টুডে ব্লগ নিয়ে পুরো মিডিয়া জগত তোলপাড়!!
লিখেছেন লিখেছেন সুশীল ০১ অক্টোবর, ২০১৩, ০১:৩০:০৩ দুপুর
'রায় আগেই ব্লগে ফাঁস'
পরিবর্তন প্রতিবেদক •
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় পড়া শুরু আগেই রায় ফাঁসের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন গুরুতর অভিযোগ করেছেন সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী।
মঙ্গলবার সকালে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছোট ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী এই অভিযোগ করেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি মন্তব্য করেন, "রায় তিনি আগেই জেনে ট্রাইব্যুনালে এসেছেন।"
তিনি বলেন, "তামাশা’ দেখতে আইছি।"
রায় আগে কীভাবে পড়লেন জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাকার এই পুত্র বলেন, “জাস্টিস কনসার্ন ডট ওআরজি নামের একটা ওয়েবসাইটে।”
মিডিয়া ওয়াচ নামে এক ব্লগার ৩০ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা ৫৫ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডে টুডেব্লগে রায়ের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেন। সেখানে অভিযোগ করা হয়, "বিচার শেষের আগেই রায় লেখা শুরু"।
এই ব্লগটিকেই উদ্ধৃত করে হুম্মাম চৌধুরী এমন মন্তব্য করেন।
'রায় আগেই ব্লগে ফাঁস'
ব্লগে উল্লেখ করা হয়েছে, "বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার রায় লেখা হয়েছে আইন মন্ত্রনালয়ে। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-১ থেকে যে রায় দেয়ার কথা রয়েছে সেই রায়ের কপি পাওয়া গেছে ভারপ্রাপ্ত আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মোহাম্মদ জহিরুল হকের অফিসের একটি কম্পিউটারে। এতে আরো যে বিস্ময়কর তথ্য পাওয়া গেছে তা হল- বিচার শেষ হবার আগেই রায় লেখা শুরু হয়েছে। ফাইলের তথ্যে দেখা যায় ২৩ মে রায় লেখা শুরু হয়েছে, যখন সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন স্বাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ চলছিল। এ তথ্যগুলো পাওয়া যায় বেলজিয়াম ভিত্তিক ওয়েবসাইট http://www.tribunalleaks.be । যেখানে রায়ের খসড়া এবং ফাইনাল কপি আপলোড করা হয়।"
সেই ব্লগে আরো বলা হয়েছে, "প্রকাশিত রায়ে দেখা যায়, ২৩টি অভিযোগের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ছয়টি অভিযোগের পক্ষে কোন সাক্ষী হাজির করেনি। সে ছয়টি অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ প্রমানে ব্যর্থ হয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৭টি অভিযোগের মধ্যে যে ৯টি অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। সেগুলো হল:
২নং অভিযোগ : মধ্য গহিরায় গণহত্যা।
৩নং অভিযোগ: নূতন চন্দ্র হিংস হত্যা।
৪নং অভিযোগ: জগৎমলল পাড়া গণহত্যা।
৫ নং অভিযোগ: সুলতানপুরে নেপাল চন্দ্র ও অপর তিনজনকে হত্যা।
৬ নং অভিযোগ: ৬৯ পাড়া গণহত্যা।
৭ নং অভিযোগ: সতিশ চন্দ্র পালিত হত্যা।
৮ নং অভিযোগ: মোজাফফর ও তার ছেলে শেখ আলমগীর হত্যা।
১৭ নং অভিযোগ: নিজাম উদ্দিন আহম্মদকে অপহরণ ও নির্যাতন।
১৮ নং অভিযোগ : সালেহউদ্দিন আহমদকে অপহরণ ও নির্যাতন।
১৭টি অভিযোগের মধ্যে যে ৮টি অভিযোগ থেকে সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে খালাস দেয়া হয়েছে সেগুলো হলোঃ
১ নং অভিযোগ : গুডস হিলে সাতজনকে অপহরণ করে ও নির্যাতন করে।
১০ নং অভিযোগ: মানিক ধরের বাড়ি লুট।
১১ নং অভিযোগ: বোয়াল খালী গণহত্যা।
১২ নং অভিযোগ: বিজয় কৃঞ্চ ও দুইজনকে হত্যা।
১৪ নং অভিযোগ: হানিফ হত্যা।
১৯ নং অভিযোগ: মাহবুব আলম হত্যা।
২০ নং অভিযোগ: এখলাস হত্যা।
২৩ নং অভিযোগ: সলিমুল্লাহর উপর নির্যাতন।
যে ৬টি অভিযোগের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হাজির করেননি সেগুলো হলোঃ ৯, ১৩, ১৫, ১৬, ২১ এবং ২২। রায়- এ লেখা হয়েছে এ ৬টি অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে।"
ব্লগটিতে দাবি করা হয়, "আইনমন্ত্রণালয়ে একটি কম্পিউটারের ডি-ড্রাইভে এই রায়ের কপি পাওয়া যায়।"
ব্লগার ব্লগে আরো লিখেন:
"যেখানে পাওয়া গেল ফাইলটিঃ
আইন মন্ত্রণালয়ের ষষ্ঠ তলার একটি কম্পিউটারের ডি-ড্রাইভে 'Local Disk (DHappy)' এই রায়ের কপি পাওয়া যায়। কম্পিউটারের প্রত্যেকটি ফাইল বা ডকুমেন্টের উৎস নির্ণয়ক তথ্য ঐ ফাইল/ডকুমেন্টে সংরক্ষিত থাকে। এই তথ্য ঐ ফাইল বা ডকুমেন্টের প্রপারেটিস অপশনে গেলে পাওয়া যায়। এই রায়ের কপিটি যে ফাইল পাওয়া গেছে তার প্রপারটিসে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
“ডি ড্রাইভ” এর “আলম” নামক ফোল্ডারের সাব ফোল্ডার “ডিফারেন্ট কোর্টস এন্ড পোস্ট ক্রিয়েশন” এর মধ্যে আরেকটি সাব ফোল্ডার “চীফ প্রসিকিউটর- ওয়ার ট্রাইবুনালস” এর মধ্যে রাখা রায়ের খসড়া কপিটির নাম ছিল “সাকা ফাইনাল- ১”। ইংরেজিতে উক্ত ফাইল পাথটি হলো-
D:\Alam\DIFFERENT COURTS n POST CREATION\War Crimes Tribunal\Chief Prosecutor – War Tribunal\saka final – 1.doc.
`ICT BD Case No. 02 of 2011 (Delivery of Judgment) (Final)’
আলম নামের যে ব্যক্তির ফোল্ডারে ফাইলটি পাওয়া গেছে সেই আলম হলেন আইন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবু সালেহ শেখ মোঃ জহিরম্নল হক এর কম্পিউটার অপারেটর।"
ব্লগে আরো দাবি করা হয়, "বিচার শেষের আগেই রায় লেখা শুরু। আইন মন্ত্রনলায়ের যে ফাইলটিতে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়ের কপি পাওয়া গেছে সেই ফাইলটির প্রপার্টিজ অপশনে দেখা যায় ফাইলটি তৈরি করা হয়েছে ২০১৩ সালের ২৩ মে ১২টা ১ মিনিটের সময়। ফাইলের সাইজ ১৬৭ কেবি। পৃষ্ঠা ১৬৪।
এডিট করা হয়েছে ২৫৮৭ মিনিট পর্যন্ত।
ফাইল অনুযায়ী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় লেখা শুরু হয় ২৩ মে। কিন্তু ওই সময় সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরম্নদ্ধে ট্রাইবুনালে সাক্ষ্য গ্রহণ চলছিল। গত ১৪ই অগাস্ট ’১৩ইং তারিখে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলার সমস্ত কার্যক্রম শেষ হয় এবং রায়ের জন্য তারিখ অপেক্ষমান ঘোষনা করা হয়। সে অনুযায়ী দেখা যায়, বিচার শেষ হবার তিন (০৩) মাস আগেই রায় লেখা শুরু হয় আইন মন্ত্রনালয় থেকে।"
ব্লগটিতে আরো বলা হয়, "চৌধুরীর প্রতি ক্ষোভ। রায়ের এক স্থানে সালাহউদ্দিন চৌধুরীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখা হয়েছে যে, বিচারপতিগণ আদালত কক্ষ ত্যাগ করার সময় তিনি উঠে দাঁড়াতেন না। এছাড়া সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী মাঝে মধ্যে ট্রাইবুনালে বিচারপতিদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার সাহেব বলে সম্বোধন করতেন। এ বিষয়টিও রায়ে ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে।"
Click this link
বিষয়: বিবিধ
১৮৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন