"আলোচিত আলোচনার আলোকে আলোকপাত"
লিখেছেন লিখেছেন সাদা মন ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৭:০৭:১৮ সন্ধ্যা
যুদ্ধাপরাধের বিচারে জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ের পর দলটি আবার হরতাল ডাকল কোন উদ্দেশ্যে? এই দলটি একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে গণহত্যা, নারী ধর্ষণ, নারী নির্যাতন করেছে, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে। আজ আবার হরতাল ডেকে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। দলটি এককভাবে এক সপ্তাহে তিন দিন হরতাল করেছে। এর আগে তারা লাগাতার হরতালের হুমকিও দিয়েছিল।
যুদ্ধাপরাধের যথাযথ বিচার ও প্রকৃত অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তিই দেশবাসীর কাম্য। কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার বিচারে সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়ায় দেশের তরুণসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ ক্ষুব্ধ, ব্যথিত ও হতাশ। রাজপথে সমাবেশ ও মিছিল করে তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী দেশবাসীর মনোভাব বুঝতে অক্ষম। হরতালের নামে তারা দেশে অশান্তি ও আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো তাদের সহিংসতা। বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা, পুলিশের ওপর হামলা, এমনকি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে জামায়াতে ইসলামী দেশকে অরাজকতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ রয়েছে। জামায়াতে ইসলামী আপিল করবে বলে জানিয়েছে। আইনের পথ খোলা থাকা সত্ত্বেও হরতাল কেন? এতে বোঝা যায়, দেশের শান্তিশৃঙ্খলা ও মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে দলটির কোনো মাথাব্যথা নেই। এত দিন তাদের অভিযোগ ছিল, সরকার মিটিং-মিছিল করার অনুমতি দেয় না। অথচ গত সোমবার সকালে অফিস চলার সময়েও মতিঝিলের মতো ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকায় জামায়াত সমাবেশ ও মিছিল করার অনুমতি পেয়েছে। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে যখন তাদের গণতান্ত্রিক রীতিসম্মত পথে অগ্রসর হওয়া উচিত ছিল, তখন তারা হরতাল ডেকে প্রমাণ করেছে, গণতন্ত্র নয়, নৈরাজ্য সৃষ্টিই তাদের মূল রাজনৈতিক কর্মকৌশল।
সামনে নির্বাচন। এখন দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার। যুদ্ধাপরাধের বিচার চলবে আইনের পথে। একাত্তরে যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে, বিচারে তাদের উপযুক্ত শাস্তি হতেই হবে। জামায়াতে ইসলামী এই বিচার-প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে সহিংসতার আশ্রয় নিচ্ছে। এটা প্রকৃতপক্ষে ট্রাইব্যুনাল তথা আইন অস্বীকারের মতো গুরুতর অপরাধ। জামায়াতকে এই পথ ছাড়তে হবে। অন্যথায় এদের বিরুদ্ধে সরকারের আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
যুদ্ধাপরাধের বিচারে প্রকৃত অপরাধীর প্রত্যাশিত সর্বোচ্চ সাজা না হওয়ায় দেশবাসী ফুঁসে উঠেছে। জামায়াতে ইসলামী এই বাস্তবতা অস্বীকার করলে পরিণতি হবে ভয়াবহ।
জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, নাগরিক অধিকার ও জনমতকে উপেক্ষা করার যে ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। জামায়াতের উগ্রতার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তাদের সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা বন্ধের ব্যবস্থা না করলে গণতন্ত্র বিপন্ন হতে পারে। :(fight) :(fight) :(fight) :(fight) :(fight) :(fight) :(fight)
বিষয়: বিবিধ
১১৩৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন