ (ফার্সি: "নতুন দিন") হল ইরানি সৌর বর্ষপঞ্জী অনুসারে পালিত ইরানি নববর্ষ। নওরোজ মূলতঃ ইরানি জাতি ও বৃহত্তর ইরানের জনগোষ্ঠীর মধ্যে পালিত হয়ে থাকে। এছাড়া মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, উত্তর পশ্চিম চীন সহ বিশ্বের অন্যান্য বহু অঞ্চলে এই উৎসব পালনের রেওয়াজ প্রসারিত হয়েছে। ঐতিহ্যগত ভাবে নওরোজ একটি জরথুস্ত্রবাদী উৎসব এবং প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে জরথুস্ত্রবাদের প্রতিষ্ঠাতা জরথুস্ত্র স্বয়ং এই উৎসব উদ্ভাবন করেছিলেন।"

অর্থাৎ উইকিপিডিয়া দেওয়া তথ্য মোতাবেক

প্রাচীন ইরানের জরথুস্ত্রবাদ নামক ধর্ম থেকে নওরোজ আগত হয়েছে এবং নওরোজের সৃষ্টিকারী স্বয়ং ঐ ধর্মের প্রচারক জরথুস্ত্র নিজেই।

এখন কথা হচ্ছে জরথুস্ত্রবাদ আবার কোন ধর্ম ??

জরথুস্ত্রবাদ হচ্ছে প্রাচীন পার্সী ধর্ম যাদেরকে অনেকে অগ্নি উপাসক হিসেবে চিনে। এদের বিশ্বাস আগুন মানুষে শুদ্ধ করে থাকে। এ সম্পর্কে উইকিতে বলা হয়- “ অগ্নিকে জরাথ্রুস্ট্র ধর্মে শুদ্ধতার প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বাস করা হয়”। মূলতঃ ইরানিরা সেই অগ্নিউপসাকদের থেকে এলাকা ভিত্তিকভাবে সংস্কৃতিটি গ্রহণ করেছে (যেমন: বাংলাদেশের মানুষ অনেক কালচার হিন্দুদের থেকে গ্রহণ করে)। আবার এ প্রথাটি জরথুস্ত্রবাদ বা অগ্নি উপাসকদের থেকেই বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিকট প্রবেশ করে, এর কারণ এদের প্রত্যেকের ধর্মবিশ্বাসের গোড়া প্রায় কাছাকাছি এবং এরা সবাই বিভিন্ন শক্তির পূজা করে থাকে।

অপরদিকে মুসলমানদের শেষ নবী নওরোজ বা বছরের প্রথম দিন উদযাপনের প্রথাটিকে গ্রহণ করেননি। তিনি যখন মদীনায় যান, তখন সেটানে দুটো দিবস দেখতে পেয়েছিলেন। একটির নাম মিহিরজান, অপরটির নাম নওরোজ। তিনি দুটো অনুষ্ঠানই সম্পূর্ণ রূপে বাতিল করেছিলেন। একারণে নববর্ষ বা নতুনবর্ষ উদযাপন হিন্দু, বৌদ্ধ, উপজাতিদের মধ্যে থাকলেও মুসলমানরা তা পালন করে না।

উল্লেখ্য বাংলাদেশে যখন পহেলা বৈশাখ হয়, তখন হিন্দুদের বিভিন্ন পূজা-পার্বন, বৌদ্ধদের বিভিন্ন পূজা, উপজাতিরাও বৈসাবী উৎসব পালন হতে থাকে। একই সময় দেখবেন থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, মিয়ানমারেও বর্ষবরণ হয়। হিন্দুরা বলে সংক্রান্তি আর বৌদ্ধরা বলে সংক্রান উৎসব।

যে যাই বলে নববর্ষ পালন করুক, অগ্নি উপাসক, হিন্দু, বৌদ্ধ ও উপজাতিদের বিশ্বাস এভাবে প্রথম দিনটি পালন করলে সারা বছরের জরা-দুঃখ-কষ্ট সব মুছে যাবে। যেমন বৌদ্ধরা বিশ্বাস করে পানি দিয়ে বৈসাবী খেললে, পানি দ্বারা তাদের জরা-দুঃখ মুছে শুদ্ধ হওয়া যাবে। আবার অগ্নি উপাসকদের বিশ্বাস ‘আগুন তাদের জরা-দুঃখ মুছে শুদ্ধ দেবে। এই বিশ্বাস কিন্তু হিন্দুদের মধ্যে সংক্রামিত। এজন্য দেখবেন, আমরা পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে যে গানটা গাই- “এসে হে বৈশাখ এসো এসো” এর মধ্যে কিন্তু একটা লাইন আছে- “মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা”। গানটিতে স্পষ্ট বলা হচ্ছে- আগুন দিয়ে শুদ্ধ হওয়া যাবে। মূলতঃ নববর্ষ অগ্নি উপাসকদের অনুষ্ঠান হওয়ার কারণেই প্রকৃত ইসলামীবেত্তারা কখনই এ অনুষ্ঠান পালনে অনুমতি বা স্বীকৃতি দেয়নি।

সবাইকে ধন্যবাদ।

তথ্যসূত্র:

১) https://goo.gl/Sv1JQA

২) https://goo.gl/Sfl0ZR

৩) http://goo.gl/KMdoMw

৪) http://goo.gl/CKlLE4

বিষয়: বিবিধ

১৩৯৭ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

365469
১২ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০২:২১
হতভাগা লিখেছেন : বিধর্মীদের সংষ্কৃতি থেকে প্রাপ্ত এসব উৎসব নিশ্চিতভাবেই শিরকীয় আচরনে ভরপুর ।

আমাদের মুসলমানদের এসব ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে । আল্লাহ আমাদের সহায় হোন - আমিন।
১২ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০২:২৫
303186
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : সরকারীভাবে এই শিরকী উৎসব বাধ্যতামূলক করার চিন্তাভাবনা চলছে।
১২ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০২:৩৯
303188
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : মঙ্গল শোভাযাত্রা নিরাপদে পালনের জন্য 'সোয়াত ' টিমকে নামানো হচ্ছে।
১২ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০৩:০০
303194
হতভাগা লিখেছেন : সরকার এটা করতেই পারে । তবে মুসলমানদের ঈমানের জোর কেমন সেটাই পরীক্ষা করবেন আল্লাহ ।
365473
১২ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০২:২৬
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : এই শিরকী ও কুফরী সংস্কৃতি হতে আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।
১২ এপ্রিল ২০১৬ বিকাল ০৪:৩৬
303206
তট রেখা লিখেছেন : আমীন, সুম্মা আমীন।
365482
১২ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০২:৪৫
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : [b] “মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা”[/b
“এসে হে বৈশাখ এসো এসো”

ভালো লাগলো ধন্যবাদ, অনেক ধন্যবাদ
365486
১২ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০৩:০১
বিবেক নাই লিখেছেন : ‘ইসলাম কাউকে ঘৃণা করতে শেখায় না, সবাইকে ভালোবাসতে শেখায়, বিধর্মীরা তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালুন করুক। তাতে ইসলাম বাধা দেয়না কিন্তু কোন মুসলমান যদি তাদের সে অনুষ্ঠানে যায়, শুভেচ্ছা যানায় তাহলে সে মারাত্বক অপরাদ করলো।
ইমাম ইবনে কায়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) এর বক্তব্য শুনুন,
“কাফেরদের তাদের উৎসবে সম্ভাষণ জানানো আলিমদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে নিষিদ্ধ। এটা কাউকে মদ খাওয়া বা খুন করা বা ব্যভিচার করায় সাধুবাদ জানানোর মতো। যাদের নিজের দ্বীনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নেই, তারাই কেবল এ ধরনের ভুল করতে পারে। যে অন্যকে আল্লাহ্‌র অবাধ্যতা, বিদ’আত, অথবা কুফরীতে জড়ানোর কারণে শুভেচ্ছা জানাবে সে আল্লাহ্‌র ক্রোধ ও শাস্তির সামনে নিজেকে উন্মুক্ত করল”।হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
365497
১২ এপ্রিল ২০১৬ বিকাল ০৪:৩৫
তট রেখা লিখেছেন : গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File