মেরাজের সফর থেকেই আমাদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান নিয়ে আসা হয়।
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ রবিউল ইসলাম ০২ জুন, ২০১৩, ১০:৫২:৩৮ সকাল
মেরাজের সফর থেকেই নামাজের শুরু
আরবি 'মেরাজ' শব্দের অর্থ ঊর্ধ্বলোকে গমন করা।
নবীজি মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে সংঘটিত মেরাজের
ঘটনাটি ছিল তাঁর একটি বিশেষ মুজিজা বা অলৌকিক বৈশিষ্ট্য। নবুয়ত পাওয়ার পাঁচ বছর পর মেরাজের ঘটনাটি ঘটেছিল। তুলনামূলক নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুযায়ী রজব মাসের ২৭ তারিখেই তা সংঘটিত হয়েছিল। মেরাজের সফরের দুটি পর্ব।
... প্রথমটি মক্কা শরিফ থেকে বায়তুল মোকাদ্দাস
পর্যন্ত। দ্বিতীয়টি বায়তুল মোকাদ্দাস থেকে বিভিন্ন
আকাশে ভ্রমণ। প্রথম পর্বকে ইসরা, দ্বিতীয়টিকে মেরাজ বলা হয়। কোরআন শরিফে ইসরা বা রাতের সফর সম্পর্কে বলা হয়েছে, 'পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি নিজের বান্দাকে রাতের বেলা ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত- যার চারদিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি। যেখানে আমি তাঁকে কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দিই। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।' (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ১)
রাতের বেলা সামান্য সময়ের মধ্যেই আল্লাহ
তায়ালা প্রিয় রাসুল (সা.)-কে জাগ্রত অবস্থায়
মক্কা থেকে বায়তুল মোকাদ্দাস এবং সাত আসমান,
জান্নাত, জাহান্নাম সব কিছু সফর করিয়েছেন।
মেরাজের সফরে গিয়ে রাসুল (সা.)
ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-কে তার প্রকৃত
আকৃতিতে দেখেছেন। এর সমর্থনে পবিত্র কোরআনের
'সুরা নাজম' এর ৫-১০ নম্বর
আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
তাফসিরে ইবনে কাছিরে লেখা হয়েছে, নবী করিম
(সা.) রাতের বেলা জাগ্রত অবস্থায় মেরাজের ভ্রমণ
করেছেন। তিনি মক্কা শরিফ থেকে বায়তুল মোকাদ্দাস
(মুসলমানদের প্রথম কেবলা) পর্যন্ত বোরাকযোগে সফর করেন। বোরাক এক প্রকার জান্নাতি বাহন, যা রাসুল (সা.)-কে বহন করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল।
প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে মেরাজের
ঘটনাটি ঘটেছিল প্রায় দেড় হাজার বছর আগে।
মুসলমান হিসেবে এই ঘটনা পুরোপুরি বিনা বাক্য
ব্যয়ে বিশ্বাস করা ইমানের অপরিহার্য অংশ।
এতে কেউ কোনো ধরনের সন্দেহবাদী হলে অথবা প্রত্যাখ্যান করলে সে ব্যক্তির ইমান চলে যায়। দেড় হাজার বছরে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিস্ময়কর সাফল্য ও আবিষ্কার আমাদের সামনে আছে। আধুনিক বিজ্ঞানও এখন মেরাজের ঘটনাকে অলৌকিক বললেও
আগে যেখানে একবাক্যে প্রত্যাখ্যান করত, ধর্মীয়
কুসংস্কার বা অলীক ও অবাস্তব বোধ-বিশ্বাস
বলে উড়িয়ে দেওয়া হতো- এখন আর তা করা হচ্ছে না।কারণ অনেক আগেই নিল আর্মস্ট্রং চাঁদের
দেশে গিয়ে এসেছেন। আরো অনেক কিছু জয়
করতে সাধারণ মানুষরা নিজেদের অসাধারণ কিছু
যন্ত্রের সহযোগিতায় বিস্ময়কর নানা ঘটনা ঘটাচ্ছেন। তাহলে যে আল্লাহ নিজে বিশ্বভুবন সৃষ্টি করেছেন, সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী-রাসুল হিসেবে হজরত মুহাম্মদ (সা,)- কে মনোনীত করেছেন, তিনি আসমান, জান্নাত, জাহান্নাম, ফেরেশতা এমনকি নিজের আরশ নবীজি মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে দেখাবেন- এতে অবিশ্বাসের কী আছে? যৌক্তিক বিচারেও তো এটি শতভাগ সত্য মনে হয়।
মেরাজের সফর থেকেই আমাদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত
নামাজের বিধান নিয়ে আসা হয়। এই নামাজ আদায়
করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ। নামাজ
সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, 'মুমিনের জন্য নামাজই
মেরাজ বলে গণ্য'। অর্থাৎ নামাজের মাধ্যমে মূলত
বান্দা আল্লাহর সঙ্গে সংলাপ করে থাকে।
ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
বিষয়: বিবিধ
৯৮৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন