চাচা-ভাতিজির বিশেষ সাক্ষাৎকার

লিখেছেন লিখেছেন ভাঙা নৌকা ১৯ জানুয়ারি, ২০১৫, ০২:১৫:১২ দুপুর

২০ দলের ডাকা টানা কর্মসূচি চলছে বাংলাদেশে। হয়তো বিরোধী দল এবারই শেষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যেভাবেই হোক আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতেই হবে। কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে নেমেছেন ২০ দলীয় জোট ও দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ। অবরোধ ও হরতালের মধ্যদিয়ে চলছে অনেক দিন কেটে গেল। জনগণ প্রশ্ন করছে দীর্ঘদিন অবরোধ কর্মসূচিতে কি আওয়ামী সরকারের বা দেশের কোন ক্ষতি হচ্ছে কিনা?

আমরা তো সাংবাদিক। আমরা এসব রাজনীতি ফাজনীতি কিছুই বুঝি না। তাই দেশের জনগণকে সঠিক সংবাদ দিতে পারবে বাংলার বর্তমান ডিগবাজী নায়ক, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দুত ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ইতোমধ্যে সে বর্তমান অবরোধ-হরতাল সম্পর্কে অনেক পজেটিভ কথা বলেছেন। আমরা আপনাদের সঠিক খবর দেয়ার জন্য এরশাদ চাচার সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলব। চাচার সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন দেশের প্রখ্যাত হলুদ সাংবাদিকতার মডেল, সাংঘাতিক মুন্নি সাহা।

মুন্নি সাহা : চাচা, আপনি তো বিরোধী দলে আছেন। অবরোধ কেমন লাগছে।

এরশাদ : অবরোধ কি লাগানোর জিনিস নাকি?

মুন্নি সাহা : না, চাচা। আমি ঐ অর্থে বলি নাই। আমি বলছিলাম টানা ১৩ দিনের অবরোধ ও হরতালে দেশের পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে গিয়েছে।

এরশাদ : দেখুন, দেশের পরিস্থিতি যে এমন হবে আমি চিন্তাও করতে পারি নাই। “দেশে সংঘাত প্রাণহানি, জ্বালাও-পোড়াও বাড়ছে। সরকারতো জনগণকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। শেষ পর্যণÍ সব দলকে আলোচনায় বসতেই হবে।”

মুন্নি সাহা : চাচা, গত বছর তো আলোচনায় বসার অনেক সুযোগ ছিল। তখন আপনি ডিগবাজি দিলেন কেন?

এরশাদ : দেখুন, জীবনের প্রতি কার না মায়া আছে? কথায় আছে না ‘নিজে বাঁচলে বাপের নাম’। যেভাবে ধরে ধরে ফাঁসি দিচ্ছে। আমি ফাঁসির হাত থেকে বাঁচার জন্য অনেক কৌশল অবলম্বন করলাম। আত্মহত্যাও করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কোনো সুবিধা না হওয়ায় আমাকে ডিগবাজি দিতেই হলো।

মুন্নি সাহা : আপনিতো এখন বলতে গেলে এক প্রকার ক্ষমতায় আছেন। তো আপনি সরকারের বিপক্ষে কথা বলছেন কেন?

এরশাদ : দেশের পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে। আমার খুব মায়া লাগে। আমি তো কিছু বলতে পারি না। যদি কোন বিপদ হয়। দেখুন না এই কয়েকদিনের অবরোধে ২৫ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে আরো ২৮ জন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। আমি আগেই “ধ্বংস, জ্বালাও-পোড়ায়ের রাজনীতির আশঙ্কা করেছিলাম। আমি আগেই বলেছিলাম সংকট নিরসনে সবাইকে আলোচনায় বসতে হবে। তারা আমার কথা রাখেননি। এখন রাজনৈতিক হানাহানি বাড়ছে। শেষ পর্যন্ত সব দলকে হয়তো আলোচনায় বসতে হবে।”

মুন্নি সাহা : বর্তমানে দেশের নাশকতার জন্য কে দায়ী?

এরশাদ : আমার মনে হয় “একটি দল জনগণকে জিম্মি করে রাজনীতি করতে চায়। বিভিন্ন স্থানে যারা পুড়ে মরছে তারা সবাই সাধারণ মানুষ। তাদের পরিবারের কেউ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। মানুষ মেরে কি ক্ষমতায় যাওয়া যায়? জনগণকে নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব সরকারের। আমার মনে হয় সরকার এতে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য সরকারকে একদিন জবাবদিহি করতে হবে।”

মুন্নি সাহা : আপনি হয়তো বুঝতে পারছেন, এই কয়েকদিনের অবরোধে দেশ ও মানুষের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আপনার জানা মতে প্রধানমন্ত্রীর মনের অবস্থা কেমন?

এরশাদ : দেখুন জনগণ ক্ষমতার উৎস। আর এই জনগণ আজ ক্ষতির সম্মুখিন। আজ জনগণ দুধ ঢেলে আন্দোলন করছে।

মুন্সি সাহা : আমি আপনার কথা ঠিক বুঝতে পারলাম না। দুধ কোথা থেকে ঢালছে? আর কোথায় ফেলছে? আর কেনই বা ঢালছে।

এরশাদ : আপনি মনে হয় বিষয়টি অন্য সেন্সে নিয়েছেন। আমি বলছিলাম বর্তমানে দীর্ঘ অবরোধের ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। খামার ব্যবসায়ীরা দুধ জনগণের হাতে তুলে দিনে পারছেন না। গরু তো তার দুধ ধরে রাখতে পারে না। খামারদের সে দুধ গরু থেকে বের করতেই হয়। কিন্তু সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় আজ খামার ব্যবসায়িরা ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে।

মুন্নি সাহা : থাক সেসব কথা। আমার প্রশ্ন ছিল- এই কয়েকদিনের অবরোধে দেশ ও মানুষের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আপনার জানা মতে প্রধানমন্ত্রীর মনের অবস্থা কেমন?

এরশাদ : দেখুন উনি একজন মহিলা মানুষ। আমি মেয়েদের সাথে অনেক চলাফেরা করেছ্।ি তাদের মনের অবস্থা আমিই খুব ভালো জানি। ম্যক্সিমাম মেয়েরাই মনের ভেতর অনেক কথা জমা রাখে। কিন্তু তারা বলতে পারে না। কথায় আছে নাÑ ‘মেয়েদের বুক ফাটে কিন্তু মুখ ফোটে না’। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর অবস্থাও তাই হয়েছে। দেশের মানুষ আজ বড় অসহায়। দেশের মানুষ মরে যাচ্ছে। আগুনে পুড়ছে। অবরোধের কারণে না খেয়ে মরছে। ম্যাডাম কি তা দেখছেন না? অবশ্যই তিনি তা উপলব্ধি করছেন। কিন্তু তিনি কোনো কিছু বলতে পারছেন না। কারণ কথা বললেই আজ সংলাপ করতে হবে। আর সংলাপে গেলেই তাকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। আর ক্ষমতা ছাড়ার পর তার পতন অনিবার্য। আর ম্যাডামের একটি দুঃখতো আছে আপনি জানেন। স্বাধীনতার পর স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। তার প্রতিশোধ নিচ্ছে ম্যাডাম আজ। তিনি মনে করছেন দেশের মানুষ মরুক। আমার বাবা ও আমার পরিবার তাদের মৃত্যুতে শান্তি পাক।

মুন্সি সাহা : চাচা, আপনার সাথে আজ অনেক কথা হলো। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আমার চোখে পানি আনলেন।

এরশাদ : কেন? আপনার চোখে পানি কেন?

মুন্নি সাহা : মেডামের পরিবারের হত্যার কথা শুনলে আমার চোখে পানি আসে।

এরশাদ : আপনি মেডামের পরিবারের জন্য কাঁদছেন। আর আমি দেশের এই বর্তমান পরিস্থিতির জন্য কাঁদছি। জনগণের জন্য কাঁদছি।

মুন্সি সাহা : আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে। আপনি আবার ডিগবাজি দিতে যাচ্ছেন?

এরশাদ : হ্যাঁ পরিস্থিতি যদি ঘোলাটে হয় তাহলে ডিগবাজি দিতেই হবে। দেশের জনগণ আমাকে ভালোবাসে। তাই জনগণের জন্য আমার ডিগবাজি নয় অনেক কিছু করার আছে।

মুন্নি সাহা : চাচা, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ ফেলে এখানে এসেছেন।

এরশাদ : এখানে আমি তো আসি নাই। আমার মনে হচ্ছে আপনারই বড় ঠ্যাকা। আপনেই এসেছেন। তবে আপনাকেও ধন্যবাদ।

বিষয়: রাজনীতি

৩১৬৩ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

300795
১৯ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:২৯
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
300800
১৯ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:৫১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আমি কোন পথে যে চলি,কোন কথা যে বলি...
300802
১৯ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০৩:০৯
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : অনেক সুন্দর পোস্ট, চালিয়ে যান আপনার কলমকে।
300863
২০ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০৩:৩৮
মাটিরলাঠি লিখেছেন : @বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন: অনেক সুন্দর পোস্ট, চালিয়ে যান আপনার কলমকে।
300888
২০ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৯:২৩
sarkar লিখেছেন : ভাল সাহ্মাৎকার উথ্থাপন করেছেন।আর একটু রম্য রস ঢালতে পারলে স্পাইসি হতো।যা আছে চলবে।চালিয়ে যান।
301352
২৩ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:৪৭
দ্বীপ জনতার ডাক লিখেছেন : চাচা কচি মাল ফেলে হুস ঠিক হয়ে যাবে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File