সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বলছি আপনার বগুড়া পিছিয়ে গেল শত বছর

লিখেছেন লিখেছেন জানজাবিল ব্লগিং ০৭ মার্চ, ২০১৩, ০১:৫০:৩১ দুপুর

পত্র পত্রিকা টিভি মিডিয়া খুললেই চোখে পড়ছে বগুড়া শহরের ধ্বংস যজ্ঞের ভয়াবহ চিত্র। গত ৩ দিনের হরতালের প্রথম দিন জামাত শিবিরের ডাকা হরতালের প্রথম দিন শেষ রাতে জামাত শিবিরের তান্ডব বগুড়া শহরবাসী তারা দেখেছে ক্ষতবিক্ষত বগুড়া রেলস্টেশন, আজিজুল হক কলেজের বিধ্বস্ত নামফলক। শহরের ইয়াকুবিয়া মোড় ও শহীদ জব্বার সড়কের দুটি কুরিয়ার সার্ভিসের অফিস, একটি বেসরকারি টেলিভিশন ও একটি ইলেকট্রনিকসের দোকানের পোড়া ক্ষতশহরের এই ধ্বংসযজ্ঞ পেছনে ফেলে শাজাহানপুর হয়ে নন্দীগ্রামে পৌঁছার পর বিধ্বস্ত উপজেলা প্রশাসন কার্যালয় দেখার পর থমকে দাঁড়াবেন যে কেউ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা কৃষি অফিস, উপজেলা প্রকৌশল অফিস, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়, উপজেলা মৎস্য অফিস, উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিস ও উপজেলা নির্বাচন অফিস—সরকারের ১৬টি দপ্তর পুড়ে একাকার। উপজেলা কার্যালয়ের পাশে উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফের কার্যালয়, বাড়িও আগুনে পোড়া।

চারপাশে পোড়া গন্ধ। উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে থাকা দোতলা ভবনের প্রতিটি কক্ষের আসবাব আর নথিপত্র পুড়ে ছাইয়ের স্তূপ হয়ে আছে। দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়েছে। গত রোববার ভোরে এখানকার সবকিছু জ্বালিয়ে দিয়েছে জামায়াত-শিবির।

বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে দেখা গেল, সব কটি টেবিল, টেলিভিশন, কম্পিউটার, টেলিফোনসেট, ফ্যাক্স মেশিন, সরকারি সব নথিপত্র পুড়ে ছাই হয়ে আছে। উপজেলা কার্যালয়ের কর্মচারীরা দিনভর বিধ্বস্ত এসব কক্ষ পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছেন।

পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ইউএনওর সরকারি জিপসহ কয়েকটি গাড়ি। নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আহসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘হামলাকারীরা ভবনের প্রতিটি কক্ষের প্রতিটি দপ্তরে আগুন দিয়েছে। সরকারি সব নথিপত্র তারা পুড়িয়ে ফেলেছে।

উপজেলার সব উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কাগজপত্র, কর্মচারীদের চাকরিসংক্রান্ত রেকর্ড বই, বিভিন্ন সরকারি মামলা, ঋণ, নকশা, ভাউচার সব পুড়িয়ে দিয়েছে। আর্থিক ক্ষতির হিসাব করলে তা ১০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘আগুনে যেসব নথিপত্র ছাই হয়ে গেছে, সেগুলোর কী হবে, আমরা এখনো জানি না। তবে একটি কথা বলতে পারি, স্বাধীনতার আগে-পরে গত ১০০ বছরে এ দেশে এমন বীভৎস ঘটনা কোথাও ঘটেছে বলে আমার জানা নেই।’

থানার পুলিশ ও স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, রোববার দিবাগত রাত তিনটা থেকে বিভিন্ন মসজিদের মাইক থেকে গুজব ছড়িয়ে ‘জিহাদে নামতে’ আহ্বান জানানো হয়। দীর্ঘক্ষণ চলে এই মাইকিং। তারপর ভোররাতে কয়েক হাজার লোক জড়ো করে জামায়াত-শিবির লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উপজেলা কার্যালয়ে হামলা চালায়। তারা পেট্রল ঢেলে একের পর এক দপ্তর জ্বালাতে থাকে। গাছ কেটে ও বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের দীর্ঘ পথ অবরোধ করে, যাতে ফায়ার সার্ভিসের কোনো গাড়ি আগুন নেভাতে আসতে না পারে। দিনভর আগুন জ্বলে। সব পুড়ে ছাই হয়ে পরদিন বিকেলে নেভে সেই আগুন।

এই ধ্বংসযজ্ঞের ফলে বগুড়া শহর পিছিয়ে গেল শত বছর। সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এলাকা তিনি নিজেই গড়েছিলেন। আজ জামাত শিবিরের তান্ডবের ফলে সরকারি অফিস বলতে কিছুই নেই।

বিষয়: বিবিধ

১৩৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File