গর্ভস্থ শিশুকে শেখান!

লিখেছেন লিখেছেন বিভীষিকা ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৩:৩৫:১৯ দুপুর

(Sefat Mahjabeen)

কদর (Qadr or predestination) এর উপর একটা অনলাইন কোর্স করার সময় একটি হাদিস পরে অভিভূত হয়েছিলাম. বুখারী এবং মুসলিম উভয়ের মধ্যেই এর উল্লেখ আছে:

"Verily the creation of everyone of you is brought together in the mother's womb as a drop of semen for forty days, then it becomes a clot for the same period, then it becomes a blob of flesh for the same period. Then the angel will be sent unto it to blow into it a spirit (Ruh), and the angel ordered (to carry out) with four instructions: to write down his livelihood, the span of his life, his deeds, and either he is wretched or fortunate..."

বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে উপরিলিখিত হাদীসটির সত্যতা খুঁজে পেয়েছে. তাদের হিসাবে ফার্টিলাইজেসনের প্রায় ৬ সপ্তাহ (৪০ দিন) পর এমব্রিও গঠিত হয়. তারপর আরো প্রায় ৬ সপ্তাহ (৪০ দিন) লাগে ফিটাস গঠন করার জন্য. তারপর একটি পূর্ণাঙ্গ মানুষের রূপ নিতে আবার একই সময় অর্থাৎ প্রায় ৬ সপ্তাহ (৪০ দিন) লাগে. মাতৃগর্ভে শিশুর বর্ধন সম্পর্কে পড়তে গিয়ে কয়েক বছর আগে এমব্রিওলজির কয়েকটি জার্নালে কিছু ইন্টারেস্টিং বিষয় জানতে পারি. এমব্রিওলজিস্টরা আরো মনে করে যে, ১২০ দিনের আগে মানব শিশুটি চিন্তা করতে পারে না. প্রথম ৬ সপ্তাহ  শিশুটির (এমব্রিও) মস্তিস্কের কর্মক্ষমতা ইলেকট্রেকেলি সাইলেন্স থাকে. তারা মোটামুটি  নিশ্চিত যে, গর্ভস্থ একটি শিশুর যখন ৪ মাস (১২০ দিন), তখন থেকেই তারা চিন্তা করতে পারে, আবেগ প্রকাশ করতে পারে. এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, উপরলিক্ষিত হাদিসটিতে বলা হয়েছে ১২০ দিনের পর ফেরেস্তারা আল্লাহতালার নির্দেশে শিশুর দেহে রুহ প্রবেশ করান. চিন্তাশীলদের জন্য এখানে ভেবে দেখার বিষয় আছে!

এই সময় (১২০ দিন বয়সের পর) শিশু একই সাথে শব্দ শোনা, বুঝতে পারা এবং পার্থক্য করার ক্ষমতা অর্জন করে. এই ব্যপারটি পরীক্ষার জন্য বিজ্ঞানীরা বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায় মা এবং তার গর্ভস্থ শিশুর উপর. তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: কোনো গল্প দিনে দুবার করে  গর্ভস্থ শিশুকে পড়ে শোনানো. দেখা গেছে, জন্মের পর সেই একই গল্প যদি শিশুকে শোনানো হয় তাহলে সে অনেক বেশি মনোযোগ দিয়ে গল্পটি শোনে, নতুন গল্পের ক্ষেত্রে যা তারা করে না. আবার কোনো অনুষ্ঠানের থিম মিউজিক যা গর্ভবতী অবস্থায় মাকে বারে বারে শোনানো হয়েছিল, জন্মের পর সেই একই মিউজিক শিশুকে শোনালে সে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি শান্ত থাকে নতুন মিউজিকের তুলনায়.

এখন ভেবে দেখুন আমরা কত চমত্কারভাবে এই ব্যপারটাকে কাজে লাগাতে পারি আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য? একজন মুসলিম মা তার সন্তান যখন গর্ভে তখন প্রতিদিন তাকে কোরান পড়ে শোনাতে পারে. যখন মা কাজ করছে, অথবা বিশ্রাম নিচ্ছে তখন কোরান তেলওয়াত শুনতে পারে, অবসরে বাবা তার স্ত্রীর পাশে বসে কোরান তেলওয়াত করতে পারে. এর ফলে, যখন শিশুটি পৃথিবীর আলো দেখবে তখন সে তার অন্তরে কুরআনের প্রতি ভালবাসা ও এই অসাধারণ জ্ঞানের প্রতি আগ্রহ নিয়ে জন্মাবে. আপনার নিজের অজান্তেই আপনি আপনার গর্ভস্থ শিশুকে কোরান শিক্ষায় হাতেখড়ি দিয়ে পৃথিবীর বুকে জন্ম দিচ্ছেন! অভিভাবক হিসাবে কত বড় একটি উপহার আপনি আপনার শিশুকে দিচ্ছেন, একবার ভেবে দেখুন.

বাকিটা সম্পূর্ণই আপনার সিদ্বান্ত. এরপর যখনি আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ সন্তানসম্ভবা (pregnant) হবেন, একবার হলেও চিন্তা করে দেখবেন আপনি তাকে কি শোনাতে চান, কেমন ভাবে পৃথিবীর আলো বাতাসে তাকে আনতে চান?





বিষয়: বিবিধ

১০৮৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

303813
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৫:৪৭
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..


সুবহানাল্লা-হ!!!
ফা তাবা-রাকাল্লা-হু আহসানুল খা-লিকীন
303819
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:১৯
আনিস১৩ লিখেছেন : Very inspiring post.
Thanks for sharing.
303826
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৮:১০
বিভীষিকা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
303844
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:৪২
শেখের পোলা লিখেছেন : 'অচিরেই আমি আকাশে ও তোমাদের নিজেদের মধ্যে এমন কিছু দেখাব যা প্রমান করবে যে এ কোরান সত্য৷'
303853
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:২৮
sarkar লিখেছেন : সহ মত। ধন্যবাদ।
303871
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১১:৫৮
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : শিশুটি পৃথিবীর আলো দেখবে তখন সে তার অন্তরে কুরআনের প্রতি ভালবাসা ও এই অসাধারণ জ্ঞানের প্রতি আগ্রহ নিয়ে জন্মাবে. আপনার নিজের অজান্তেই আপনি আপনার গর্ভস্থ শিশুকে কোরান শিক্ষায় হাতেখড়ি দিয়ে পৃথিবীর বুকে জন্ম দিচ্ছেন!

সত্যিইতো, কতইনা ভাল হবে, যদি ভিতর থেকেই কোরআনের আলো নিইয়ে আসে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File