নববর্ষে জাবিতে ছাত্রলীগ কর্মীর হাতে দুই ছাত্রী লাঞ্ছিত
লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ সাব্বির ১৭ এপ্রিল, ২০১৩, ০৯:০৯:২৮ রাত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের টারজান পয়েন্টে রোববার সকাল ১১ টায় বাংলা নববর্ষকে বরণ করতে এসে ৩৭তম ব্যাচের দুই নারী শিক্ষার্থী লাঞ্ছিত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০ টায় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নেতৃত্ত্বে আ ফ ম কামাল উদ্দীন হল থেকে বর্ষবরণের একটি শোভাযাত্রা বের হয়। বেলা ১১ টায় শোভাযাত্রাটি মেহের চত্বর হয়ে টারজান পয়েন্টে গেলে ৩৭ তম ব্যাচের দুই নারী শিক্ষার্থীর গায়ে অনুমতি ছাড়া রং ছিটিয়ে দেয় কামাল উদ্দীন হলের ছাত্রলীগ কর্মী তানভির হাসান খান (দর্শন বিভাগ,৩৭ তম ব্যাচ)। এরপর ওই ছাত্রী তানভিরকে ছাতা দিয়ে আঘাত করলে তানভির তাকে প্রকাশ্যে চড় মেরে ঘটনাস্থল থেকে সরে যায়।
এর কিছুক্ষণ পর শিক্ষক সমিতির সভাপতি অজিত কুমার মজুমদার ও প্রক্টর সোহেল আহমেদ সেখানে আসেন। ইতিমধ্যে পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে কামাল উদ্দীন হলের ছাত্রলীগ নেতা সুবল আকাশ সেখানে আসেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। এরপর সুবল প্রক্টর ও শিক্ষক সমিতির সভাপতির সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়।
এর মধ্যে উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন সেখানে উপস্থিত হন। আনোয়ার হোসেন কে মারছে জানতে চাইলে এক পর্যায়ে সুবল বলেন, “রং মারছে তো কী হইছে ?”
এরপরই উপাচার্য ও অন্যদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের এক পর্যায়ে উপাচার্য আকাশকে চড় মারে। মুহূর্তে এই ঘটনা সমগ্র ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে জাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়ন প্রতিবাদ মিছিল বের করে। এসময় অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীকেও মিছিলে দেখা যায়।
প্রক্টর সোহেল আহমেদ ঘটনা সম্পর্কে বলেন, “দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
এদিকে অনেক অনুসন্ধান করেও আক্রান্ত ওই দুই ছাত্রীর নাম পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আহবায়ক মৈত্রী বর্মন বলেন, “আগামীকাল যদি তারা লিখিত অভিযোগ দেয় তবেই নাম জানতে পারবেন। এর আগে আমরা নাম জানাবো না।”
এদিকে এ ঘটনায় চাপের মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। ঘটনা ঘটার পর থেকে সভাপতি জনি ও সাধারণ সম্পাদক রাজিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্যকে লাঞ্ছিত ও ৮ এপ্রিল জাবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাজুর ওপর ছাত্রলীগ হামলা করে।
সত্য কথা বলতে কি রতনে রতন চেনে, শুয়ারে চেনে কচু। ওদের দোষ কি বলুন এটা তো বড় ভাইদের দেখানো পথ? শোনেনি শেখ পরিবারের সুকৃতির কথা? শেখের ছেলেদের সোনালী ইতিহাস। যার কারনে মেজর ডালিমের হাতে জীবন দিতে হলো পুরো পরিবারকে। থুক্কু ওরা তো সোনার ছেলে? ধর্ষণের সেঞ্চুরী করে মিষ্টি বিতরণ করাই ওদের কাজ। আসুন একদিনের জন্য হলেও আমরা ওদের মতো সোনার ছেলে হয়ে যাই। ভুলে যাই নিজের পরিচয়। আমরা ১০০ জনকে নয় একজনকে একটু লাঞ্চিত করতে চাই ভয় নেই ধর্ষণ করা হবে না, শুধু একটু লাঞ্চিত করতে চাই। কি বুকে সাহস আছে তো?
মনে করুন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী কিংবা সরকারের দায়িত্ব প্রাপ্ত কোন মন্ত্রীর যুবতী মেয়ে আমাদের সহপাঠী। তাকে দেখলেই আপনার আমার খুব কাছে পেতে ইচ্ছা করে। কিন্তু আমরা তাকে কাছে ডাকার সাহস দেখাবো না। কারন ওনি তো মন্ত্রীর মেয়ে।
ধরুন, অদৃশ্য সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় আপনি আমি সবাই খুব ভদ্র হয়ে গেছি। কিন্তু রাসেল নামের একটি ছেলে শয়তানই রয়ে গেছে। আমরা তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি, কিন্তু পরি না। কোন এক বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আড্ডা দিচ্ছি আমি, আপনি, রাসেলসহ সব বন্ধুরা। হঠাৎ কোথাও থেকে আমাদের মাননীয় মন্ত্রীর সেই মেয়ের আগমন। আমাদের মাঝে গল্প চলছিলো মেয়েলী ব্যাপার সংক্রান্ত। সবাই একটু হট, যেহেতু মেয়েলী ব্যাপার। আমাদের মধ্য রাসেল আরো বেশি হট। তার কথাবর্তা শুনে মনে হচ্ছে যে কোন সময় দুঃঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে পারে। সেই মহুর্তে যেহেতু আমাদের সামনে মন্ত্রী সাহেবের মেয়ের আগমন, তাই রাসেল নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে দৌড়ে উঠে গিয়ে আমাদের মন্ত্রী সাহেবের আদরের মেয়েকে চেপে ধরে একটা চুমা খেল। মেয়েটি কিছুই বুঝে উঠতে পারলো না। যখন সে বুঝলো তখন সে রাসেলকে দেখে নেওয়ার বক্তৃতা ঝাড়লো। রাসেল তার কথা শুনে আরও দ্বি'গুণ শক্তি সঞ্চার করে আর একটি চুমো দিল। মেয়েটি তখন হেল্প, হেল্প বলে চিৎকার করতে লাগনো। আমি আগেই বলেছি আমরা যেহেতু কিছুক্ষণের জন্য শয়তান হতে চাই, তাই সে মহুর্তের জন্য শয়তান হয়ে গেলাম।
যেহেতু মেয়েটি আমাদের চোখের সামনে চিৎকার করছিলো, আমরা চাইলেই তাকে হেল্প করতে পারতাম। কিন্তু করিনি। কারণ আমরা সে মহুর্তের জন্য শয়তান হয়ে গেছি। আমরাও দারুণ উপভোগ করলাম রাসেলের দ্বারা মন্ত্রীর মেয়ের শ্লীলতা হানি।
ইত্যোমধ্যে মন্ত্রী মসাই-এর কাছে মেয়ের শ্লীলতাহানির খবর পৌছে গেলো। সকল মিডিয়াতে মন্ত্রীর মেয়ের ছবিসহ ঘটনাটির সংবাদ গুরুত্ব দিয়ে ছাপলো। পাঠক চলুন এবার আমরা আমাদের সেই প্রিয় মন্ত্রীর কাছে গিয়ে জেনে নিই তার অনুভূতি কেমন?
মন্ত্রী সাহেব এখন কি বলবেন আমাদের সোনার দোস্ত রাসেল কে?
রেগে গিয়ে তাকে পুলিশ দ্বারা আটক করে রিমান্ডে পাঠাবেন, না তিনি এটি করতে পারেন না। কারন ধর্ষনের সেঞ্চুরী উদযাপন করার পরে ওনারা সেঞ্চুরিয়ানকে সোনার ছেলে বলে বুকে তুলে নেন। তাহলে তিনি এখন কি করবেন। তিনি কি রাসেলর মাথায় হাত বুলিয়ে বলবেন, ও ছোট ছেলে এরকম বয়সে, এরকম একটু আধটু ভুল করতে পারে? না কি চালিয়ে যাও বাছাধন, সেঞ্চুরীটা আমার মেয়েকে দিয়েই উদযাপন করো।
পাঠক, আমাদের (কাল্পনিক) মন্ত্রী মহোদয় যদি ওনার মেয়ের শ্লীলতাহানি মেনে নিতে পারেন, তাহলে মনে রাখবেন-ছাত্রলীগ কর্মীর হাতে দুই ছাত্রী লাঞ্ছিত হওয়া এটাতো কেন ব্যাপরই না?
বিষয়: বিবিধ
১৮৯২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন