১৫ জানুয়ারী নির্বাচন, পরাজয় হলে অস্বীকার করে বিল পাশের জন্য সংসদ প্রস্তুত থাকবে
লিখেছেন লিখেছেন মুক্তপাতা ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০২:৫৯:১৯ দুপুর
প্রধানমন্ত্রীর কথা কতটা বিশ্বাস করা যায়। তিনি তো কখন কি বলেন তা মনে থাকে না। তিনি সবসময় তার ভাইয়ের পথ অনুশীলন করেন। আমরা জানি এরশাদ সাহেবের সাথে প্রধানমন্ত্রীর ভাই বোনের সম্পর্ক তাই ভাই যেমন আবোল তাবল বকেন তিনও মাঝে মাঝে আবল তাবোল বলেন। এই না হলে যোগ্য ভাইয়ের যোগ্য বোন। মজার ব্যাপার হচ্ছে তারা ওয়াদা করেন আবার তারাই ওয়াদা ভাঙ্গন। নিজের কথা নিজেই ভুলেন যান নাকি জনগনকে গরু ছাগল মনে করেন বুঝিনা। গতকাল মন্ত্রী সভায় প্রধান মন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত ঘোষনা প্রকাশের কয়েকটা প্রলোভন ও অসঙ্গতী তুলে ধরার চেষ্টা করালাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন-
সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের তিন মাসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই অন্তর্বর্তী সময়ে জাতীয় সংসদ বহাল থাকলেও অধিবেশন বসবে না। মন্ত্রিসভা থাকবে, তবে কোনো নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেবে না।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হবে না। ওইদিন তিনি আরো জানিয়েছিলেন, তিনি অনুরোধ করলে রাষ্ট্রপতি সংসদ ডিজলভ করে যেভাবে নির্দেশ দেবেন সেই অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করবে। এর আগে-পরে সংসদে দেয়া ভাষণসহ একাধিক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্টভাবে ২৫ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে সংসদ ভেঙে দেয়ার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু গতকাল সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়ে নিজের অবস্থান পাল্টালেন।
তার এই কথায় ছলচাতুরী স্পষ্ট। প্রথমত, তিনি বলেন ২৪ জানুয়ারীর মধ্যে নির্বাচন আবার তার আইনমন্ত্রী বলেন এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন। অন্য দিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কালো বিড়াল বল্লেন সত্যি কথা প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার উপর নির্ভর করবে নির্বাচন।
কারো কথার সাথে কারো মিল নেই । অতএব সংসদ ভাঙ্গা, নির্বাচন কবে হবে, বা হবে কিনা সবই নির্ভর করছে প্রেধানমন্ত্রীর ইচ্ছার উপর।
মন্ত্রীসভা ও সংসদ অধিবেশন চালু রেখে ২৪শে জানুয়ারির কয়েক দিন আগে যদি নির্বাচন দেয়া হয় সেই নির্বাচনে পরাজয় হয় তাহলে (ভিশন-২০২১) এর লক্ষে নির্বাচনের ফলাফলের পরদিন প্রেধানমন্ত্রী সংসদ ডেকে এই নির্বাচন অস্বিকার করে (পিতার মত) কয়েক মিনিটে এই নির্বাচন অবৈধ্য বা ফলাফল অবৈধ্য বলে কোন বিল পাশ করবে না। এর কোন নিশ্চয়তা তিনি দেননি। তিনি যে এটা স্থুল কারচুপি বলবেন না এর কোন নিশ্চয়তা নেই।
দ্বিতীয়ত প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, ‘কাউকে না কাউকে এটা শুরু করতেই হবে। সেটা আমরাই শুরু করতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী সচিবদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘জনগণ যাকে ভোট দেবে তারাই ক্ষমতায় আসবে। জনগণ যদি আমাদের ভোট না দেয়, তাহলে ক্ষমতায় আসব না। তবে সচিবেরা থাকবেন।
উপরের বাক্যে দুটির মত একটু জোর দিয়ে বলেন-
এটা আমরাই শুরু করেছি তাই আমরাই জিতেছি।
জনগন যাকে ভোট দেবে না তারাই ক্ষমতায় আসবে। জনগন যদি আমাদের ভোট না দেয় তাহলে আমরাই ক্ষমতায় আসবো। তখন কি করবেন কিছুই করার থাকবে না। কারন তিনি তো ক্ষমতায় বসেই আছেন। সংসদ, মন্ত্রীসভা সবই আছে।
৫৮ সচিবকে প্রলোভন ৫৮জনই খুশি
স্থায়ী পে-কমিশন চান সচিবেরা: সভায় সচিবদের পক্ষ থেকে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির চিত্র তুলে ধরে বেতন বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্থায়ী বেতন কমিশন দ্রুত গঠন করার অনুরোধ জানানো হয়। কমিশনের সুপারিশের আগে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন বলে একাধিক সচিব জানান।
এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, প্রয়োজন আছে বলেই পদ না থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে।
বাস্তবতা:
ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ: বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁরা যদি আগামী নির্বাচনে আবার জয়ী হতে পারেন, তাহলে সব স্তরে ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে। প্রশাসনিক ক্ষমতা যাবে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যন্ত। এ জন্য সচিবদের মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এই কথায় স্পষ্ট যে এতদিন তারা ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছেন এবং আগামী নির্বাচনে জয়ী হলে বিকেন্দ্রীকরণ করবেন। অতএব এই মেয়াদ পযর্ন্ত কোন ভাবেই ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করবেন না। তার অর্থ দাড়ায় নির্বাচনে ক্ষমতার অপব্যবহারের ইচ্ছা আছে।
বিষয়: রাজনীতি
১৬৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন