“শিকারি আয়েগা; দানা ডালেগা; জাল বিছায়েগা; ফাসনা নেহি”।
লিখেছেন লিখেছেন বিভীষিকা ১২ মার্চ, ২০১৪, ১০:১৩:৩৩ সকাল
একদা এক বিজ্ঞ আলেম ছিলেন। যার অনেক ছাত্র ছিল, যখনই তার
কাছে নতুন কোন শিষ্য আসত তিনি তার পরীক্ষা নিতেন। তিনি কিছু
তোতা পাখি পালতেন।
যাদেরকে তিনি একটি কালেমা শিক্ষা দিয়েছিলেন, কালেমাটি হল;
“শিকারি আয়েগা; দানা ডালেগা; জাল বিছায়েগা; ফাসনা নেহি”। অর্থাৎ
শিকারি আসবে, দানা দিবে, জাল পাতবে, ফেঁসে যেও না”। যখনই নতুন কোন ছাত্র আসত তখনই তিনি তাকে কিছু দানা আর একটি জাল
দিয়ে বলতেন যাও ঐ গাছের নিচ থেকে কিছু পাখি ধরে নিয়ে আস।
পাখিগুলো মানুষ দেখা মাত্রই গান গাইতে শুরু করত এই বলে,
“শিকারি আয়েগা; দানা ডালেগা; জাল বিছায়েগা; ফাসনা নেহি”। তখন
বেশিরভাগ ছাত্ররাই ফিরে আসত এই ভেবে যে, এত চালাক
পাখি ধরা যাবে না। কিন্তু যদি কোন ছাত্র জাল পাতত আর দানা দিত তবে দেখত যে,
পাখিগুলো মুখে ঐ কালেমা বলছে ঠিকই কিন্তু দানা খেতে আসছে আর
জালে ফেঁসে যাচ্ছে। অর্থাৎ তাদের কালেমা তাদের কোন কাজেই
আসছে না। এই পাখি গুলো আসলে কি বলছে তাই জানে না।
পাখিগুলো জানে না শিকারি কি জিনিস !
জাল কি জিনিস ! ফাসনা কি জিনিস ! তাই মুখে যতই গান গানা কেন, তাও জালে ফেঁসে মৃত্যু ডেকে আনছে। আমাদের অবস্থাও ঠিক যেন এই তোতা পাখির মতই হয়ে গেছে ।
আমরা মুখে ‘লা~ ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে সাক্ষ্য দিচ্ছি, কিন্তু
আমরা এর মর্ম জানি না, কাজেই আমাদের এই অর্থহীন সাক্ষ্যদান তোতা পাখির মতন, তাই আমরা মুখে কালেমা জপার পরেও শিকারির জালে ফেঁসে যাচ্ছি।
বিষয়: বিবিধ
১৬০৮ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
মুহাম্মাদুর রাসূলুলাহ)
অর্থাৎ আলাহ
ব্যতীত কোন
ইলাহ নাই, মুহাম্মাদ (সালালাহু
আলাইহি ওয়া সালাম)
আলাহর
রাসূল।
ব্যাখ্যাঃ (ক) এই আক্বীদার প্র মাংশ অর্থাৎ আলাহর
একমাত্র ইলাহ হওয়া
এবং আলাহ
ব্যতীত অন্য কাহারও ইলাহ না হওয়ার অর্থ এই যে,
আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর মধ্যে যাহা কিছু আছে সেই সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা,
প্রতিপালক, মা’বুদ এবং প্রাকৃতিক ও বিধিগত সার্বভৌম সত্তা হইতেছেন
একমাত্র আলাহ।
এই সবের কোন এক দিক দিয়াও কেহই তাঁহার সহিত
শরীক নাই।
এই মৌলিক সত্য কথাটি জানিয়া ও মানিয়া লইলে নিমড়বলিখিত বিষয়গুলি
অনিবার্যরূপে গ্রহণ করিতে হয়।
১। মানুষ আলাহ
ব্যতীত আর কাহাকেও নিজের পৃষ্ঠপোষক, কার্য
সম্পাদনকারী, প্রয়োজন পূরণকারী, বিপদ দূরকারী, ফরিয়াদ
শ্রবণকারী ও গ্রহণকারী এবং সাহায্যদাতা ও রক্ষাকর্তা মনে করিবে
না। কেননা তিনি ব্যতীত আর কাহারও নিকট কোন ক্ষমতা নাই।
২। আলাহ
ব্যতীত আর কাহাকেও কল্যাণকারী মনে করিবে না, কাহারও
সম্পর্কে অন্তরে ভীতি অনুভব করিবে না, কাহারও উপর নির্ভর করিবে
না, কাহারও প্রতি কোন আশা পোষণ করিবে না এবং এই কথা বিশ্বাস
করিবে না যে, আলাহর
অনুমোদন ব্যতীত কাহারও উপর কোন বিপদ-মুসীবত আপতিত হইতে পারে। কেননা সকল প্রকার ক্ষমতা ও
ইখতিয়ার একমাত্র আলাহরই।
৩। আলাহ
ব্যতীত আর কাহারও নিকট দোয়া বা প্রার্থনা করিবে না,
কাহারও নিকট আশ্রয় খুঁজিবে না, কাহাকেও সাহায্যের জন্য ডাকিবে
না এবং আলাহর
ব্যবস্থাপনায় কাহাকেও এতখানি প্রভাবশালী বা
শক্তিমান মনে করিবে না যে, তাহার সুপারিশে আলাহর
ফায়সালা
পরিবর্তিত হইতে পারে। কেননা তাঁহার রাজ্যে সকলেই ক্ষমতাহীন
প্রজা মাত্র।
৪। আলাহ
ব্যতীত আর কাহারও সম্মুখে মাথা নত করিবে না এবং কাহারও
উদ্দেশ্যে মানত মানিবে না। কেননা এক আলাহ
ব্যতীত ইবাদত
(দাসত্ব, আনুগত্য ও উপাসনা) পাইবার অধিকারী আর কেহই নাই।
৫। আলাহ
ব্যতীত অপর কাহাকেও বাদশাহ, রাজাধিরাজ ও সার্বভৌম
ক্ষমতার মালিক মানিয়া লইবে না, কাহাকেও নিজস্বভাবে আদেশ ও
নিষেধ করিবার অধিকারী মনে করিবে না, কাহাকেও স্বয়ংসম্পূর্ণ
বিধানদাতা ও আইন প্রণেতা মানিয়া লইবে না এবং আলাহর
আনুগত্য
ও তাঁহার দেওয়া আইন পালনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নয় এমন সকল
আনুগত্য মানিয়া লইতে অস্বীকার করিবে। কেননা স্বীয় সমগ্র রাজ্যের
নিরঙ্কুশ মালিকানা ও সৃষ্টিলোকের সার্বভৌমত্বের অধিকার আলাহ
ব্যতীত অপর কাহারও আসলেই নাই।
উপরিউক্ত আক্বীদা অনুযায়ী নিমড়বলিখিত বিষয়গুলিও মানিয়া লওয়া
আবশ্যকঃ
১। মানুষ স্বীয় স্বাধীন ইচ্ছা ও আযাদী কুরবানী করিবে, নফসের ইচ্ছাবাসনার
দাসত্ব পরিত্যাগ করিবে এবং যে আলাহে
ক ইলাহ মানিয়া
লইয়াছে একনিষ্ঠভাবে একমাত্র তাঁহারই বান্দাহ ও দাস হইয়া জীবন
যাপন করিবে।
২। নিজেকে কোন কিছুরই স্বাধীন ইচ্ছাসম্পনড়ব মালিক মনে করিবে না বরং
স্বীয় জীবন, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, মানসিক ও দৈহিক শক্তি তথা সবকিছুকে
আলাহর
মালিকানাধীন ও তাঁহার নিকট হইতে প্রাপ্ত আমানত মনে
করিবে।
৩। নিজেকে আলাহর
নিকট দায়ী ও জবাবদিহি করিতে বাধ্য মনে করিবে,
শক্তি-সামর্থ্যরে প্রতি লক্ষ্য রাখিবে যে, পরকালে আলাহ
তা’আলার
সম্মুখে এই সব বিষয়ের হিসাব অবশ্যই দিতে হইবে।
৪। আলাহর
যাহা পছন্দ তাহাকেই নিজের পছন্দ এবং যাহা তাঁহার
অপছন্দ তাহাকেই নিজের অপছন্দ রূপে গ্রহণ করিবে।
৫। আলাহর
সন্তুষ্টি ও তাঁহার নৈকট্য লাভকেই নিজের যাবতীয় চেষ্টা
সাধনার চূড়ান্ত লক্ষ্য এবং নিজের সমগ্র তৎপরতার কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে
গ্রহণ করিবে।
৬। স্বীয় নৈতিক চরিত্র, আচার-ব্যবহার এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক,
অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড, এক কথায় জীবনের সর্ববিষয়ে
কেবল আলাহর
বিধানকেই একমাত্র হিদায়াত হিসাবে মানিয়া লইবে
এবং আলাহর
দেওয়া শরীয়তের বিপরীত যাবতীয় নিয়ম-নীতি ও
পন্থা-পদ্ধতিকে প্রত্যাখ্যান করিবে।
ব্যাখ্যা: (খ) এই আক্বীদার দ্বিতীয় অংশ- হযরত মুহাম্মাদ (সালালাহ
আলাইহি ওয়া সালাম)
আলাহর
রাসূল হওয়ার অর্থ এই যে, বিশ্বের একমাত্র
বাদশাহর (আলাহর)
পক্ষ হইতে বিশ্বের সকল মানুষের প্রতি সর্বশেষ নবী
মুহাম্মাদ সালালাহু
আলাইহি ওয়া সালাম-
এর মাধ্যমে একমাত্র নির্ভুল
হিদায়াত ও আইন-বিধান প্রেরিত হইয়াছে এবং এই হিদায়াত ও আইনবিধান
অনুযায়ী কাজ করিয়া পূর্ণাঙ্গ বাস্তব নমুনা কায়েম করিবার জন্যই
মুহাম্মাদ সালালাহু
আলাইহি ওয়া সালামে
ক নিযুক্ত করা হইয়াছে।
যাঁহারা এই পরম সত্য ও প্রকৃত বিষয়কে জানিয়া ও মানিয়া লইবেন
তাঁহাদের কর্তব্য হইবে:
১। হযরত মুহাম্মাদ (সালালাহু
আলাইহি ওয়া সালাম)-
এর নিকট হইতে
যেই হিদায়াত ও আইন-বিধান প্রামাণ্য সূত্রে পাওয়া যাইবে তাহা
দ্বিধাহীন ও অকুণ্ঠচিত্তে গ্রহণ করা;
২। কোন কাজে উদ্যোগী হওয়া বা কোন নিয়ম পদ্ধতি অনুসরণ হইতে
বিরত থাকিবার জন্য আলাহর
রাসূলের নিকট হইতে প্রাপ্ত আদেশ ও
নিষেধকেই যথেষ্ট মনে করা;
৩। আলাহর
রাসূল ব্যতীত অপর কাহারও স্বয়ংসম্পূর্ণ নেতৃত্ব মানিয়া না
লওয়া, কেননা অন্য কাহারও আনুগত্য হইতে হইবে আলাহর
কিতাব
ও রাসূলের সুনড়বাতের অধীন;
৪। জীবনের সকল ব্যাপারেই আলাহর
কিতাব ও রাসূলের সুনড়বাতকে
অকাট্য প্রামাণ্য, বিশ্বস্তসূত্র ও নির্ভুল জ্ঞানের একমাত্র উৎসরূপে গণ্য
করা। যেইসব ধারণা, খেয়াল, বিশ্বাস কিংবা নিয়ম-নীতি ও পন্থা উহার (কুরআন ও সুনড়বাহ) বিপরীত তাহা পরিত্যাগ করা এবং কোন
সমস্যার সমাধান প্রয়োজন হইলে তাহার জন্য হিদায়াত লাভের
উদ্দেশ্যে ও এই উৎসের দিকেই ধাবিত হওয়া;
৫। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক, বংশীয় ও জাতিগত, দলীয় ও সম্প্রদায়গত,
আঞ্চলিক ও ভাষাগত তথা সকল প্রকার হিংসা-বিদ্বেষ ও বিভেদ
হইতে মন-মগজকে মুক্ত ও পবিত্র করিয়া লওয়া এবং কাহারও
ভালবাসা বা অন্ধ ভক্তিতে এমনভাবে বন্দী না হওয়া যাহার দরুন উহা
রাসূলের উপস্থাপিত সত্যের প্রতি ভালবাসা ও ভক্তির উপর জয়ী কিংবা
তাহার প্রতিদ্বন্দ্বী হইয়া দাঁড়াইতে পারে;
৬। মুহাম্মাদুর রাসূলুলাহ
(সালালাহু
আলাইহি ওয়া সালাম)-
এর জীবন
চরিতকে কুরআনের বাস্তব ব্যাখ্যা এবং উহাকে সকল ব্যাপারে সত্যের
একমাত্র মাপকাঠি হিসাবে মানিয়া লওয়া। আলাহর
রাসূল ব্যতীত আর
কাহাকেও ভুলের ঊর্ধ্বে মনে না করা, কাহারও অন্ধ গোলামীতে
নিমজ্জিত না হওয়া বরং প্রত্যেককেই আলাহর
দেওয়া এই
মাপকাঠিতে যাচাই ও পরখ করিয়া যাঁহার যেই মর্যাদা হইবে তাঁহাকে
সেই মর্যাদা দেওয়া;
৭। হযরত মুহাম্মাদ (সালালাহু
আলাইহি ওয়া সালাম)-
এর নবুওয়াতের
পরে কোন ব্যক্তির এমন কোন মর্যাদা মানিয়া না লওয়া যাহার
আনুগত্য করা বা না করার ভিত্তিতে ঈমান ও কুফর সম্পর্কে ফায়সালা
হইতে পারে।
হযরত বোয়ালী রহমতুল্লাহ আলাইহী একটি কথা প্রায় বলতেন যে ন্য বুজে মনে মনে তারে বুজাইব কনে।
আমরা মুসলমানরা বর্তমানে তাই ।
এলেম হাসিল করা বড় নয় আমল করা বড় । আমরা এলেম( কালেমা ) শিখেছি পুরা কিন্তু আমল করি আধুরা ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন