হিজাব ------ কানাডা থেকে বাংলাদেশ

লিখেছেন লিখেছেন তৃতীয় নয়ন ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১১:৩৬:৪৬ রাত

কানাডা একটি খ্রীস্টান অধ্যুষিত দেশ। ডানপন্থি কনজারভেটিভ পার্টির শাসন চলছে। সরকার চেয়েছিল ভোটদানের সময়, শপত অনুষ্ঠানের সময় এবং কলেজ ভার্সিটিতে নেকাব পরা নিষিদ্ধ করতে কিন্তু কানাডার সর্বোচ্চ আদালতের এক রুল সরকারকে বেকায়দায় ফেলে দিয়ে ইসলামী পোষাক হিজাবকে বরং উৎসাহিত করল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, মুসলমান নারীর নিজ ধর্মের বিধিবিধান পালনের মৌলিক নাগরিক অধিকার রয়েছে, যা কানাডার সংবিধানে বিধিবদ্ধ আছে। এ রায়ের ফলে কানাডার রক্ষণশীল সরকার সরকারি অনুষ্ঠানগুলোতে পাইকারিভাবে মুসলমান নারীর মুখ থেকে বাধ্যতামূলক নেকাব অপসারণের যে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে, তা থমকে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

মুসলমানদের সংগঠন কানাডিয়ান কাউন্সিল অন অ্যামেরিকান ইসলামিক রিলেশন্স এই রায়কে একজন পর্দানশিন মহিলার তার ধর্মীয় রীতি পালন করার ‘স্বতঃসিদ্ধ অধিকার’কে (প্রিজাম্পটিভ রাইট) স্বীকার করে নেয়া বলে অভিহিত করেছে। কাউন্সিল আরো বলেছে, ‘সে (মুসলিম মহিলা) যদি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে যে এই রীতি (মুখে পর্দা রাখা) পালন করা তার ধর্মীয় কর্তব্য, তাহলে সে এটাকে সংবিধান-প্রদত্ত তার অধিকার বলে দাবি করতে পারে।’রুলিংটা এসেছে একটি মামলায় যেখানে তিরিশোর্ধ্ব বয়সের এক মুসলিম মহিলা যিনি ইসলামের বিধান অনুযায়ী সারা শরীর আবৃত করা হিজাব পরেন এবং শুধু চোখ দেখা যায় এমনভাবে মুখ নেকাব দিয়ে আবৃত রাখেন। তিনি কোর্টে মামলা করেন যে বাল্যাবস্থায় তিনি নিকট আত্মীয় দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হন। কোর্টে তার জবানবন্দী দিতে ডাকা হলে তিনি মুখ থেকে নেকাব সরিয়ে জবানবন্দী দিতে অস্বীকার করেন এই বলে যে, তার ধর্মের বিধানানুযায়ী তার পরিবারের ‘সরাসরি’ সদস্য নন এমন পুরুষের উপস্থিতিতে তার মুখ এবং শরীর অবশ্যই আবৃত রাখতে হবে।

২০০৭ সালে তিনি অভিযোগটি পুলিশের কাছে লিপিবদ্ধ করেন, যার ফলে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। মামলায় মহিলার পুরো নাম উল্লেখ না করে সংক্ষেপে এন এস লেখা হয়। অভিযোগকারিণীর পরে উকিল ডেভিড বাট মুসলিম মহিলা এন এসকে আইনের একজন পাইওনিয়ার (পথ প্রদর্শক) বলে অভিহিত করে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের এই রুলিংয়ে তার মক্কেল ‘রোমাঞ্চিত’ হয়েছেন। আর তিনি মনে করেন যে এখন থেকে চলাফেরা করাকালে তার মুখ নেকাবে আবৃত রাখার অধিকার জোরদার হলো।

অথচ বাংলাদেশের হিজাব পরিহিত অবস্থায় কোন মামলা ছাড়া ২০ জন নারীকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হলো। রিমান্ডে তাদের বোরকা খুলতে বাধ্য করা হলো এমনকি আদালতেও তাদেরকে বোরকা ছাড়াই হাজির করা হলো। একজন মুসলিম হিসাবে বিষয়টি সত্যিই কি বেদনাদায়ক নয়?

বিষয়: বিবিধ

৯৪৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File