জেনে নিন ? হেফাজতে ইসলামের ৬ এপ্রিলের লংমার্চের প্রধান মন্ত্রির বক্তব্য, গোয়েন্দা রিপোর্ট, সরকারের তিনটি শর্ত, না মানলে সরকারের পদক্ষেপ।
লিখেছেন লিখেছেন মুক্তপাতা ০২ এপ্রিল, ২০১৩, ০১:২৩:০৭ দুপুর
৬এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের লংমার্চের র্ধমপ্রান মুসলমানের সাড়া পাওয়ায় সরকারে মরিয়া হয়ে উঠেছে এই লংমার্চ প্রতিহত করার জন্য। হেফাজতে ইসলামের ১৩টি দাবি বাস্তবায়নের জন্য এই লংমার্চ। অন্য দিকে সরকার ও ৩টি শর্ত দিয়েছে হেফাজতে ইসলামকে। এই তিন শর্ত না মানলে কঠোর অবস্থান ও না অপকৌশলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই মধ্যে তিন জন নাস্তিক ব্লগার গ্রেফতার করা হয়েছে জানা গেছে, অন্য দিকে নাস্তিক আসিফকে গানম্যান দিয়ে পাহাড়া দিচ্ছে। তাই এই তিনজনকে গ্রেফতার লোকদেখানো বলে মনে হচ্ছে। নি¤েœ বর্তমান সরকারের ৬ এপ্রিলের সার্বিক বিষয় তুলে ধরা হলো অবশ্যই সরকারের অবস্থান সম্পর্কে সঠিক ধারনা পেয়ে যাবেন।
রোববার সন্ধ্যেয় তার দল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেওয়ার প্রশ্নে কোনও দল বা বিশেষ গোষ্ঠীর কর্মসূচি দেওয়ার দরকার নেই।
সোমবার সন্ধ্যায়-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অথবা ইসলামসহ কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অবমাননা বা কটূক্তি বরদাশত করবে না। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গতকাল সন্ধ্যায় তার সরকারি বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি একথা বলেন।
সরকারের শর্তঃ
সরকারের তিন দফা শর্ত মানলে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ লংমার্চ ও মহাসমাবেশ করতে পারবে। শর্তসমূহের মধ্যে রয়েছে বিরোধীদলীয় জোটের বৃত্ত ছেড়ে তারিখ পরিবর্তন করে কর্মসূচি ঘোষণা করতে হবে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করার নিশ্চয়তা দিতে হবে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া বগারদের শাস্তির দাবির পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি করতে হবে। কিন্তু সরকারের দেয়া শর্ত না মানলে সহিংসতার আশংকায় সরকার ৬ এপ্রিল আহূত লংমার্চ কর্মসূচি পালন করতে দেবে না। ঢাকায় আসার জন্য দেশের যে প্রান্তে জমায়েত করা হবে, সেখানেই বাধা দেয়া হবে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে। সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ৬ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও দলীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে অনুষ্ঠিত ৩ ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠকে প্রাথমিকভাবে এ রকম সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আজ আইন মন্ত্রণালয়ে আরও বড় পরিসরে বৈঠক করে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
গোয়েন্দা রিপোর্টঃ
হেফাজতে ইসলামের ৬ এপ্রিলের লংমার্চ ও মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে গোয়েন্দা সংস্থার প থেকে বেশ কয়েকটি রিপোর্ট সরকারের কাছে দেয়া হয়েছে। বৈঠকে প্রথমে এসব রিপোর্ট পর্যালোচনা করাসহ চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে পরিবেশ ও বনমন্ত্রীর আলোচনার ফলাফল তুলে ধরা হয়। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে এ লংমার্চ ও মহাসমাবেশকে ঘিরে বেশকিছু উদ্বেগজনক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, এটি ১৮ দলীয় বিরোধী জোটের একটি বড় ধরনের হিট টার্গেট। মাদ্রাসায় পড়-য়া এবং প্রচণ্ড ধর্মীয় আবেগে লালিত বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের কর্মী ও সমর্থক পর্যায়ের সারাদেশের কয়েক লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষকে ঢাকায় জড়ো করতে পেছন থেকে সব কলকাঠি নাড়ছে জামায়াত ও শিবির। ইতিমধ্যে তারা মোটা অংকের টাকা বিনিয়োগ করে হেফাজতে ইসলামকে সরকারবিরোধী জোটের পে আনতে সম হয়েছে। এদের মধ্যে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক ছাত্ররা বেশি সংগঠিত। মূলত ইসলাম ধর্মের অনুভূতিতে আঘাত দেয়া বগারদের শাস্তির দাবিতে কয়েকটি ইসলামী সংগঠনের সমন্বয়ে হেফাজতে ইসলাম নামের নতুন সংগঠন গড়ে উঠলেও এখন পেছন থেকে সব শক্তি ও আয়োজনের খোরাক জোগাচ্ছে জামায়াত ও শিবির। তাই হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে লংমার্চ করে ঢাকায় মহাসমাবেশ করতে চাইলেও এদের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা জামায়াত শিবিরের কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে নাশকতা ঘটাবে। এবারের নাশকতা নিকট অতীতের সব ঘটনাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। নানা অঘটন ঘটিয়ে তারা কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদেরও সরকার ও পুলিশের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেবে।
সরকারের সর্বশেষ কঠোর সিদ্ধান্তঃ
আলোচনা শেষে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার সঙ্গে যেসব বগার জড়িত সরকার অতি দ্রুত তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির মুখোমুখি করবে। প্রয়োজনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে এ সংক্রান্ত আইন সংশোধন করা হবে। হেফাজতে ইসলামের ঘোষিত ১৩ দফা দাবির মধ্যে এটিই অন্যতম দাবি। সরকারের তরফ থেকে এ দাবি পূরণের বিষয়টি মঙ্গলবার থেকে জোরেশোরে প্রচার করা হবে। এ জন্য সরকারিভাবে প্রেসনোট জারিসহ গণমাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়টি নিয়ে ৬ এপ্রিলের আগেই দেশের শীর্ষ আলেম-ওলামাদের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করা হবে। দেশের প্রতিটি মসজিদের ইমামদের কাছে সরকারের এ বার্তা পৌঁছানো হবে। কিন্তু এরপরও যদি হেফাজতে ইসলাম লংমার্চসহকারে ঢাকায় মহাসমাবেশ করতে চায় তা তিনটি শর্ত পূরণ সাপেে দেয়া হবে। এর মধ্যে প্রথমটি হল সমাবেশের তারিখ পরিবর্তন করতে হবে। বগারদের শাস্তি দাবি করার পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীর অভিযোগে অভিযুক্তদের বিচারের দাবি জানাতে হবে। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবিও করতে হবে। এ বিষয়ে একমত পোষণ করলে এবং সরকারের নিরাপত্তার ছকে লংমার্চ ও সমাবেশ করতে রাজি হলে শেষ পর্যন্ত ৬ এপ্রিলের কর্মসূচি বহাল রাখা বিবেচনায় নিতে পারে।
কিন্তু সরকারের এসব শর্তে রাজি না হলে হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত কর্মসূচি বহাল রেখে ৬ এপ্রিল লংমার্চসহ ঢাকায় মহাসমাবেশ করতে চাইলে সরকার হার্ডলাইনে যাবে। এেেত্র সরকার জেলা পর্যায় থেকে ঢাকায় আসার সব প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দেবে। প্রতিটি জেলা বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, ট্রেন স্টেশনসহ প্রবেশদ্বারগুলো সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে। মাঠ পর্যায়ে এটিকে রাজনৈতিকভাবেও প্রতিরোধ করার নানামুখী উদ্যোগ নেয়া হবে।
এখানে উল্লেখ্য হেফাজতে ইসলামের শর্ত গুলো পরিস্কার ও সচ্ছ। এখানে সরকার লোক দেখানো কয়েকটি দাবি মানার কথা বলেলও বাস্তবায়ন হবে না। কারণ এই সরকার কথা দিলে পরক্ষনে ভুলে যায়।
বিষয়: বিবিধ
২১৬০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন