ফাঁসিতে মৃত্যুর আগে বিশ্বজিত হত্যাকারী শাকিল তার স্ত্রীর উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লিখে যান।
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ রবিউল ইসলাম ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৮:৪৫:৫২ রাত
প্রিয়তমা ,
সুপ্রিমকোর্ট থেকে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
হয়ে গেছে ,মনে হচ্ছে আমাকে এখান
থেকে শীঘ্রই ঢাকায় নিয়ে যাবে।
সুশীল -কুশীল মিডিয়া যেভাবে আমাদের
পেছনে লেগেছে তাতে হয়তো এই মাসেই
আমাকে ফাঁসি দিয়ে দিবে। আর সরকারেরও
একেবারে শেষ সময় -এখন ন্যায়বিচার
দেখানো ছাড়া উপায় নেই।
চিন্তা করোনা প্রিয়তমা ,আমার এই মৃত্যু
হবে শহীদী মৃত্যু ,কারণ একমাত্র দলীয়
আদর্শ ও নির্দেশ পালন করতে গিয়েই আজ
আমি মৃত্যুর মুখে।
আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, জামাত -শিবিরের
মোকাবেলায় যুবলীগ -ছাত্রলীগ
কে মাঠে নামতে হবে। তৎকালীন সব
পত্রিকায় এই বক্তব্য এসেছে।
আসমান জমিন স্বাক্ষী প্রিয়তমা, আমার
সাথে বিশ্বজিতের কোন ব্যাক্তিগত
শত্রুতা ছিলোনা ,তাকে আমি চিনতামও না।
শুধুমাত্র দলীয় আদর্শ বাস্তবায়ন
করতে গিয়েই আজ আমার এই মৃত্যু।
আমাদের সংগঠনের পূর্ববর্তী অনেক
ভাইদের মতোই আমিও আজ শাহাদাতের
অমিয় সুধা পান করতে যাচ্ছি।
আর আমার কপালটাই দেখো প্রিয়া - সেই
যে ,নাটোরের উপজেলা চ্যায়ারম্যান
সানাউল্লাহ মিঞাকেও ক্যামেরার
সামনে সাপের মতো সাপের
মতো পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো - কোই
কারোতো ফাঁসি হয় নি !!
কিসমত খারাপ ,প্রিয়া সেদিন আমাদের
সামনে হিন্দু বিশ্বজিৎ পড়ে গিয়েছে।
কি জানি হয়তো আল্লাহ আমাকে শহীদ
হিসেবে কবুল করতে চেয়েছিলেন বলেই সেদিন
বিশ্বজিৎ আমাদের সামনে পড়েছিলো।
সবাইকেতো আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল
করেন না।
আমাদের প্রাণপ্রিয় সংগঠনের বড় ভাই
মানিক ভাই তো ধর্ষণের
সেঞ্চুরী করে বহাল তবিয়তেই আছে --
ক্যামেরার সামনে না করায় উনার কিছুই
হলোনা।
এই সাংবাদিকরাই আমাদের প্রধান শত্রু।
তবে মনে রাখবা আমার মৃত্যুর জন্য কোন
প্রতিশোধ নেয়া যাবেনা।
প্রতিশোধ নিতে হবে আমার আদর্শ
বাস্তবায়ন এর মাধ্যমে ,
আমার প্রাণপ্রিয় সন্তানদের আমার
কে আদর্শে বড় করে তুলবা।
আমার
রেখে যাওয়া হকিস্টিক ,রামদা ,চাইনিজ
কুড়াল ,গাঁজার পুরিয়াগুলো যুগযুগ
ধরে আমার সন্তানদের জন্য
আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে যাবে।
বাবু যখন হাইস্কুলে উঠবে তখন তার
হাতে আমার হকিস্টিক টা তুলে দিবা।
কাজের ছেলেদের পিটিয়ে পিটিয়ে সে হাত
পাকাবে।
কলেজে উঠলেই তার হাতে আমার স্মৃতিময়
চাইনিজ কুড়াল টি দিয়ে দিবে - আর তার
মাথায় হাত বুলিয়ে বলবে ," প্রিয়
সন্তান ,বাবার রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজ
সম্পূর্ণ করো ,তাইলেই তোমার বাবার
শহীদী আত্মা শান্তি পাবে।"
পেয়ারি পেয়ারি পেয়ারি ,আশা করি শীঘ্রই
তোমার সাথে জান্নাতে মিলিত হবো।
আল্লাহ কর্তৃক তোমার উপর অর্পিত
দায়িত্ব শেষ হলেই আমরা জান্নাতে মিলিত
হবো।
আব্বা যতোদিন বেঁচে থাকবে তার
দেখাশোনা করবা। আমার মৃত্যুর পর কোন
বড় কুলখানি করবেনা। সেই টাকা দিয়ে আমার
সংগঠনের প্রাণপ্রিয় ভাইদের সাহায্য
করবা। তাদেরকে কিছু কাটা রাইফেল আর
হিরো কনডম কিনে দিও।
তাহলেই আমার আত্মা শান্তি পাবে।
সংগঠন এর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আর
এদিক সেদিক তেঁতুল
খেতে গিয়ে তোমাকে সময়
দিতে পারিনি ,তোমার হক আদায়
করতে পারিনি। মাফ করে দিও। সংগঠনের
খোঁজ খবর রেখো - আমার
রামদা টা রেগুলার ধার দিও।
ইতি
-- তোমার শাকিল।
কার্টেসি: Arif Uddin
https://www.facebook.com/
বিষয়: বিবিধ
২২৩২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন