‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ Secularism

লিখেছেন লিখেছেন বিভীষিকা ০৭ নভেম্বর, ২০১৩, ১২:২০:৩২ রাত

أعوذ باالله من الشيطان الرجيم

بسم الله الرحمن الرحيم

সুরা কাহাফঃ আয়াত নং= ১০৪- ১০৬

﴿الَّذِينَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُونَ أَنَّهُمْ يُحْسِنُونَ صُنْعًا﴾

১০৪) তারাই, যাদের দুনিয়ার জীবনের সমস্ত প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম সবসময় সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত থাকতো

.

﴿أُولَٰئِكَ الَّذِينَ كَفَرُوا بِآيَاتِ رَبِّهِمْ وَلِقَائِهِ فَحَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فَلَا نُقِيمُ لَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَزْنًا﴾

১০৫) এরা এমন সব লোক যারা নিজেদের রবের নিদর্শনাবলী মেনে নিতে অস্বীকার করেছে এবং তাঁর সামনে হাযির হবার ব্যাপারটি বিশ্বাস করেনি৷ তাই তাদের সমস্ত কর্ম নষ্ট হয়ে গেছে, কিয়ামতের দিন তাদেরকে কোনো গুরুত্ব দেবো না।

﴿ذَٰلِكَ جَزَاؤُهُمْ جَهَنَّمُ بِمَا كَفَرُوا وَاتَّخَذُوا آيَاتِي وَرُسُلِي هُزُوًا﴾

১০৬) যে কুফরী তারা করেছে তার প্রতিফল স্বরূপ এবং আমার নিদর্শনাবলী ও রসূলদের সাথে যে বিদ্রূপ তারা করতো তার প্রতিফল হিসেবে তাদের প্রতিদান জাহান্নাম৷

উপরোক্ত আয়াতসমূহের মাঝে আল্লাহ তায়ালা কয়েকটি Pronoun ব্যাবহার করেছেন, যেগুলো দ্বারা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের কথা উল্লেখ করেছেন।

আয়াতসমূহের বিষয়বস্তুঃ ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ

বিষয়বস্তুর শিরোনাম

১>সেকুলারিজম বলতে কি বুঝায়?

২> ধর্মবিমুখ বিভিন্ন মতবাদের উদ্ভব।

৩> স্যাকুলারদের চিন্তাধারা ও বিশ্বাসাবলী।

৪> মুসলিম সেকুলারিজমে বিশ্বাসী হতে পারবে কিনা?

৫> স্যাকুলারিজম কি মুসলিম সমাজে গ্রহণযোগ্য?

৬> ইসলাম কেন স্যাকুলারিজমকে প্রত্যাখান করে?

৭> নাস্তিক,মুক্তমনাদের একটি প্রশ্নের জবাব।

৮> উপসংহার।

১>সেকুলারিজম বলতে কি বুঝায়?

বাংলাদেশে সেকুলারিজমের অনুবাদ করা হয় ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’।

কিন্তু এ অনুবাদ সম্পূর্ণ ভুল অনুবাদ।

ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ অর্থ দ্বারা সেকুলারিজমের প্রকৃত তাত্পর্য প্রকাশ পায় না।

তাহলে সেকুলারিজম বলতে কি বুঝায়?

১> সেকুলারিজম নামকরণের প্রথম উদ্যোক্তা Holyoake যিনি Secular Society গঠন করে এর পক্ষে প্রথম আন্দোলন শুরু করেন,তার লিখিত English Secularism: A Confession of Belief (Chicago 1896)বইতে সেকুলারিজমের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, ” ‘সেকুলারিজম’ এমন একটি কর্তব্য পালন পদ্ধতি, যা শুধু ইহজীবনের সাথে সংশ্লিষ্ট ও কেবলমাত্র মানবীয় বিবেচনার উপর প্রতিষ্ঠিত এবং এটি তাদের জন্য যারা ধর্মতত্ত্বকে অস্পষ্ট, অপূর্ণ, অনির্ভরযোগ্য ও অবিশ্বাসযোগ্য মনে করে।”

২> ‘সেকুলারিজম’ হচ্ছে এমন একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক দর্শন যা সকল ধর্ম বিশ্বাসকে প্রত্যাখ্যান করে। [Encyclopedia বা বিশ্বকোষ]

৩> সেকুলারিজম’ এমন একটি মতবাদ, যেখানে থাকবেনা সৃষ্টিকর্তা ও পরকাল বিশ্বাস ভিত্তিক কোন ধরনের বিবেচনা। [Oxford Dictionary]

৪> ‘সেকুলারিজম’ বলতে বুঝায় নৈতিকতা ও শিক্ষা ধর্ম কেন্দ্রিক হওয়া উচিত নয় এই মতবাদ।[বাংলা একাডেমী কর্তৃক সংকলিত ও প্রকাশিত English-Bengali Dictionary]

‘সেকুলারিজম’ আর নাস্তিকতা যে একই মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ উপরের আলোচনার পর এ ব্যাপারে আর কোন বিতর্কের অবকাশ নাই।

বলা হচ্ছে, ‘ইসলামে কোন রাজনীতি নেই, কিংবা রাজনীতিতে ইসলাম নিয়ে আসার মানে হল সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা’।

পশ্চিমের ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা প্রায়ই বলে থাকে, “keep your religion to yourself, don’t bring it into politics” একই সুর ধরে আমাদের দেশের কেউ কেউ বলে, “ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার”

অর্থাৎ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বসবাসকারী রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য তারা আশ্রয় নেয় মানুষের রচিত কিছু আইন কানুন ও বিধানের।

২>ধর্মবিমুখ বিভিন্ন মতবাদের উদ্ভব:

স্যাকুলারিজমের উদ্ভবের পেছনে বেশ কিছু ধর্মবিমুখ- ধর্মবিদ্বেষী মতবাদের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। নিম্নে কয়েকটি মতবাদের উল্লেখ করা হলো।

১>বিবর্তনবাদ: ১৮৫৯ সনে ডারউইন (Charles Darwin) এর বই The Origin of Species। এই গ্রন্থে ডারউইন প্রাকৃতিক নির্বাচন (Natural Selection) এবং বংশগতি তত্ত্বের উপর গুরুত্বারোপ করেন। মূলত তিনি এই গ্রন্থে কমিনিউজমের উপর আলোচনা করেছেন।ইয়াহূদীরা সুকৌশলে এই মতবাদকে ব্যবহার করে তাদের স্বার্থ উদ্ধার করে।

২>নিতশার (Nietzsche) দর্শনের উদ্ভব: দার্শনিক নিতশা দাবী করেন- ইশ্বরের মৃত্যু হয়েছে। মানুষ হচ্ছে সুপারম্যান। মানুষকে ইশ্বরের স্থলাভিষিক্ত হওয়া উচিত।

৩>দুরখীম (ইয়াহূদী) এর দর্শন: তিনি সামষ্টিক বিবেক (Group mind) তত্ত্বের ভিত্তিতে মানুষদেরকে জন্তু ও বস্তু সত্তার সম্মিলিত রূপ বলে মত প্রকাশ করেন।

৪> কার্ল মার্ক্স (Karl Marx) (ইয়াহূদী) এর দর্শন: তিনি বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ইতিহাসকে ব্যাখ্যা করেন। মার্ক্স ‘‘অনিবার্য বিবর্তন’’ তত্ত্বে বিশ্বাস করতেন। তিনি কমিউনিজমের প্রচারক ও প্রথম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ধর্মকে জাতিসমূহের আফিম হিসেবে আখ্যায়িত করে।

৩> স্যাকুলারদের চিন্তাধারা ও বিশ্বাসাবলী।

১। নিছক বিজ্ঞানের ভিত্তিতে এবং বিবেক ও অভিজ্ঞতার শাসনাধীনে মানবজীবন প্রতিষ্ঠিত হবে।

২> আধ্যাত্মিক জগৎ ও বস্তুজগতের মধ্যে দুর্ভেদ্য ব্যবধান তৈরী করা।

৩> ধর্মকে রাজনীতি থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন রাখা এবং নিরেট বস্তুবাদী ভিত্তির উপর জীবন প্রতিষ্ঠিত করা।

৪> জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে pragmatism (সুবিধাবাদ) প্রতিষ্ঠা করা।

৫> শাসন, রাজনীতি ও নীতি নৈতিকতার ক্ষেত্রে ম্যাকিয়াভেলীর সূত্র অনুসরণ করা।

৬>অশ্লীলতা ও চারিত্রিক অবক্ষয় ছড়িয়ে দেয়া এবং পারিবারিক ভিত ভেঙ্গে দেয়া। যেহেতু পরিবার হচ্ছে সামাজিক বন্ধনের প্রথম বীজ।

৭> ইসলাম, কুরআন ও নবুয়তের মূলে আঘাত করা।

৮>এ দাবী করা যে, ইসলামী ফিকহ বা ইসলামী আইন শাস্ত্র রোমান আইন থেকে উদ্ভুত।

৯>এই দাবী তোলা যে, ইসলাম বর্তমান সভ্যতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ইসলাম মানুষকে পশ্চাৎমুখী হওয়ার আহবান জানায়।

১০>পাশ্চাত্য চিন্তাধারার আলোকে নারীমুক্তির আহবান জানানো।

১১> প্রাচীন সভ্যতাগুলোকে পুনর্জীবিত করার চেষ্টা করা।

৪> মুসলিমরা সেকুলারিজমে বিশ্বাসী হতে পারবে কিনা?

কোরআন ও হাদিস থেকে এ কথা সুস্পষ্ট যে কোন মুসলিম সেকুলারিজমে বিশ্বাসী হওয়ার সুযোগ নেই।

এখন দেখুন কুরআন এ ব্যপারে কি নির্দেশনা দিয়েছে –

(أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ ۚ فَمَا جَزَاءُ مَن يَفْعَلُ ذَٰلِكَ مِنكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرَدُّونَ إِلَىٰ أَشَدِّ الْعَذَابِ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ﴾

##তবে কি তোমরা গ্রন্থের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে দূগর্তি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই। কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন। (সূরা আল বাক্বারাহ , আয়াত : ৮৫)

وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْكَافِرُون))

##যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী আইন পরিচালনা করে না, তারাই কাফের।(সুরা আল মায়েদাহ আয়াতঃ৪৪)

وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ

## আর যারা আল্লাহর নাযিল করা আইন অনুযায়ী ফায়সালা করে না তারাই পাপাচারী। (সুরা আল মায়েদাহ আয়াতঃ৪৫)

لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجا

## তোমাদের প্রত্যেকের জন্য একটি শরীয়াত ও একটি কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করে রেখেছি ৷ (সুরা আল মায়েদাহ আয়াতঃ৪৭)

(সুরা আল মায়েদাহ আয়াতঃ৪৮)

أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ ۚ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ حُكْمًا لِّقَوْمٍ يُوقِنُونَ

## (যদি এরা আল্লাহর আইন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়) তাহলে কি এরা আবার সেই জাহেলিয়াতের ফায়সালা চায় ? অথচ যারা আল্লাহর প্রতি দৃঢ় প্রত্যয়ের অধিকারী তাদের দৃষ্টিতে আল্লাহর চাইতে ভাল ফায়সালাকারী আর কেউ নেই ৷

(সুরা আল মায়েদাহ আয়াতঃ৫০)

অতএব ধর্মনিরপেক্ষতা, সেকুলারিজম সুস্পষ্ট কুফরি।এ ব্যাপারে বিশ্বের সমস্ত আলেম- উলামা ইসলামী স্কলারগণ একমত। এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নাই।কোন মুসলিম কখনও ধর্মনিরপেক্ষ হতে পারেনা।

মেজর (অবঃ) এম এ জলিল, তাঁর লিখিত গ্রন্থে বলেছেন,

সেক্যুলারিজমকে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে প্রচার করে তাদের পরিচয় বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন,

“ যারা মুক্তিযুদ্ধে ধর্মীয় চেতনার অনুপস্থিতি আবিষ্কার করতে চান,

তাদের অবস্থান মুক্তিযুদ্ধের ধারে কাছেও ছিল না।”

অতএব , হে যুবক মুক্তি চাও কি?মানব রচিত সকল মতবাদই ভণ্ডামি ছাড়া কিছু নয়। মানব রচিত কোন মতবাদই মুক্তির দিশা দিতে পারবেনা।

মানবতার মুক্তির একমাত্র পথ হলো ইসলাম। আর তাই,

“আমরা আপনাকে ডাকছি ইসলামের সুমহান আদর্শের দিকে..

ইসলামের অনন্য নির্দেশের দিকে..

ইসলামের কল্যানময় পথের দিকে..

যদি আপনি এটাকে রাজনীতি মনে করেন..

তাহলে এটাই আমাদের রাজনীতি। “

“এই দুর্যোগে মুক্তির অন্বেষায় পথহারা ক্লান্ত তুমি

এসো বন্ধু এসো তোমাকে নিয়ে যাব মুক্তির মোহনায় ।”

৬> ইসলাম কেন স্যাকুলারিজমকে প্রত্যাখান করে?

নোবেলবিজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. অমর্ত্য সেন তার ‘আরগুমেন্টেটিভ ইন্ডিয়ান’ বইয়ে কোরআন ও হাদিস নির্দেশিত ইসলামকে প্রত্যাখ্যান করতে মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এগুলো হাজার বছরেরও বেশি পুরনো হওয়ায় তা পরিত্যাগ করে হিন্দু ধর্ম থেকে উদ্ভব সম্রাট আকবরের ‘দ্বীন-ই-ইলাহি’কে মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করার পরামর্শ দেন তিনি। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের (সেক্যুলারিজম) ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি এ মত দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী ‘আরগুমেন্টেটিভ ইন্ডিয়ান’ বইয়ের সমালোচনা করে ‘বাংলাদেশ পলিটিক্যাল সায়েন্স রিভিউ’ নামের গবেষণা জার্নালে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। ওই প্রবেন্ধের শিরোনাম হলো ‘অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন ও দৈশিক দোষের আবর্তে ভারতীয় সেক্যুলারিজম : বিভ্রান্তিকর একটি ব্যাখ্যা’।

ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী সেক্যুলারিজমকে প্রত্যাখ্যাত মতবাদ হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে তিনি কয়েকজন বিজ্ঞানীর গবেষণা ও তত্ত্ব উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বিজ্ঞান এরই মধ্যে সেক্যুলারিজমকে প্রত্যাখ্যান করেছে; বিগ ব্যাং তত্ত্ব, দেশ-কাল-পদার্থ-শক্তি তত্ত্ব, বিশ্বতাত্ত্বিক তত্ত্বের বিস্তৃত রূপসহ নানা তত্ত্ব আবিষ্কারের মাধ্যমে সর্বশক্তিমান আল্লাহর অস্তিত্ব প্রমাণ করেছে।

বিজ্ঞানী পল ডেভিস তার "সুপার ফোর্স" এবং পদার্থবিদ হেনস্ তার "পারফেক্ট সাইমেট্রি" স্যামুয়েল ভিসকাউন্ট তার "বিলিফ অ্যান্ড অ্যাকশন" গেরাল্ড শ্রয়ডার তার "দি হিডেন ফেস অব গড" বইয়ে আল্লাহর অস্তিত্ব প্রমাণ করেছেন এবং ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

৭> নাস্তিক,মুক্তমনাদের একটি প্রশ্নের জবাব।

নাস্তিক, মুক্তমনা ও প্রগতিশীলরা সবসময় বলে থাকে যে, ধর্ম ও বিজ্ঞান দুই প্রান্তের দুটি আলাদা বস্তু । অথচ আইনস্টাইন বলেছেন-

"ধর্মবিহীন বিজ্ঞান খোঁড়া আর

বিজ্ঞানবিহীন ধর্ম অন্ধ "

যোসেফ মুরে যিনি medicine and physiology তে নোবেল পেয়েছিলেন।তিনি বলেছেন-

“স্রষ্টা আমাদের যে সকল জিনিস দিয়েছেন আমরাতো শুধুমাত্র সেগুলো নিয়ে কাজ করছি...বিজ্ঞান ও ধর্মের মধ্যে বিরোধপূর্ন সম্পর্ক থাকার কোন কারন নেই।দুটোই একই উৎস থেকে নির্গত।একমাত্র সত্য উৎস সর্বশক্তিমান স্রষ্টার নিকট থেকে”।

প্রফেসর ডেরেক বার্টন যিনি রসায়নে নোবেল পেয়েছিলেন।তিনি বলেছেন-

“স্রষ্টাই সত্য।সত্য ধর্ম ও বিজ্ঞান এ দুয়ের মধ্যে কোন অসংগতি নেই।দুটোই একই সত্যের সন্ধান করছে।বিজ্ঞান দেখায় যে স্রষ্টার অস্তিত্ব আছে ।

৮> উপসংহার।

উপরের আলোচনা থেকে আমরা উপসংহারে এসে বলতে পারি যে যারা আল্লাহর কিতাবকে সামগ্রিকভাবে গ্রহণ না করে শুধু ইসলামের কতিপয় অনুষ্ঠানকেই দিয়েই সন্তুষ্ট, তাদের প্রতি কুরআন যে কঠোর সর্তক বাণী উচ্চারণ করেছে তা যে কোন সত্যিকার মুসলমানের অন্তরকেই কাঁপিয়ে তুলবার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তায়ালা বলেন যে,

(أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ ۚ فَمَا جَزَاءُ مَن يَفْعَلُ ذَٰلِكَ مِنكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرَدُّونَ إِلَىٰ أَشَدِّ الْعَذَابِ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ﴾

- তোমরা কি কিতাবের কতক অংশের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছ এবং আর কতক অংশকে অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে তাদের জন্য এ দুনিয়ার জীবন লাঞ্ছনা ও অবমাননা ছাড়া আর কি বদলাই বা থাকতে পারে। অতঃপর পরকালে তাদেরকে ভয়ঙ্কর শাস্তির দিকে ঠেলে দেওয়া হবে। (সূরা আল বাক্বারাহ , আয়াত : ৮৫)

والله أعلم بالصواب, الله يهدينا جميعا

বিষয়: বিবিধ

১৫৮৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File