জামায়াত নেতা কাদের মোলস্নার যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দিয়েছে।

লিখেছেন লিখেছেন মুক্তপাতা ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১২:১৯:৪৬ দুপুর



জামায়াত নেতা কাদের মোলস্নার যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আজ মঙ্গলবার মানবতাবিরোধী অপরাধে ট্রাইবুনাল-২ মামলার রায় ঘোষণা করেন তার বিরুদ্ধে ৬টি অভিযোগের মধ্যে ৫টি প্রমাণিত হয়েছে। একটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অপরাধের মধ্যে দু'টিতে তাকে যাবজ্জীবন কারদণ্ড ও তিনটি অপরাধে ১৫ বছরের সাজা দেয়া হয় বলে মামলার রায়ে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি গাড়িতে করে আব্দুল কাদের মোল্লাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। সকাল পৌনে ১১টায় ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে রায় পড়া শুরু হয়। শুরুতেই বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, “এটি ১৩২ পৃষ্ঠার রায়। এতে ৪২৯টি অনুচ্ছেদ আছে। আমরা সংক্ষিপ্ত রায় পড়ব।” এর আগে আদালত বসার সঙ্গে সঙ্গেই এজলাসে দাঁড়িয়ে কাদের মোল্লা বলেন, ‘আমি কিছু বলতে চাই।’ কিন্তু আদালত তা গ্রাহ্য না করে রায় পড়তে শুরু করেন।

আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীসহ বিপুলসংখ্যক সাংবাদিকের উপস্থিতিতে তিনভাগে বিভক্ত রায়ের প্রথম অংশ পড়ছেন ট্রাইব্যুনাল-২- এর বিচারক প্যানেলের সদস্য শাহীনুর ইসলাম। দ্বিতীয় অংশ পড়েন অপর সদস্য বিচারপতি মজিবুর রহমান মিঞা । তৃতীয় ও চূড়ান্ত রায়ের অংশ পড়েন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

এদিকে, রায় ঘোষণার পর প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী তার প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, তারা যে প্রত্যাশা করেছিলেন রায়ে তা প্রতিফলিত হয়নি। তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবেন কিনা তা পরে জানানো হবে বলে তিনি জানান। অন্যদিকে আসামীপক্ষের জুনিয়র আইনজীবীরা এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। তাই অবশ্যই আপিল করা হবে। তবে এ ব্যাপারে ডিফেন্স পক্ষ পরে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে তারা সাংবাদিকদের জানান।

ডিফেন্স পক্ষের সিনিয়র আইনজীবীরা অনুপস্থিত

আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার সময় তার পক্ষের সিনিয়র আইনজীবীরা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হননি। ডিফেন্স টিমের কয়েকজন জুনিয়র আইনজীবী সেখানে উপস্থিত হয়েছেন

হরতালের কারণে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, তাজুল ইসলামসহ সিনিয়র আইনজীবীদের কেউই আদালতে আসছেন না বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।

৩ জুলাই তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের প্রথম সাক্ষী মোজাফ্ফর আহমেদ খানের জবানবন্দীর মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এরপর শহিদুল হক মামাসহ ১০ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর মধ্যে একজন নারী সাক্ষীর ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। প্রসিকিউশনে লিস্টের ৫৬ জন সাক্ষীর মধ্যে এ মামলার দুই তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১২ জন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

গত ১৫ নভেম্বর আবদুল কাদের মোল্লার পক্ষে তার নিজের সাক্ষ্য দেয়ার মধ্য দিয়ে ছয়জন ডিফেন্স সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

গত ১৭ জানুয়ারি কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মামলার শেষ ধাপে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন (আর্গুমেন্ট) শেষ হওয়ার পর ট্রাইব্যুনাল রায়ের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা না করে সিএভি (কোর্ট অ্যাডজর্ন্ড ফর ভারডিট বা রায়ের জন্য মুলতবি) করেন। গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে আজ এ রায় ঘোষণার জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

বিষয়: বিবিধ

৯৭৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File