ইসলামের দৃষ্টিতে দাবা খেলা।

লিখেছেন লিখেছেন বিভীষিকা ১৯ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৮:৪৬:০১ রাত

(ড. মাহফুজুর রহমান)

ইসলামের দৃষ্টিতে দাবা খেলা

অনেকেই প্রশ্ন করেন ইসলামের দৃষ্টিতে দাবা খেলা কি বৈধ? আমরা এমন প্রশ্নের উত্তরে বলতে চাই দাবা খেলা প্রসঙ্গে বিভিন্ন হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এখানে তার কিছু পেশ করা হল:

নাফে থেকে বর্ণিত। তিনি ইবন ওমর (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল দাবা খেলা প্রসঙ্গে; তখন তিনি জবাব দিলেন তা পাশা খেলার চেয়ে নিন্দনীয়। [বায়হাকী, সুনানুল কুবরা,খ-১০,পৃ-৯৫৮,হা:২১৪৬২]

সুরাইজ ইবন নোমান থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি আব্দুল্লাহ ইবন নাফেকে দাবা ও পাশা খেলা প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তিনি জবাব দিয়েছিলেন, আমি আমাদের আলেমদের মধ্যে এমন কাউকে পাইনি যে এ খেলাটিকে মাকরুহ মনে করেন না। ইমাম মালেকও অনুরূপ কথাই বলতেন। [বায়হাকী,শা’বুল ঈমান,খ-৮,পৃ-৪৭২,হা:৬১০৭]

আলী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলতেন দাবা খেলা হলো অনারবদের জুয়া খেলা। এটি একটি মুরসাল হাদীস। তবে এর সমর্থক হাদীস রয়েছে। [বায়হাকী, সুনানুল কুবরা,খ-১০,২১২,হা:২০৭১৭]

হাসান ইবন আহমদ ইবন ইউসুফ বলেন, ‘দাবা খেলা নিষিদ্ধ হওয়া মর্মে কোন সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়নি। [হাসান ইবন আহমদ ইবন ইউসুফ, ফতহুল গফ্ফার লি আহকামি সুন্নাতি নাবিয়্যিনা আল মুখতার,খ-৪,পৃ-১৮৮৬]

আল্লামা শাওকানী বলেন, ‘দাবা খেলার ব্যপারে ফকিহরা মতদ্বন্দে লিপ্ত। ইমাম নুববী বলেন, তা মাকরুহ; হারাম নয়। একদল তাবেয়ী থেকে এ রূপ কথা বর্ণিত আছে। [. শাওকানী, নাইলুল আউতার,খ-৮,পৃ-১৭৫]

সৈয়দ সাবেক বলেন, ‘দাবা খেলা হারাম মর্মে কিছু হাদীস বর্ণিত হয়েছে, তবে এসব হাদীসের একটিও সহীহ নয়। হাফেয ইবন হাজর আসকালানী বলেন, দাবা খেলা হারাম হওয়া প্রসঙ্গে একটি হাদীসও সাহীহ বা হাসান বলে প্রমাণিত হয়নি। একারণেই ফকীহরা এর হুকুমের ব্যপারে মত দ্বন্দে লিপ্ত হয়েছেন। তাদের মেধ্য কেউ হারাম, আবার কেউ বৈধ বলে মন্তব্য করেছেন। যারা হারাম বলে মন্তব্য করেছেন তারা হলেন ইমাম আবুহানীফা মালেক ও আহমদ। ইমাম শাফেয়ী ও কোন কোন তাবেয়ী বলেন, তা মাকরুহ; হারাম নয়। একদল সাহাবী এবং অসংখ্য তাবেয়ী দাবা খেলেছেন। [সৈয়দ সাবেক, ফিক্হুস সুন্নাহ,খ-৩,পৃ-৫১৪]

ড. ওয়াহাবা আয যুহ্ইালী বলেন, দাবা খেলা জুমহুর ওলামার মতে হারাম। তবে ইমাম শাফেয়ীর মতে হারাম নয়। আলী (রা.) বলেন, দাবা খেলা জুয়ার অর্ন্তভুক্ত। আলী (রা.) একবার দাবাখেলারত কতগুলো লোকের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি বলছিলেন, এ সব মূর্তি কিসের যার জন্য তোমরা অবস্থান করে আছ?

ইমাম শাফেয়ী বলেন, দাবা খেলা মাকরুহ। কারণ তা এমন এক খেলা যার দ্বারা দ্বীনি কোন ফায়দা হয় না। এর কোন প্রয়োজনও নেই; সুতরাং তা না খেলাই ভাল, তা হারামও নয়। ইবন আব্বাস ইবন জোবাইর আবু হুরাইরা ও সাঈদ ইবন মুসাইয়্যেব তা খেলেছেন। কারণ তা হারাম হওয়া মর্মে কোন হাদীস বর্ণিত হয়নি। এ খেলা যেসব ক্ষেত্রে কুরআন হাদীসের দলিল আছে তার সমতুল্যও নয়। যে কোন জিনিস মূলত হালাল। বলা হয় এ খেলায় বুদ্ধিমত্তার চর্চা হয়, বোধ শক্তি বৃদ্ধি পায়। [ড. ওয়াহাবা আয যুহ্ইালী, আল ফিক্হুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু,খ-৪,পৃ-২১১]

বিষয়: বিবিধ

২০০৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

357252
১৯ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ১০:২৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : যা হারাম নয় জোড় করে হারাম বানানর প্রয়োজন আছে কি!!
357279
২০ জানুয়ারি ২০১৬ সকাল ০৬:৫৮
বিবর্ন সন্ধা লিখেছেন : Ami o to jantam haram...
Ekhon to kemon jani mone hocche..
357296
২০ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ১২:১৮
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

যে কোন জিনিস মূলত হালাল।
হারাম হওয়ার জন্য আকাট্য দলিল থাকতে হবে!

এটাই শরীয়ার সহজবোধ্য মূলনীতি!

জাযাকাল্লাহ..

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File