সম্রাজ্যবাদীদের মুখপাত্র ব্রিটিশ ব্রডকাস্ট কোম্পানি (বিবিসি) কথিত ব্লগার ইস্যু নিয়ে পাগল হয়ে গেছে।
লিখেছেন লিখেছেন বিভীষিকা ০৩ নভেম্বর, ২০১৫, ০৮:৪৪:১৩ রাত
(নয়ন চ্যাটার্জি)
বাংলাদেশী মীর জাফর ব্লগার আরিফুর রহমান আর ইউপিএল প্রকাশনীর এক মহিলা সেখানে হরদম বাংলাদেশ বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে। পুরো বাংলাদেশের মানুষকে বিশ্বের সামনে হেয় প্রতিপন্ন করছে। (বিসিসির সেই অনুষ্ঠান: https://goo.gl/fVbD8E)
বিবিসি বাংলাদেশের ভিন্নমতাবলম্বী বা কথিত নাস্তিকদের অধিকার নিয়ে খুব লাফাচ্ছে, তার সমাধান চাইছে। অথচ খোদ ব্রিটেনে কি অবস্থা ?
এই তো কিছুদিন আগে মুসলমানরা লন্ডনে একটি মসজিদ করার জন্য প্রায় ১৭ একর যায়গা ক্রয় করে। কিন্তু স্থানীয় উগ্রবাদী খ্রিস্টানরা সেখানে বাধ সাথে। বলে- কিছুতেই মুসলমানদের মসজিদ নির্মাণ করতে দেবে না। মুসলমানরা তখন ব্রিটিশ সরকারের দারস্থ হয়। কিন্তু সরকারও উগ্র খ্রিস্টানদের পক্ষ নিয়ে মুসলমানদের মসজিদ নির্মাণ পরিকল্পনা বাতিল করে দেয়। শুধু তাই না, সেখানে এক ছোট পরিসরে মুসলমানরা নামাজ পড়তো। ব্রিটিশ সরকার সেই অস্থায়ী নামাজের স্থানটিও বন্ধ করার জন্য ৩ মাস সময় বেধে দেয়। (সূত্র: http://goo.gl/D5joER)
শুধু কি তাই ?
দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন তো সরাসরি বলেছে, ব্রিটিশ সংস্কৃতির (মানে খ্রিস্টান সংস্কৃতির) সাথে না মিললে কোন কিছুই গ্রহণ করা হবে না, বরং আইনের আওতায় নেওয়া হবে। ক্যামেরন সরকারি মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিষেদগার করে বলেছে, 'কোনো মুসলিম সংগঠনের বিরুদ্ধে পশ্চিমা মূল্যবোধের (খ্রিষ্ট্রিয় অনৈতিক কালচার) সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর ব্যর্থতা প্রমাণিত হলে তাদের সরকারি অনুদান বন্ধ করা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও নিষিদ্ধ করা উচিত তাদের।” ক্যামেরন ব্রিটেনে প্রচলিত 'বহু সংস্কৃতিবাদ' নীতির সমালোচনা করে বলে, “এ নীতি ব্যর্থ হয়েছে”। (সূত্র:http://goo.gl/q4vBdH)
কি বুঝলেন, বাংলাদেশে ব্লগার-প্রকাশক নিয়ে খুব হাই-হুতাশ করছে বিবিসি। বলছে, বাংলাদেশে ভিন্নমতাবলম্বী এথিস্ট ব্লগারদের সুযোগ দেওয়া হয় না, সরকার-বিরোধীদল সবাই সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের কথা শুনে।
অথচ ব্রিটেনেও কি তার ভিন্ন অবস্থা ? বরং বাংলাদেশের থেকে আরো কঠিন অবস্থা সেখানে। সেখানে মুসলমানরা মসজিদ নির্মাণ করতে গেলে স্থানীয় খ্রিস্টানরা বাধা দিচ্ছে, মুসলমানরা সরকারের দারস্থ হলে সরকারও উগ্র খ্রিস্টানদের পক্ষ নিয়ে বলছে, ‘মসজিদ নির্মাণ করা যাবে না, সব মসজিদ বন্ধ করো’।
এমনকি প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত বলছে, ব্রিটিশ খ্রিষ্ট্রিয় কালচারের সাথে না মিললে মুসলমানদের গ্রহণ করা হবে না। এবং বলছে- ‘বহু সংস্কৃতিবাদ’ সিস্টেম ব্যর্থ !
সেখানে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বলছে, ‘বহু সংস্কৃতিবাদ’ ব্যর্থ, সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের দেশে দু’চারটা নাস্তিক্যবাদী ব্লগার-প্রকাশক কিভাবে সুযোগ পেতে পারে ? সৃষ্টির শত শত বছর পরেও যেখানে ব্রিটেন তার পতাকা থেকে খ্রিষ্ট্রীয় প্রতীক ক্রুশ চিহ্ন বাদ দিতে পারে নাই, ধর্মকে বাদ দিয়ে পুরোপুরি সেক্যুলার হতে পারে নাই, সেখানে বাংলাদেশ কিভাবে স্বাধীনতার ৪৪ বছরের মধ্যে নিজ ধর্মকে ভুলে যাবে ? সংগরিষ্ঠ মুসলমানের বিরুদ্ধে গিয়ে সেক্যুলার হবে ?
যে ছবিটা দেখতে পাচ্ছেন, সেটা ব্রিটেনের। সেখানে এক মুসলিম মালিকের দোকান বন্ধ থাকায় শাটারে স্থানীয় খ্রিস্টানরা লিখে এসেছে “সকল মুসলমানকে মেরে ফেলো”। বুঝুন সেখানে সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে সংখ্যাগুরুদের ধারনা কেমন ! দেশটিতে মুসলিমদের উপর হয়রানির ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। একটি সংস্থা বলছে, গত এক বছরে দেশটিতে মুসলমানদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করার ৫৪৮টি ঘটনার রিপোর্ট তাদের কাছে এসেছে (http://goo.gl/DkGWD2)। যেই ব্রিটেন নিজ দেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার দিতে পারছে না, সেই ব্রিটেন এসেছে বাংলাদেশের দুই-চারটা ব্লগার নিয়ে মাধা ঘামাতে !
আসলে দস্যু কখনও ভালো হয় না। ছিলো শ্রেষ্ঠ ফকিরন্নি আর লুটেরা। ২০০ বছর আমাদের এ অঞ্চল লুটেপুটে নিজদের খাওয়া পরা চালিয়েছে। এখন নতুন করে আবার খাওয়া পরার টান পড়ছে ( খবর পড়ুন- বেঁচে থাকার মতো মজুরি পাচ্ছে না ব্রিটেনের ৬০ লাখ কর্মী, লিঙ্ক-http://goo.gl/hrW1VI), তাই নতুন করে লুট করার ধান্ধাবাজি করছে। বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিক ও সরকারের উচিত এসব লুটেরা ধান্ধাবাজদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া।
বিষয়: বিবিধ
১৩৫৩ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে সংখ্যালঘু ধর্মের প্রধান উৎসবের দিন গুলোতে সরকারী ছুটি দেওয়া হয় । পৃথিবী আর কোন দেশে কি এরকম আছে ?
বাংলাদেশের চেয়ে ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ আর কোন দেশ আছে যারা এরকম ছুটি দেয় অপরাপর ধর্মের মানুষদের ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন