তার শেষ ইচ্ছা শহীদি মৃত্যু! অন্যায় ভাবে ইসলামী আন্দোলনের একজন কর্মীকে ফাঁসি দেওয়া মানেই ভূমিকম্প ডেকে আনা। গজবের জন্য প্রস্তুত থাকুন। গণজাগারণ মঞ্চ উল্লাসের জন্য প্রস্তুত।
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ রবিউল ইসলাম ১০ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৭:৫৬:৪৮ সন্ধ্যা
তার ফাঁসি দিয়েই সরকারের ষোল আনা পাপ পূর্ন হবে। কাদের মোল্লার সাথে সরকারের জানাজা পড়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন।
মানুষের পাপের জন্যই কি ভুমিকম্প হয়?
পবিত্র কুরআন এর একাধিক আয়াতে বলা হয়েছে যে, জলে স্থলে যে বিপর্যয় সৃষ্টি হয় তা মানুষেরই কৃতকর্মের ফল। আল্লাহপাক মানুষের অবাধ্যতার অনেক কিছুই মাফ করে দেন। তারপরও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়। কুরআন নাজিল হওয়ার পূর্বেকার অবাধ্য জাতিসমূহকে আল্লাহপাক গজব দিয়ে ধ্বংস করেছেন। সে সবের অধিকাংশ গজবই ছিল ভুমিকম্প। ভুমিকম্প এমনই একটা দুর্যোগ যা নিবারন করার মতো কোন প্রযুক্তি মানুষ আবিষ্কার করতে পারেনাই। এর পূর্বাভাষ পাওয়ার মতো কোন প্রযুক্তিও মানুষ আজ পর্যন্ত আবিষ্কার করতে পারেনাই।
হাদিস শরীফেও একাধিকবার বলা হয়েছে যে, মানুষের দুষ্কর্মের জন্যই ভুমিকম্পের ন্যায় মহাদুর্যোগ ডেকে আনে। কুরআন এবং হাদিসে আদ, সামুদ, কওমে লুত এবং আইকার অধিবাসীদের ভুমিকম্পের দ্বারা ধ্বংস করার কাহিনী বিভিন্ন আঙ্গিকে বর্ণনা করা হয়েছে। আজকাল বিভিন্ন দেশে দেখা যায় ভুমিকম্পের ভয়াবহতা। আর আনেক মানুষ এর মৃত্যু হয়। ক্ষয়-ক্ষতি হয় মাল সম্পদের। বাংলাদেশেও আজকাল ভুমিকম্প হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর বিশেষ রহমত যে আমরা বাংলাদেশিরা এখনো ভাল আছি। আল্লাহ তায়ালা মানুষের গুনাহের কারণে শাস্তি দিয়ে থাকেন। ভুমিকম্প একটি বড় ধরনের আযাব।
হুজুর সাঃ বলেন, সেই সত্তার কসম যার কুদরতের মুষ্টিতে আমার প্রাণ, কোন কাঠের আচর কিংবা কোন শিরা নড়াচড়া করা অথবা পা পিছলানো বা কোথাও থেকে পাথরের চোট লাগা ইত্যাদি সবই গুনাহের কারণে হয়ে থাকে।
হজরত আবু মুসা আশয়ারী রাঃ বলেন রসুল সাঃ ইরশাদ করেছেন, কোন বান্দার কোন যখম হলে বা তার চেয়ে নিম্নস্তরের কোন মুসিবত আপাতিত হলে তা হয় স্বীয় কর্মের ফল।
নিম্নের কিছু হাদীস দ্বারা জানতে পারব কেন নিম্নোক্ত আযাব মানুষের উপর আসছে।
হজরত আলী রাঃ হতে বর্ণত রসুল সাঃ ইরশাদ করছেন, যখন আমার উম্মত যখন ১৫ টি কাজে লিপ্ত হতে শুরু করবে তখন তাদের প্রতি বালা মসীবত আপাতিতি হতে আরম্ভ করবে।
কাজগুলো হলোঃ
১.গণীমতের মাল ব্যাক্তিগত সম্পদে পরিণত হবে
২.আমানতের সম্পদ পরিনত হবে গনীমতের মালে
৩. যাকাৎ আদায় করাকে মনে করবে জরিমানা আদায়ের ন্যায়।
৪.স্বামী স্ত্রীর বাধ্য হবে।
৫. সন্তান মায়ের অবাধ্য হবে
৬-৭. বন্ধু-বান্ধবের সাথে স্বদব্যাবহার করা হবে আর পিতার সাথে করা হবে জুলুম।
৮. মসজিদে উচ্চস্বরে হট্টোগোল হবে
৯. অসাম্মানী ব্যাক্তিকে জাতির নেতা মনে করা হবে।
১০. ব্যক্তিকে সম্মান করা হবে তার অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য।
১১.প্রকাশ্যে মদপান করা হবে।
১২. পুরুষ রেশমী পোষাক পরবে
১৩. গায়িকা তৈরি করা হবে।
১৪. বাদ্যযন্ত্র তৈরি করা হবে
১৫.পুর্ববর্তী উম্মত (সাহাবা, তাবেঈন, তাবে-তাবেঈন) দের প্রতি অভিসমাপ্ত করবে পরবর্তীরা। তখন অগ্নীবর্ষী প্রবল ঝড়, ভুমিকম্প ও কদাকৃতিতে রূপ নেয়ার অপেক্ষা করবে।
এখন একটু চিন্তা করা উচিত যে আমরা এগুলোর মাঝেই লিপ্ত রয়েছি। আর যখন আমাদের উপর মুসীবত আসে তখন প্রকৃতির বা মানুষের বা অন্যান্য জিনিসের দোষ দেই। যে গাছ কাটার ফলে বা জনসংখ্যা বাড়ার ফলে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা যেসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ যার সম্মুখীন আমরা হই তার সাথে এগুলোর কোন্রূপ সম্পর্ক রাখেন নাই। আসলে আমাদের গুনাহের কারনেই এত আযাব।
হজরত ইবনে ওমর রাঃ বলেন একবার রসুল সাঃ বিশেষভাবে মনোযোগ ফিরিয়ে ইরশাদ করলেনঃ হে মুহাজির সম্প্রদায়! পাচটি (গুনাহের) কাজ এমন রহিয়াছে যখন তোমরা সেগুলোতে লিপ্ত হবে তখন সেগুলোর আযাব তোমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। ১. যে জাতি প্রকাশ্যে অশ্লীল কর্ম আরম্ভ করবে তাদের মাঝে প্লেগ ব্যাধি এবং এমন নতুন নতুন রোগ সৃষ্টি হবে যেগুলোর কথা পূর্বে কখনও শোনা যায়নি। ২. যে জাতি মাপে ওজনে কম দিবে সে সম্প্রদায় আভাব-অনটন, কষ্ট-ক্লেশ ও শাসকের অত্যাচারে নিপতিতি হবে। ৩. যারা যাকাৎ দেয়া বন্ধ করে দিবে তাদের উপর বৃষ্টি বন্ধ করে দেয়া হবে। যদি জন্তু জানোয়ার না থাকত তবে তাদের উপর একেবারেই বৃষ্টি হত না। ৪. যারা আল্লাহ ও তার রসুল সাঃ এর চুক্তি ভঙ্গ করবেতারা পরিবেষ্টিত হয়ে পড়বে শত্রুদের মাঝে। ৫. অন্যায়ের বিধান যারা চালু করবে তারা লিপ্ত হবে গৃহযুদ্ধে।
হাদীসসমূহে আছে যে, যিনা ব্যাভিচার এর আধিক্য পরমুখাপেখীতা বাড়ায়।
আজ মসুলমানরা কাফেরদের কাছে হাত পাতলেই আশ্চর্য হবার কি ? দোষ তো আমাদের। আমাদের আমল এর দরুন মসুলমান জাতির এই পরমুখাপেক্ষীতা।
অপর হাদীসে আছে , যাদের মাঝে ঘুষ ব্যাপকতা লাভ করে তাদের অন্তরে ভীতি প্রবল হয়ে উঠবে। আজ মসুলমানরা কাফেরদের ভয়ে ভীত। চুরি ডাকাতির ভয়। রাস্তায় ভয়। বিভিন্ন ভয়ে আচ্ছন্ন। সবচেয়ে তাড়াতাড়ড়ি আযাব আসে জুলুম আর মিথ্যা শপথ এর দ্বারা।
