টুডে ব্লগের উত্থান এবং সুযোগের সদ্ব্যবহার
লিখেছেন লিখেছেন তরঙ্গ ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১১:০৪:৪৩ সকাল
টুডে ব্লগে ঘুরে গিয়েছিলাম বেশ ক'দিন আগেই। রেজিস্ট্রেশন করিনি তখন। আমার দেশ পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে বিজ্ঞাপন পেয়ে আজ আবার ঢুকলাম, রেজিস্ট্রেশন করেই ফেললাম।
ভেতরের খবর জানিনা, কিন্তু একজন সাধারণ পাঠক হিসেবে ব্লগটি দেখে আমার যে ফাস্ট ইমপ্রেশন হয়েছিল তা প্রকাশ করা যেতে পারে। প্রথম দেখায় এটিকে মনে হলো স্রেফ সোনার বাংলাদেশ ব্লগ তথা এসবি ব্লগের ফটোকপি। ক'দিন বাদে আজ বার ঢুকলাম, মনে হলো কিছু পার্থক্য আছে বা কর্তৃপক্ষের স্বকীয় কিছু করার চিন্তা আছে। প্রতিদ্বন্ধিতার জগতে প্রতিদ্বন্ধিদেরকে চারভাগে ভাগ করা যেতে পারেঃ লিডার, চ্যালেঞ্জার, ফলোয়ার এবং নিচার (nicher)। সামু ব্লগকে লিডার বলা যেতে পারে। এসবি ব্লগ নিচার হিসেবে আগমন করেও চ্যালেঞ্জার পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, অসম্ভব নয় যে এ গতিতে চলতে থাকলে সে লিডার হয়ে যাবে। নিচার হচ্ছে ভিন্ন কিছু প্রয়োজন পূরণের উপাদান নিয়ে যে আগমন করে এমন প্রতিদ্বন্ধি। এসবি বা সোনার বাংলাদেশ ম্যাগাজিন প্রচলিত ইন্টারনেট পেইজগুলোর মধ্যে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু প্রয়োজনকে পূরণ করেছে এবং স্বাদ প্রদান করেছে এবং এর ব্লগটিও সেভাবেই উঠে এসেছে।
টুডে ব্লগকে এক নজর দেখে আমার নিকট ফলোয়ার বা অন্যের অনুসরণকারী মনে হয়েছে। তবে ফলো করা সবসময়ই খারাপ নয়। ফলোয়ার এর চারটি ক্যাটাগরি রয়েছে। ১. কাউন্টারফেইটার বা এক কথায় নকল পণ্য তৈরী করে ব্লাক মার্কেটে বিক্রয়কারী। এরা হলো চোর ২. ক্লোনার বা ডিজাইন ও ব্রাণ্ড নেইম আইনের হাত থেকে বাঁচতে হালকা পাতলা কিছু চেইঞ্জ করে বিক্রয়কারী। যেমন রাটা-বালা-বাঢা জুতা বা নকলা-এনসিকিয়া মোবাইল ফোন। এদেরকে বলা যায় ধোকাবাজ ৩. ইমিটেটর বা একই ডিজাইনের পণ্য নিজ নামে বিক্রয়কারী। এদেরকে বলা যেতে পারে মেরুদণ্ডহীন পরজীবী যার কোন স্বকীয়তাসৃষ্টির যোগ্যতা নেই। এরা বেঁচে থাকে কিন্তু কোন ঢেউ তুলতে পারেনা কখোনো। টুডে ব্লগকে প্রথম দেখায় আমার এমনই মনে হয়েছিল।
৪. এড্যাপ্টার বা অন্যেরটা অনুসরণকারী বটে তবে যারটা অনুসরণ করে তার চেয়ে অধিক ও ভিন্ন কিছু সাথে জুড়ে দেয়। ফলোয়ারদের মধ্যে এরাই হচ্ছে প্রশংসার যোগ্য মাথা উঁচু করা ফলোয়ার যারা খুব বেশি দিন ফলোয়ার থাকেনা, সহসাই ছাড়িয়ে যায় অন্যকে, হয়ে যায় চ্যালেঞ্জার, অতপর লিডার। চাইনিজ ইলেক্ট্রনিক পণ্য এভাবেই এগিয়ে চলছে।
টুডে ব্লগকে দ্বিতীয়বার দেখে আমার কিছুটা এমনই মনে হয়েছে, প্রত্যাশাও তাই। এর এ্যাডমিনকে বেশ গতিশীল মনে হচ্ছে, সবজায়গায়তেই নতুন কিছু দেয়ার চেষ্টা চোখে পড়েছে। ম্যাগাজিনটিও এসবির আদলে করা হলেও মনে হয়েছে তাদের চেয়ে গতিশীল ও অধিক কিছু দেয়ার চেষ্টায় লিপ্ত। টিকে থাকতে হলে ও অগ্রসর হতে হলে এর সঞ্চালকদেরকে সবসময় চতুর্দিকে ছোক ছোক করে শুঁকতে হবে প্রকৃতপক্ষে মানুষের কোন প্রয়োজনটি এখনও অপূর্ণ রয়েছে, অতপর তা নিউ ফিচার বা সংশোধিত ফিচার হিসেবে সংযুক্ত করার চেষ্টা করতে হবে।
একই ধরণের বা একই মানসিকতার আরেকটি ব্লগের কি দরকার বা অযথা ভাঙ্গণের কি দরকার- এমন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন ঈসমাঈল একেবি তার কোন এক উত্তরে। বলেছেন, ভাঙ্গণের সৃষ্টিতে মুখর শক্তির সমর্থকদের বা মানুষের মতকে টুটি চেপে ধরতে আগ্রহীদের যদি একাধিক ব্লগ বা প্লাটফরম থাকতে পারে, স্বাধীন মতপ্রকাশের প্রতি শ্রদ্ধাশীলদের একাধিক প্লাটফরম থাকতে দোষ কি, বরং থাকই তো দরকার। ভেবে দেখার মত উত্তর। তেমনই এক চিন্তা নিয়ে যদি টুডে ব্লগের আগমন ঘটে থাকে, তবে টুডে ব্লগকে জানাই স্বাগতম।
এদশে যে গোষ্ঠিগুলো জনগণের প্রভু হয়ে বসেছে, চেতনে কি অবচেতনে জগনণ যাদেরকে নিজেদের ভাগ্যনিয়ন্তা হিসেবে মেনে নিয়েছে, তারা জনগণের মনের মনিকোঠায় রাজপথের কর্মসূচি দিয়ে যতটুকু না স্থান করে নিতে পেরেছে, তার চেয়ে বেশি নিয়েছে প্রচারণার হাতিয়ারকে ব্যবহার করে। মিডিয়ার সাহায্যেই মূলত সমাজ ও মানবতাবিব্ধংসী শক্তিগুলো জনগণের চালক হয়ে বসেছে, জনগণের অগোচরেই তাদের সমর্থনও হাসিল করে চলছে। মানবতার কল্যাণকামীরা এখানেই পিছিয়ে পড়েছে।
টুডে ব্লগের উত্থানকে মানবতাবাদীদের পক্ষে জনগণের অন্তর ও সমর্থন দখল করার সংগ্রামের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার নুতন আরেকটি সুযোগ হিসেবে আপাতত কাজে লাগাতে চাই।
বিষয়: বিবিধ
১৪৩২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন