বি.এম কলেজে সুযোগ সন্ধানী ছাত্রলীগের তান্ডবে বিঘিœত শিক্ষার্থীদের অধ্যায়ন

লিখেছেন লিখেছেন বলদের রাজা ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১১:৩৭:১৬ রাত

বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজের (বি.এম) অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ননী গোপাল দাসের বদলীর আদেশ প্রত্যাহারের দাবির ইস্যুকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের তান্ডবে শিক্ষার্থীদের অধ্যায়ন বিঘিœত হচ্ছে। বদলীকৃত এই অধ্যক্ষকে পুতুল হিসাবে ব্যাবহার করে কলেজে নানাবিধ অন্যায় অনিয়মের ফিরিস্তি রচনা করেছে অসাংগঠনিক পন্থায় পথ চলা ছাত্রলীগের একাংশ। যখনই পুতুল অধ্যক্ষের বদলীর আদেশ আসে টালমাটাল হয়ে পড়ে সুবিধাবাদী ছাত্রলীগের চিহ্নিতরা। যারা বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাকসুর নাম ভাঙিয়ে কলেজ থেকে লাখ লাখ টাকা পকেটে পুড়ে নিয়েছে। বদলী আদেশ বার্তা পৌঁছার পর থেকে তা প্রত্যাহারের দাবীতে সুযোগ সন্ধানীরা সাধারন শিক্ষার্থীদের জিম্মি কিংবা কৌশলে ব্যবহার করে নানা কর্মসূচী পালন করে আসছে। সরকারি আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে আর শিক্ষাথীদের চরম দূর্ভোগের মুখে ফেলে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে এখানকার রাজনৈািতক অঙ্গনে বিতর্কের ঝড় উঠছে। এটা কোন ধরনের কর্মূসূচী পালন। যা অনিয়মতান্ত্রিক!। এরকম মন্তব্য রাজনীতিকদের।

প্রসঙ্গত গত ৩১ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ননী গোপাল দাসকে খুলনার বিএল কলেজে বদলী করা হয়। ৩ ফেব্রুয়ারী রোববারের মধ্যে তাকে (ননী গোপালকে) বিএল কলেজে যোগদানের জন্যও মন্ত্রণালয় নির্দেশ দেয়।

ওদিকে, বদলী আদেশ প্রত্যাহারের দাবীতে বুধবার থেকে ছাত্রলীগের তান্ডববাজরা কলেজের প্রত্যেকটি বিভাগের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ মিছিল,সড়কে অগ্নিসংযোগ ও অনশন কর্মসূচী পালন করে আসছে। সোমবারও এরকম বিশৃঙ্খল কর্মসূচী পালন করে। প্রকাশ্য ক্যাম্পাসে এহেন ন্যাক্কারজনক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে ছাত্রলীগ ক্যাডার ফয়সাল আহমেদ মুন্না। নিজে এ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টিতে প্রকাশ্যে থাকছে। পাশাপাশি বহিরাগতসহ বিভিন্ন স্কুল কলেজগামী বখাটেদের সঙ্গে নিয়ে টায়ার জ্বালানো ও অপ্রতিকর ঘটনার জন্ম দিচ্ছে ক্যডার ফয়সাল আহমেদ মুন্না। মুন্নাকে শেল্টার দিচ্ছে অসাংগঠনিক পন্থায় গঠিত অস্থায়ী ছাত্র কর্মপরিষদের হোতারা। ছাত্রলীগের কেউ কেউ বলছেন, ড.ননী গোপালও চাইছেন এখানে থাকতে। কারন ছাত্রলীগের সুযোগ সন্ধানীদের সঙ্গে ননী গোপালের দহররম মহরম ভাল। ভাগ বটোয়ারায় যেন লুটেপুটে খাওয়ার দিকে এগিয়ে নিতে ছাত্রলীগের হেল্প লাইন হিসাবে কাজ করছেন তিনি। অর্থাৎ সুযোগ সন্ধানীদের নামকাওয়াস্তে ফটোশেসনের কর্মসূচী পালনে যদি আদেশ প্রত্যাহারের মাধ্যমে বহাল তবিয়তে থাকতে পারেন বিএম কলেজে। তাহলো তো তিনিই সফল। তাই তিনি নিরব। দেখছেন পরিস্থিতি কোন দিকে ধাবিত হচ্ছে। নিজের অনুকুল নাকি প্রতিকুলে। ৩ ফেব্রুয়ারী সরকারী বিএল কলেজে যোগদানের কথা থাকলেও তিনি নির্ধারিত তারিখে যোগদান করেননি। তবে ড.ননী গোপাল দাস টাইমওয়ার্ল্ডকে জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তর যে আদেশ দিয়েছেন সেই আদেশ পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নির্ধারিত তারিখের সাত দিনের মধ্যে যোগদান করার নিয়ম রয়েছে। তিনি নিয়মানুযায়ীভাবেই এগুচ্ছেন মন্তব্য করেন ড.ননী গোপাল দাস।

এদিকে, বিএম কলেজে থেকে ড.ননী গোপালকে প্রত্যাহার আর চাখার কলেজের অধ্যক্ষ শংকর চন্দ্র দত্তকে বিএম কলেজে যোগদান করার আদেশ ৪ ফেব্রুয়ারী সোমবার পর্যন্ত কার্যকর হয়নি। মুলত সরকারী আদেশ কার্যকর করতে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাড়িয়েছে ছাত্রলীগের সুবিধাবাদী পন্থীরা। ক্যাম্পাসে মারমুখী অবস্থায় রয়েছে। কক্ষে কক্ষে তালা ঝুঁলছে। শংকর চন্দ্র দত্ত যাতে বিএম কলেজের অধ্যক্ষ পদে আসীন না হতে পারে এহেন তান্ডবের নানা স্টাইলের কৌশল বিরাজমান। এমনকি অধ্যক্ষ শংকর চন্দ্র দত্ত আদেশ বার্তার পাওয়ার পর দায়িত্ব পালনে উপাধ্যক্ষ কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার এলোমেলো আচরনে অতিষ্ঠ হন শংকর চন্দ্র দত্ত। ড.ননী গোপাল উপাধ্যক্ষকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন। নিয়ম হলো উপাধ্যক্ষ নতুন অধ্যক্ষ শংকর চন্দ্র দত্তকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিবেন। কিন্তু তিনি দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি। আর এর ফলে সরকারের নিয়ম পালনে কর্মস্থলে যেতে মেন্টাল টরচারের শিকার হচ্ছেন অধ্যক্ষ শংকর চন্দ্র দত্ত।

তিনি টাইমস ওয়ার্ল্ডকে জানিয়েছেন, যোগদানের লক্ষে ৫ ফেব্রুয়ারী কলেজে যাবেন। সরকারি দায়িত্ব পালনে তিনি অঙ্গিকারবদ্ধ। আর সরকারের এই আদেশ ফলো করতে কলেজের শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও স্টাফদের সঠিক পথেই চলা উচিৎ বলে মন্তব্য করেন অধ্যক্ষ শংকর চন্দ্র দত্ত। এ প্রসঙ্গে বিএম কলেজ শিক্ষক স্টাফ কাউন্সিলের সাধারন সম্পাদক কায়ুম উদ্দিন বলেন, সরকারী আদেশ পালন করা প্রত্যোক সরকারী কর্মকর্তা,কর্মচারীদের একান্ত দায়িত্ব। কিন্তু হঠাৎ করে ক্যাম্পাসে ঘোলাটে পরিস্থিতির ফলে শিক্ষকরাও বিব্রতকর পরিস্থিতর মধ্যে রয়েছি। সরকারী আইনকে শৃদ্ধা দেখিয়ে ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি শান্ত হওয়া অতিব জরুরী।

বিষয়: বিবিধ

১২৩৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File