একবার ভাবা দরকার আমরা সবাই জুলুম করি। মালিক কর্মচারীকে আবার কর্মচারী মালের খেয়ানতের মাধ্যমে মালিককে। বাসায় কাজের মেয়ে। এভাবে আস্তে আস্তে সব জগায় জুলুম। আর মিথ্যা শপথ আজ নগন্য ব্যাপার। ছোট থেকে বড়, যুবক থেকে বৃদ্ধ,গরীব থেকে বড়লোক, নাগরিক আর নেতা সবাই জুলুম করছে।
আজ আমরা দোয়া করি কিন্তু দোয়া কবুল হয় না। কেন হয় না তা কেউ চিন্তা করিনা যে কেন দোয়া কবুল হয় না। অনেকেই বলে কত দোয়া করলাম সাদ্দামের জন্য কত দোয়া করলাম মসুলমানদের জন্য এর জন্য, ওর জন্য। কোন কাজ হয় না। কিন্তু হাদীসে আছে,
ঐ সত্ত্বার কসম যার হাতে আমার প্রাণ, তোমরা সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কর্ম থেকে নিষেধ করতে থাক। এছাড়া আল্লাহ তায়ালা তোমাদের উপর আযাব অবতীর্ণ করবেন। তখন তোমরা আল্লাহর নিকট দোয়া করবে কিন্তু তা কবুল হবে না।
আজ প্রতিটি ঘরে ছবি। কিন্তু ছবি থাকলে আল্লাহর রহমত ঘরে আসেনা। যখন আল্লাহর রহমত এর দ্বার আমরাই বন্ধ করে দেই তখন আর কি উপায় থাকে। আযাব তো আসবেই।আজ সবাই দেশের প্রধানদের উপর মহা ক্ষ্যাপা। শাসকগষ্ঠীর ভুল ধরতেই ব্যস্ত। সারাদিন বলবে সরকার আমাদের উপর অত্যাচার করছে। কিন্তু এটা আমাদের নিজের আমলের ফল।
হাদীসে আছে, আমার উম্মত যখন আলেমগনের প্রতি শত্রুতা পোশণ করতে আরম্ভ করবে, বাজারের অট্টালিকাগুলি শুশোভিত করতে আরম্ভ করবে, বিবাহ করবে দিরহামের উদ্দেশ্যে তখন আল্লাহ তায়াল তাদের উপর ৪টি মুসীবত নাযিল করবেন ১. সাময়িক অভাব অনটন ২.শাসকগোষ্টীর অত্যাচার ৩. বিচারকের খায়ানত ৪. শত্রুর আক্রমণ
এখন বলুন উপরের কোন কোন দোষ আমাদের মাঝে নাই? রসুল সাঃ মসুলমানদের রোগ আর তার সমাধান আগেই বলে গেছেন কিন্তু না মানার কারণে আমাদের উপর বড় বড় আযাব আসছে। কাফেরদের মত করে মসুলমাদের চললে হবে না। হুজুর সাঃ কে ওমর রাঃ বললেনঃ রোম আর পারস্যবাসীরা আল্লাহর ইবাদত করেনা তারপরও তাদের কত আরাম আয়েশ ও সুযোগ সুবিধা। অথচ আপনার এ দুরবস্থা। হুজুর সাঃ ঠেস দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, উঠে বসে গেলেন। এবং ইরশাদ করলেন,
হে ওমর ইবনে খাত্তাব। তুমি কি এখনো সংশয়ে পড়ে আছো? ঐ সমস্ত জাতির ভোগ সম্ভার তাদেরকে ইহকালেই দেয়া হয়েছে।
আমাদের আদর্শ সাহাবা। তাদের অনুসরণ করলেই সব সমস্যার সমাধান।
আমার বিষয় ছিল বিভিন্ন আযাব এর কারন। যাই হোক আরোও কিছু মুখ্য বিষয় বাদ পড়ে গেল। যে আমাদের আরো যে সকল সমস্যা আসে যেমন খরা বা বৃষ্টি বা বন্যা বা সিডর এর মত ঝড় বা মহামারী রোগ এর কারণ। আসলে আমরা যেগুলোকে কারণ বানিয়ে সমাধানের চেষ্টা করছি তার মাঝ আল্লাহ তায়াল সমাধান রাখেন নাই। কেননা রোগের কারণ আমরা চিহ্নিত করতে পারি নাই। তাই আমরাও গুনাহ থেকে থেমে যাই সব থেমে যাবে। সব আল্লাহর হাতে।
বিষয়: বিবিধ
২১১১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন